ঢাকা, রবিবার, ৫ মাঘ ১৪৩১, ১৯ জানুয়ারি ২০২৫, ১৮ রজব ১৪৪৬

জাতীয়

মেহেরপুরে শ্বশুরের নির্যাতনে জামাইয়ের মৃত্যু 

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৬৪৩ ঘণ্টা, মার্চ ১০, ২০২১
মেহেরপুরে শ্বশুরের নির্যাতনে জামাইয়ের মৃত্যু  সাইফুল ইসলাম

মেহেরপুর: স্বামীর অনুমতি না নিয়ে বোনের বাড়ি বেড়াতে গিয়েছিলেন  রোজিনা খাতুন। আর তাতেই স্বামী সাইফুল ইসলাম রেগে বেদম মারধর শুরু করেন রোজিনাকে।

একপর্যায়ে ক্ষুর দিয়ে তাকে আঘাত করলে গুরুতর আহত হন রোজিনা। এসময় নিজেকে বাঁচাতে স্বামীকে ইট দিয়ে মাথায় আঘাত করেন রোজিনা।  

সোমবার (০৮ মার্চ) মধ্য রাতে মেহেরপুরের গাংনী উপজেলার দেবীপুর গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।

এ ঘটনার জেরে রোজিনার বাবার লোকজন সাইফুল ইসলামকে গাছে বেঁধে মারধর শুরু করেন। একপর্যায়ে গাছে বাঁধা অবস্থায়ই তার মুখে ঘাস মারা বিষ ঢেলে দেন। এর পরে আহত রোজিনাকে হাসপাতালে নিলেও সাইফুলকে গাছের সঙ্গেই মুমূর্ষু অবস্থায় বেঁধে রাখেন।

পরে খবর পেয়ে বামন্দী পুলিশ ক্যাম্পের সদস্যরা সাইফুলকে উদ্ধার করে প্রথমে গাংনী হাসপাতালে নেন। পরে অবস্থার অবনতি  হওয়ায় তাকে কুষ্টিয়া মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে রেফার্ড করেন দায়িত্বরত চিকিৎসক। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় বুধবার (১০ মার্চ) সকালে মারা যান সাইফুল।

সাইফুলের বাবা নিশিপুর গ্রামের ভাদু মণ্ডল বাংলানিউজকে বলেন, ১৫ বছর আগে আমার ছেলে সাইফুলের সঙ্গে দেবীপুর গ্রামের আতাহার আলীর মেয়ে রোজিনা খাতুনের বিয়ে হয়। বিয়ের পর থেকেই তাদের মধ্যে ঝগড়া ঝাটি লেগেই থাকতো। দীর্ঘদিন আমার বাড়িতেই ছিল তারা। প্রায় ৬ মাস আগে ঘর জামাই হিসেবে সাইফুল রোজিনা বাবার বাড়ি দেবীপুরে চলে যায়। পারিবারিক কলহের জেরে তারা সাইফুলকে গাছে বেঁধে মারধর করে ও মুখে কীটনাশক ঢেলে দেয়। এতে সে অসুস্থ হয়ে পড়লে তাকে চিকিৎসা না দিয়ে গাছের সঙ্গেই বেঁধে রাখা হয়। পরে খবর পেয়ে আমরা বামন্দী ক্যাম্পকে জানালে পুলিশের একটি দল সাইফুলকে উদ্ধার করে গাংনী স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করে। সেখানে তার অবস্থার অবনতি হওয়ায় পরে কুষ্টিয়া মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। সেখানে আজ সকালে মারা যায় সে।

এদিকে রোজিনা খাতুন জানান, তার স্বামী সাইফুল মাদকাসক্ত ছিলেন। মাদক সেবন করে প্রায়ই তাকে নির্যাতন করতেন। সোমবার রাতে বাড়ি ফিরে সাইফুল ক্ষুর দিয়ে তাকে জবাই করার চেষ্টা করেন। ক্ষুরের আঘাতে তার দুই হাত জখম হয়। স্বামীর হাত থেকে রক্ষা পেতে তিনি ইট দিয়ে মাথায় আঘাত করেন বলে স্বীকার করেন।

ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে গাংনী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) বজলুর রহমান জানান, খবর পেয়ে  পুলিশের একটি দল সাইফুলকে গাছে বাঁধা অবস্থায় উদ্ধার করে হাসপাতালে পাঠায়। পরে কুষ্টিয়া মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে সাইফুল মারা গেছে বলে তার পরিবারের লোকজন জানিয়েছে।

এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত কোনো মামলা হয়নি। মামলা হলে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

বাংলাদেশ সময়: ১৬৪২ ঘণ্টা, মার্চ ১০, ২০২১
আরএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।