ঢাকা, বুধবার, ১০ পৌষ ১৪৩১, ২৫ ডিসেম্বর ২০২৪, ২২ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

জাতীয়

বগুড়ায় আন্দোলনের ঘোষণা অটোরিকশাচালকদের

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২০২০ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১০, ২০২১
বগুড়ায় আন্দোলনের ঘোষণা অটোরিকশাচালকদের পদযাত্রায় অটোচালকরা। ছবি: বাংলানিউজ

বগুড়া: অবিলম্বে লাইসেন্স দেওয়ার প্রক্রিয়া শুরু না হলে বগুড়ায় আগামী ২৪ জানুয়ারি কঠোর আন্দোলনের যাবেন বলে ঘোষণা দিয়েছেন ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা-ভ্যান শ্রমিক মালিক সংগ্রাম পরিষদ।  

রোববার (১০ জানুয়ারি) দুপুরে বগুড়া শহরের জিরোপয়েন্ট সাতমাথায় মুজিব মঞ্চের সামনে দফা দাবিতে আয়োজিত এক সমাবেশে ওই ঘোষণা দেওয়া হয়।

দাবিগুলো- পৌরসভা থেকে অটোরিকশা-ভ্যান-ইজিবাইকের ট্রেড লাইসেন্স প্রদান, অটোরিকশা ভাঙচুর, শ্রমিকদের শারীরিক মানসিক নির্যাতন বন্ধ করা, রোড এবং স্ট্যান্ড নির্ধারণসহ স্ট্যান্ডগুলোতে পাবলিক টয়লেটের ব্যবস্থা, রাস্তায় মোটরসাইকেলসহ গাড়ি পার্কিং বন্ধ করা এবং ফুটপাত দখলমুক্ত করা।

সমাবেশে প্রায় হাজার অটোরিকশাচালক মালিকরা অংশ নেয়। রিকশা শ্রমিকদের এই আন্দোলনেকে সমর্থন জানিয়ে বাম দলের নেতাকর্মীরা কর্মসূচিতে যোগ দিয়েছেন।

এর আগে সকাল ১০টা থেকেই শহরতলীর বনানী এলাকায় জমায়েত হতে শুরু করেন আন্দোলনকারী রিকশা শ্রমিকরা। সেখানে একটি সংক্ষিপ্ত সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। এরপর হাতে ব্যানার-প্ল্যাকার্ড নিয়ে স্লোগান দিতে-দিতে সাতমাথা অভিমুখে আন্দোলনকারীদের একটি পদযাত্রা বের হয়। কলোনি, ঠনঠনিয়া বাসস্ট্যান্ড মফিজ পাগলা পথসভা শেষে পদযাত্রাটি শহরের সাতমাথায় এসে শেষ হয়।

বগুড়া শহরের যানজট নিরসনে জেলা পুলিশ গত জানুয়ারি থেকে শহরের ইজিবাইক, অটোরিকশা, মেট্রোরিকশা সব ধরনের ব্যাটারিচালিত যান চলাচলের ওপর বিধি-নিষেধ আরোপ করেন। আর এতেই কঠোর আন্দোলনের ডাক দেওয়া হয়।

অটোরিকশা-ভ্যান শ্রমিক মালিক সংগ্রাম পরিষদের আহ্বায়ক কবির হোসেনের সভাপতিত্বে রোববার শহরের জিরোপয়েন্ট সাতমাথায় অনুষ্ঠিত ওই সমাবেশে অন্যান্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন শ্রমিক নেতা রুমেল মাসুদ পারভেজ, অ্যাডভোকেট দিলরুবা নুরী, অটোরিকশা মালিক কাশেম, ফারুকুল ইসলাম, অটোরিকশাচালক শাজাহান মোল্লা শাজাহানসহ অন্যান্য নেতারা।

সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক আব্দুল হাইয়ের পরিচালনায় সমাবেশে বক্তারা বলেন, শহরের যানজট নিরসনের নামে প্রশাসন সাতমাথায় ব্যাটারিচালিত যানবাহন ঢুকতে দিচ্ছে না। অথচ যানজটের জন্য দায়ী অপ্রতুল রাস্তা, শহরের অভিজাত হোটেল, বেসরকারি হাসপাতাল, ব্যাংক শপিংমলের সামনে পার্কিং করে রাখা মোটরসাইকেল গাড়ি যাজনজটের অন্যতম আরেকটি কারণ। ফুটপাতও ব্যবসায়ীদের দখলে। পৌর কর্তৃপক্ষের কোনো নজর নেই এদিকে।

বক্তারা বলেন, ব্যাটারিচালিত এসব যানবাহন আমদানি করাসহ দেশের অভ্যন্তরে কেনাবেচায় সরকারি কোণো বিধিনিষেধ নেই। অথচ রাস্তায় যখন চলছে তখন সেগুলো অবৈধ বলা হচ্ছে। পৌরসভার মেয়রকে বিষয়টি জানানো হলেও কোনো পদক্ষেপ নেননি তিনি।

এর আগে জেলা প্রশাসকের কাছে স্মারকলিপি দেওয়া হলে তিনি শুধু আশ্বস্ত করেছেন। অথচ ব্যাটারিচালিত এসব অটোরিকশার মাধ্যমে যথাসময়ে নির্দিষ্ট স্থানে পৌঁছাতে পারে যাত্রীরা। পরিবেশ দূষণও হয় না এসব রিকশায়। রোগীকে দ্রুত সময়ে হাসপাতালে পৌঁছে দেওয়াসহ যাতায়াতে সাধারণ মানুষের ভোগান্তি কমিয়ে এনেছে অটোরিকশাগুলো।

সমাবেশে বৃদ্ধ অটোরিকশাচালক শাজাহান বলেন, অটোরিকশা না থাকলে এই বয়সে রিকশা চালানো সম্ভব হতো না। কিন্তু এখন ঠিকমতো অটোরিকশা চালানো যাচ্ছে না। পরিবারের খরচ চালাতে হিমশিম খেতে হচ্ছে। '

তিনি বলেন, ‘কষ্ট করে রিকশা চালিয়ে বৈধভাবে আয় করছি কিন্তু যন্ত্রে বৈধতা নাই। '

সমাবেশে বক্তারা লাইসেন্সের ব্যবস্থা নীতিমালা তৈরিসহ দফা দাবি পূরণে প্রশাসনের কাছে আহ্বান করেন। তা না হলে আগামী ২৪ জানুয়ারি কঠোর আন্দোলন কর্মসূচির ঘোষণা দেন সংগঠানের নেতারা।

বাংলাদেশ সময়: ১৬০৭ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১০, ২০২১
এএটি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।