বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার পক্ষ থেকে হাতের মাধ্যমে এ ভাইরাস সংক্রামক হওয়ার কথা জানিয়ে নিয়মিত হ্যান্ড-স্যানিটাইজার দিয়ে হাত পরিষ্কার করার জন্য বলা হচ্ছে। কিন্তু বাজারে এসব বস্তু চাহিদার বিপরীতে অপ্রতুল।
সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, বাজারে প্রথম সংকট দেখা দেয় হ্যান্ড-স্যানিটাইজারের। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ফার্মেসি অনুষদের শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা মিলে নিজেরাই হ্যান্ড-স্যানিটাইজার তৈরি করে। কিন্তু এটি সর্বসাধরণের জন্য করা যায়নি। পরবর্তীকালে ঢাবি ও বুয়েটের অনেক শিক্ষক এ হ্যান্ড-সেনিটাইজার তৈরির উপাদানগুলো বলে দেন। এটি কাজে লাগিয়ে ছাত্রসংগঠনগুলোর সক্রিয় কর্মীরা প্রচুর সংখ্যক স্যানিটাইজার তৈরি করে। মাস্কের সংকট দেখা দেওয়ায় অনেকে মাস্ক তৈরি করেন। অনেক সংগঠন সাবান বিতরণ করে। তবে সব সংগঠনই সচেতনতা বৃদ্ধির জন্য লিফলেট বিতরণ করে।
বাংলাদেশ ছাত্রলীগের পক্ষ থেকে কেন্দ্রীয়ভাবে হ্যান্ড-স্যানিটাইজার, মাস্ক, লিফলেট বিতরণ করা হয়। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকা ও ঢাকা মেডিক্যাল এলাকায় পথচারীদের হাত পরিষ্কার করার জন্য বেসিন বসানো হয়।
এ প্রসঙ্গে ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক লেখক ভট্টাচার্য বাংলানিউজকে বলেন, করোনা ভাইরাস প্রতিরোধে উদ্যোগ নেওয়ার জন্য আমরা সব ইউনিটকে নির্দেশ দিয়ে বিজ্ঞপ্তি দিই। কেন্দ্রীয়ভাবে আমরা মনিটরিং করছি। ঢাকায় আমরা মাস্ক-স্যানিটাইজার বিতরণ করেছি। কিন্ত সেখানে জনসমাগম হওয়ায় আমরা ইউনিটগুলোকে সর্বোচ্চ সতর্কতার সঙ্গে সবাইকে সচেতন করার জন্য কাজ করতে বলেছি। আমাদের ঐক্যবদ্ধভাবে এ দুর্যোগ মোকাবিলা করতে হবে।
করোনা প্রতিরোধে নিজেদের উদ্যোগ সম্পর্কে জানিয়ে ছাত্র ইউনিয়নের কেন্দ্রীয় সভাপতি মেহেদী হাসান নোবেল বলেন, আমরা ১৭ মার্চ থেকে কাজ শুরু করেছি। এ পর্যন্ত বিশ হাজারের অধিক স্যানিটাইজার তৈরি করে বিতরণ করেছি। তার মধ্যে কুর্মিটোলো হাসপাতালসহ অনেক ক্লিনিক আমাদের তৈরি স্যানিটাইজার নিয়েছে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মচারীদের মধ্যে বিতরণ করেছি। দেশের ১৫ থেকে ১৬ টি জেলায় প্রত্যেকটি সংসদ এটি তৈরি করে বিতরণ করছে। পাশাপাশি লোকজনকে সচেতন করছে।
কোটা সংস্কার আন্দোলনকে কেন্দ্র করে গড়ে ওঠা প্ল্যাটফরম বাংলাদেশ ছাত্র অধিকার পরিষদও একই ধরনের কর্মসূচি নিয়েছে। সংগঠনের আহ্বায়ক হাসান আল মামুন বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ থাকায় আমাদের জেলা সংগঠনগুলো সচেতনতা বৃদ্ধির জন্য কাজ করছে। ঢাকায় যারা আছে তারা মাস্ক-স্যানিটাইজার-সাবান, ও প্রচারপত্র বিলি করছে। মসজিদগুলোতে অজু করার আগে হাত ধোয়ার জন্য সাবান দিয়েছি আমরা। ইউনিয়ন পর্যায়েও আমাদের কার্যক্রম চলছে।
ছাত্র ফেডারেশনের সহ-সাধারণ সম্পাদক উম্মে হাবিবা বেনজির বলেন, মধ্যবিত্ত পরিবারের অনেকের কাছে প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র সংগ্রহে আছে। কিন্তু শ্রমজীবী মানুষদের সে সুযোগ কম। তাই আমরা নিজেরা মাস্ক, স্যানিটাইজার তৈরি করে বিতরণের পাশাপাশি তাদের জিনিসপত্র কিনে দিচ্ছি। এসব কার্যক্রম নিজেদের ফান্ড থাকার ওপর নির্ভর করবে। এজন্য আমরা সমাজের বিত্তবানদের অংশগ্রহণ কামনা করছি। কেউ সাহায্য করতে চাইলে সংগঠনের ফেসবুক পেজে দেওয়া তথ্য অনুসরণের জন্য আহ্বান জানান তিনি।
বাংলাদেশ সময়: ১১৪৪ ঘণ্টা, মার্চ ২৫, ২০২০
এসকেবি/ওএইচ/