ঢাকা, মঙ্গলবার, ১৪ মাঘ ১৪৩১, ২৮ জানুয়ারি ২০২৫, ২৭ রজব ১৪৪৬

জাতীয়

করোনা: মাস্ক-স্যানিটাইজার নিয়ে জনগণের পাশে ছাত্র সংগঠনগুলো

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৯৩০ ঘণ্টা, মার্চ ২৫, ২০২০
করোনা: মাস্ক-স্যানিটাইজার নিয়ে জনগণের পাশে ছাত্র সংগঠনগুলো ছবি প্রতীকী

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়: বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে পড়া করোনা ভাইরাস (কোভিড-১৯) এ আক্রান্ত হয়ে প্রতিদিন বাড়ছে মৃত্যুর মিছিল। কোনো ধরনের প্রতিষেধক না থাকায় সতর্কতা, সচেতনতা ও পরিষ্কার থাকায় আপাতত এ ভাইরাস প্রতিরোধের একমাত্র কৌশল। গত ৮ মার্চ বাংলাদেশে প্রথম করোনা রোগী শনাক্ত হলেও এ দেশের জনগোষ্ঠীর বিশাল একটি অংশ এখনও অসচেতন রয়েছে।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার পক্ষ থেকে হাতের মাধ্যমে এ ভাইরাস সংক্রামক হওয়ার কথা জানিয়ে নিয়মিত হ্যান্ড-স্যানিটাইজার দিয়ে হাত পরিষ্কার করার জন্য বলা হচ্ছে। কিন্তু বাজারে এসব বস্তু চাহিদার বিপরীতে অপ্রতুল।

যার কারণে ভোগান্তিতে পড়েছে অনেকে। ইতিহাস পর্যালোচনা করলে দেখা যায়, দেশের সংকটকালে ছাত্রসংগঠনগুলো গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছে। করোনার মতো মহামারিতেও ছাত্রসংগঠনগুলো প্রয়োজনীয় দ্রব্য ও সচেতনতামূলক প্রচারপত্র নিয়ে তাদের সাধ্যমতো এ ভাইরাস থেকে জনসাধারণকে সুরক্ষার জন্য কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে।

 

সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, বাজারে প্রথম সংকট দেখা দেয় হ্যান্ড-স্যানিটাইজারের। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ফার্মেসি অনুষদের শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা মিলে নিজেরাই হ্যান্ড-স্যানিটাইজার তৈরি করে। কিন্তু এটি সর্বসাধরণের জন্য করা যায়নি। পরবর্তীকালে ঢাবি ও বুয়েটের অনেক শিক্ষক এ হ্যান্ড-সেনিটাইজার তৈরির উপাদানগুলো বলে দেন। এটি কাজে লাগিয়ে ছাত্রসংগঠনগুলোর সক্রিয় কর্মীরা প্রচুর সংখ্যক স্যানিটাইজার তৈরি করে। মাস্কের সংকট দেখা দেওয়ায় অনেকে মাস্ক তৈরি করেন। অনেক সংগঠন সাবান বিতরণ করে। তবে সব সংগঠনই সচেতনতা বৃদ্ধির জন্য লিফলেট বিতরণ করে।

বাংলাদেশ ছাত্রলীগের পক্ষ থেকে কেন্দ্রীয়ভাবে হ্যান্ড-স্যানিটাইজার, মাস্ক, লিফলেট বিতরণ করা হয়। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকা ও ঢাকা মেডিক্যাল এলাকায় পথচারীদের হাত পরিষ্কার করার জন্য বেসিন বসানো হয়।

এ প্রসঙ্গে ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক লেখক ভট্টাচার্য বাংলানিউজকে বলেন, করোনা ভাইরাস প্রতিরোধে উদ্যোগ নেওয়ার জন্য আমরা সব ইউনিটকে নির্দেশ দিয়ে  বিজ্ঞপ্তি দিই। কেন্দ্রীয়ভাবে আমরা মনিটরিং করছি। ঢাকায় আমরা মাস্ক-স্যানিটাইজার বিতরণ করেছি। কিন্ত সেখানে জনসমাগম হওয়ায় আমরা ইউনিটগুলোকে সর্বোচ্চ সতর্কতার সঙ্গে সবাইকে সচেতন করার জন্য কাজ করতে বলেছি। আমাদের ঐক্যবদ্ধভাবে এ দুর্যোগ মোকাবিলা করতে হবে।

করোনা প্রতিরোধে নিজেদের উদ্যোগ সম্পর্কে জানিয়ে ছাত্র ইউনিয়নের কেন্দ্রীয় সভাপতি মেহেদী হাসান নোবেল বলেন, আমরা ১৭ মার্চ থেকে কাজ শুরু করেছি। এ পর্যন্ত বিশ হাজারের অধিক স্যানিটাইজার তৈরি করে বিতরণ করেছি। তার মধ্যে কুর্মিটোলো হাসপাতালসহ অনেক ক্লিনিক আমাদের তৈরি স্যানিটাইজার নিয়েছে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মচারীদের মধ্যে বিতরণ করেছি। দেশের ১৫ থেকে ১৬ টি জেলায় প্রত্যেকটি সংসদ এটি তৈরি করে বিতরণ করছে। পাশাপাশি লোকজনকে সচেতন করছে।

কোটা সংস্কার আন্দোলনকে কেন্দ্র করে গড়ে ওঠা প্ল্যাটফরম বাংলাদেশ ছাত্র অধিকার পরিষদও একই ধরনের কর্মসূচি নিয়েছে। সংগঠনের আহ্বায়ক হাসান আল মামুন বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ থাকায় আমাদের জেলা সংগঠনগুলো সচেতনতা বৃদ্ধির জন্য কাজ করছে। ঢাকায় যারা আছে তারা মাস্ক-স্যানিটাইজার-সাবান, ও প্রচারপত্র বিলি করছে। মসজিদগুলোতে অজু করার আগে হাত ধোয়ার জন্য সাবান দিয়েছি আমরা। ইউনিয়ন পর্যায়েও আমাদের কার্যক্রম চলছে।

ছাত্র ফেডারেশনের সহ-সাধারণ সম্পাদক উম্মে হাবিবা বেনজির বলেন, মধ্যবিত্ত পরিবারের অনেকের কাছে প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র সংগ্রহে আছে। কিন্তু শ্রমজীবী মানুষদের সে সুযোগ কম। তাই আমরা নিজেরা মাস্ক, স্যানিটাইজার তৈরি করে বিতরণের পাশাপাশি তাদের জিনিসপত্র কিনে দিচ্ছি। এসব কার্যক্রম নিজেদের ফান্ড থাকার ওপর নির্ভর করবে। এজন্য আমরা সমাজের বিত্তবানদের অংশগ্রহণ কামনা করছি। কেউ সাহায্য করতে চাইলে সংগঠনের ফেসবুক পেজে দেওয়া তথ্য অনুসরণের জন্য আহ্বান জানান তিনি।

বাংলাদেশ সময়: ১১৪৪ ঘণ্টা, মার্চ ২৫, ২০২০
এসকেবি/ওএইচ/

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।