নারায়ণগঞ্জ: নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে ফিল্মি কায়দায় রাস্তা বন্ধ করে পৌর যুবলীগ নেতা ও তার বন্ধুকে প্রায় আধা ঘণ্টা লাঠিপেটা করা হয়েছে। এসময় আশপাশের কেউ সন্ত্রাসীদের হাতে থাকা অস্ত্রের ভয়ে এগিয়ে আসতে সাহস পায়নি।
মোটরসাইকেল আরোহী দুই যুবককে বহুদূর থেকে অনুসরণ করা দুই অটোরিকশায় ছিল সন্ত্রাসী বাহিনীর প্রায় ১৫-২০ জন। এদের সবার হাতে ছিল রামদা, লোহার রড, লোহার পাইপ, হকি স্টিকসহ নানা দেশীয় অস্ত্র। এক পর্যায়ে প্রচণ্ড মারধরে দুই যুবক অজ্ঞান হয়ে গেলে তাদের মৃত ভেবে ফেলে চলে যায় সন্ত্রাসীরা। পরে স্থানীয়রা উদ্ধার করে দু’জনকে রূপগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যায়।
মঙ্গলবার (৯ মার্চ) আহত আব্দুর রহমান ঘটনার বিস্তারিত গণমাধ্যমে তুলে ধরেন।
সোমবার (৮ মার্চ) দুপুর ১২টায় রূপগঞ্জ উপজেলার কাঞ্চন মন্ডল বাড়ির চাঁন টেক্সটাইল এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। ইতোমধ্যে দুই যুবককে মারধর ও অস্ত্র নিয়ে মহড়া দেওয়ার সিসি টিভি ফুটেজ নারায়ণগঞ্জ জেলা পুলিশ সুপারের কাছে পৌঁছেছে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমেও ছড়িয়ে পড়েছে সেই মারধরের ফুটেজ।
গুরুতর আহতরা হলেন- কাঞ্চন পৌর যুবলীগ নেতা আব্দুর রহমান (৩০) ও তার বন্ধু সাদেক মিয়া (৩১)। আর মারধর করা অস্ত্রধারীরা সবাই কাঞ্চন পৌর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক গোলাম রসূল কলির লোকজন বলে অভিযোগ করা হয়েছে।
স্থানীয় চায়ের দোকানি লাকু মিয়া জানান, দু’জনকে পেটাতে দেখেছি। এরা কারা জানি না। দু’জনের একজন জ্ঞান হারিয়ে ফেললে অস্ত্রধারীরা চলে যায়। পরে তাদের উদ্ধার করে রূপগঞ্জ স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যায় স্থানীয় বেশ কয়েকজন যুবক।
আহত আব্দুর রহমান জানান, আমাকে মারার আগে আরেক যুবলীগ নেতা শুভকেও তারা মারধর করেছে। অস্ত্রধারীরা সবাই কাঞ্চন পৌর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক গোলাম রসুল কলির বাহিনী। এদের অনেকেকেই আমি চিনতে পেরেছি। এরা মারধর শেষে আমার হোন্ডা ছিনতাই করে নিয়ে গেছে। যারা আমাকেও সাদেককে মারধর করেছে। তারা হলো- রবিউল, মতিউর, মঞ্জুর, নবিউল হোসেন শান্ত, সেকান্দর, ছাইফুল্লাহ, ইসলামউদ্দিন,দেওয়ান নবিউর,মোমেন,রাসেল, আলমগীর, বাবু, ইউসুফ, রুবেল, টুটুল, শাকিল, নীরজন কোলু,আমিন, মামুন। আর বাকিদের নাম বলতে পারছি না।
মারধর কেন করা হলো এ প্রশ্নের জবাবে তিনি জানান, প্রভাব বিস্তার কেন্দ্র করে ও স্থানীয় রাজনৈতিক দ্বন্দ্বের কারণে এ হামলার শিকার হয়েছি।
এদিকে অপর একটি সিটি টিভির ফুটেজে দেখা যায়, সন্ত্রাসী ওই বাহিনী সাদেক ও আব্দুর রহমানকে মারধর শেষে কাঞ্চন পৌরসভা গেটে তাণ্ডব চালিয়ে মহড়া দিয়েছে।
এ বিষয়ে রূপগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মহসীন কাদের ঘটনার সত্যতা স্বীকার জানান, এ বিষয়ে অভিযোগ প্রক্রিয়াধীন। কে বা কারা এ ঘটনা ঘটিয়েছে পুরো বিষয়টি সিসি টিভি ফুটেজ দেখে ব্যবস্থা নিচ্ছি।
এ বিষয়ে নারায়ণগঞ্জ জেলা পুলিশ সুপার জায়েদুল আলম জানান, সিসি টিভি ফুটেজ হস্তগত হয়েছে। প্রকৃত ঘটনা তদন্ত করে দোষীদের গ্রেফতারের নির্দেশ দিয়েছে। অপরাধী যারাই হোক তাদের ছাড় দেওয়া হবে না। রূপগঞ্জ ওসি ও সার্কেল এসপিকে এ বিষয়ে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।
বাংলাদেশ সময়: ২০৫৮ ঘণ্টা, মার্চ ০৯, ২০২১
এএ