ঢাকা, মঙ্গলবার, ১৪ মাঘ ১৪৩১, ২৮ জানুয়ারি ২০২৫, ২৭ রজব ১৪৪৬

জাতীয়

আতঙ্ক নিয়েই ঢাকা ছাড়লো নগরবাসী

ফিচার রিপোর্টার | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২০৪২ ঘণ্টা, মার্চ ২৫, ২০২০
আতঙ্ক নিয়েই ঢাকা ছাড়লো নগরবাসী বাসের জন্য অপেক্ষা করছে যাত্রীরা। ছবি: ডিএইচ বাদল

ঢাকা: করোনা ভাইরাস প্রতিরোধে সরকারের বার বার গণজমায়েত এড়িয়ে চলতে বলা হলেও ১০ দিনের বাধ্যতামূলক ছুটি সামনে রেখে গণজমায়েতের মধ্য দিয়েই আতঙ্কে গ্রামে ফিরেছেন রাজধানীর জনগণ।

বুধবার (২৫ মার্চ) গণপরিবহন বন্ধের আগের দিনটিতে সকাল থেকেই বাস টার্মিনালগুলোতে উপচেপড়া ভিড় দেখা যায়। এ সময় রাজধানীর অনেক লোকাল বাসকেও রিজার্ভ নিয়ে গ্রামে ফিরতে দেখা গেছে মানুষকে।

রাজধানী ছাড়ছেন নগরবাসী।  ছবি: ডিএইচ বাদলদুপুরে রাজধানীর বাংলামটর এলাকা থেকে ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় রাজধানীর মিরপুর-যাত্রাবাড়ী রুটের বাস ‘শিকড়’ রিজার্ভ করে ফিরছিলেন এই এলাকার বেশকিছু মানুষ।

কথা হলে জানান, ১০ দিনের বাধ্যতামূলক ছুটি পরিবারের সঙ্গে কাটাতে গ্রামে যাচ্ছেন তারা। হঠাৎ করেই লোকাল, মেইল, এক্সপ্রেস, কমিউটার ট্রেন বন্ধের ঘোষণা দেওয়ায় ট্রেনে যাওয়া সম্ভব না হওয়ায় ঢাকায় থাকা ওই এলাকার সবাই মিলে এই ব্যবস্থা। রাজধানী ছাড়ছেন নগরবাসী।  ছবি: ডিএইচ বাদলএই পরিস্থিতিতে গ্রামে করোনা ঝুঁকি বেশি কিনা জানতে চাইলে আহসান নামে একজন বলেন, গ্রামে এখনো করোনা ঝুঁকি একটু বেশি। কেননা বিদেশ থেকে তো সবাই গ্রামেই যাচ্ছে। তবে এতবড় ছুটির সময় আমাদের জন্য শহরে থাকা সমস্যা। নিত্যপণ্যের দাম বেশি, আবার আপাতত কাজও নাই এখানে। তাই গ্রামেই যাচ্ছি। বাড়িতে গিয়েই সবাই একসঙ্গে নিরাপদে থাকার চেষ্টা করবো।

এদিকে রাজধানীর সায়েদাবাদ, মহাখালী ও গাবতলী বাস টার্মিনালেও ছিল যাত্রীদের ভিড়। রাজধানী নিরাপদ নয় এবং থাকার জায়গা নেই- এমন অভিযোগ ছিল অনেকের কণ্ঠে। তাই পরিবার পরিজন নিয়ে বাড়ি ফিরছেন নগরবাসী। রাজধানী ছাড়ছেন নগরবাসী।  ছবি: ডিএইচ বাদলএই প্রসঙ্গে তরুণ সরকারী কর্মকর্তা সাজ্জাদ হোসেন বলেন, এটা ঠিক যে এই সময় বাড়ি যাওয়া উচিত না, তবে আমরা যারা ঢাকায় নতুন, তদের থাকতে হয় মেস বা আলাদা সাবলেটে। মেসের খালা চলে গেছেন আরও কয়েকদিন আগেই। এমন অবস্থায় রান্নার সমস্যা এবং বাইরের খাবারেও সমস্যা। তাই ভেতরে আতঙ্ক  থাকলেও গ্রামে ফেরাটাই স্বাচ্ছন্দবোধ করছি।

মধ্যবয়স্ক আরেফিন আহমেদ বলেন, গ্রামে ঝুঁকি আছে জানি, কিন্তু ঢাকাতে তো সবাই সবার মতো। এখানে কিছু হলেও কেউ দেখতে আসে আসে না। আর এই ভাইরাসের সময় তো মানুষ আরও আত্মকেন্দ্রিক হয়ে গেছে। তাই বাড়ি ফিরছি। আল্লাহ না করুক কিছু যদি হয়েও যায়, নিজের পরিবারের মানুষগুলোতো আর ফেলে দেবে না। তাই বলা যায়, সেটিও এক ধরনের নিরাপত্তা।

১০ দিনের বাধ্যতামূলক ছুটিতে রাজধানী এখন প্রায় পুরোটাই ফাঁকা। আতঙ্ক থাকলেও তা নিজের ভেতর রেখে দিয়েই গ্রামে ফিরেছেন সাধারণ মানুষ। আতঙ্ক আর এই ভয়ঙ্কর সময়টিতে অচেনা নগরীর পরিবর্ততে কাছে থাকবে পরিবারের মানুষগুলো।

বাংলাদেশ সময়: ২০২৯ ঘণ্টা, মার্চ ২৫, ২০২০
এইচএমএস/এএটি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।