ঢাকা, সোমবার, ৫ মাঘ ১৪৩১, ২০ জানুয়ারি ২০২৫, ১৯ রজব ১৪৪৬

জাতীয়

রিজার্ভের অর্থে পায়রা বন্দরের রাবনাবাদ চ্যানেলের ড্রেজিং

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০০৪৭ ঘণ্টা, মার্চ ১৬, ২০২১
রিজার্ভের অর্থে পায়রা বন্দরের রাবনাবাদ চ্যানেলের ড্রেজিং ...

ঢাকা: দেশের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভের অর্থ বিনিয়োগ করা হবে পায়রা বন্দরের রাবনাবাদ চ্যানেলের ড্রেজিং কর্মসূচিতে। এজন্য বাংলাদেশ ইনফ্রাস্ট্রাকচার ডেভলপমেন্ট ফান্ড (বিআইডিএফ) নামে একটি তহবিল গঠন করা হয়েছে।

তহবিলের অর্থ বিদ্যুতখাতেও বিনিয়োগ করা হবে।

পায়রা বন্দরের রাবনাবাদ চ্যানেলের ড্রেজিং কর্মসূচিতে রিজার্ভের অর্থ ব্যবহারের জন্য সোমবার (১৫ মার্চ) সকালে অর্থ বিভাগের সঙ্গে বাংলাদেশ ব্যাংক ও নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের ত্রিপক্ষীয় চুক্তি সই হয়েছে।

চুক্তি সই অনুষ্ঠানে ভিডিও কনফারেন্সে গণভবন থেকে অংশ নিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তহবিলের উদ্বোধন ঘোষণা করেন।

এসময় প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমরা তহবিলটির নাম দিয়েছি বাংলাদেশ অবকাঠামো উন্নয়ন তহবিল। এ তহবিল থেকে প্রাথমিকভাবে বন্দর এবং বিদ্যুৎ খাতে বিনিয়োগ করা হবে। এ তহবিলের বার্ষিক বিনিয়োগের লক্ষ্যমাত্রা আমরা নির্ধারণ করেছি ২ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের সমপরিমাণ বৈদেশিক মুদ্রা। আমরা বিআইডিএফ থেকে অর্থায়নের ক্ষেত্রে প্রথম অবকাঠামো উন্নয়ন কর্মসূচি হিসেবে পায়রা বন্দরের রাবনাবাদ চ্যানেলের ক্যাপিটেল ও মেইনটেন্যান্স ড্রেজিং কর্মসূচিটি গ্রহণ করেছি।

তিনি আরও বলেন, দেশের অর্থনীতির প্রাণকেন্দ্র বলে পরিচিত চট্টগ্রাম সমুদ্র বন্দর এর সক্ষমতার শেষ পর্যায়ে পৌঁছে গেছে। কিন্তু দেশের বৈদেশিক বাণিজ্যের পরিমাণ দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে এবং ফলে পণ্য হ্যান্ডলিং-এর জন্য বন্দরগুলোর ওপর চাপ বাড়ছে। এ কারণে আমাদের তৃতীয় সমুদ্রবন্দর প্রতিষ্ঠা করা জরুরি হয়ে পড়ে। আমরা ২০১৩ সালে পটুয়াখালী জেলার রাবনাবাদ চ্যানেলে পায়রা বন্দর নামে দেশের তৃতীয় সমুদ্র বন্দর উদ্বোধন করি। পায়রা বন্দর  আমাদের সরকারের ফাস্ট ট্র্যাক প্রকল্পের আওতাধীন একটি অতি গুরুত্বপূর্ণ অগ্রাধিকার প্রকল্প।

শেখ হাসিনা বলেন, আমরা আশা করছি রাবনাবাদ চ্যানেলের ক্যাপিটাল ড্রেজিং-এর মাধ্যমে গভীরতা ১০.৫ মিটারে উন্নীত করা সম্ভব হবে। এর ফলে বিপুল সংখ্যক বিদেশি জাহাজ বন্দরে আগমন করবে এবং দেশের বৈদেশিক বাণিজ্যে নতুন মাত্রা সংযোজিত হবে। অনুমান করা যাচ্ছে যে, ২০৫০ সাল নাগাদ দেশে কন্টেইনারবাহী কার্গো পরিবহনের চাহিদা হবে বর্তমানের দ্বিগুণেরও বেশি। বন্দরের সক্ষমতা বৃদ্ধি, আধুনিকায়ন এবং গভীর সমুদ্র বন্দর প্রতিষ্ঠা দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে দীর্ঘমেয়াদী পরিকল্পনার অংশ। একই সাথে অন্যান্য সমুদ্র বন্দরগুলোর সক্ষমতা ও সুযোগ-সুবিধাকে ব্যবহার করে পায়রা বন্দরের বাণিজ্যিক সুবিধাকে সর্বোচ্চ পর্যায়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য আমাদের পরিকল্পনা রয়েছে।  আমি আশা করছি রাবনাবাদ চ্যানেলের ক্যাপিটাল ও মেইনটেনেন্স ড্রেজিং কর্মসূচিটি বাস্তবায়িত হলে এ বন্দরের সক্ষমতা ব্যাপকভাবে বৃদ্ধি পাবে। ফলে এ অঞ্চলে নতুন নতুন শিল্পকারখানা গড়ে উঠবে, অবকাঠামোগত উন্নয়ন হবে এবং ব্যবসা-বাণিজ্যের বিপুল প্রসার ঘটবে। দেশের দক্ষিণাঞ্চলের দরিদ্র জনগোষ্ঠীর কর্মসংস্থানের ব্যাপক সুযোগ সৃষ্টি হবে এবং সার্বিকভাবে বন্দরের কর্মকান্ডের সুফল সারা দেশে ছড়িয়ে পড়বে। ফলে বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলা গঠনের পথে দেশ এগিয়ে যাবে এবং ২০৪১ সালের মধ্যে ক্ষুধামুক্ত ও দারিদ্র্যমুক্ত সুখী সমৃদ্ধ উন্নত বাংলাদেশ গড়ায় এ বন্দর বিশেষ ভূমিকা রাখবে।

অনুষ্ঠানে অর্থ বিভাগ থেকে অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল, নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহ্‌মুদ চৌধুরী এমপি, বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ফজলে কবির, অর্থ বিভাগের সিনিয়র সচিব আব্দুর রউফ তালুকদার, অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের সচিব, ফাতিমা ইয়াসমিন, নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের সচিব মোহাম্মদ মেজবাহ উদ্দিন চৌধুরী, সোনালী ব্যাংক লিমিটেডের চেয়রম্যান, জিয়াউল হাসান সিদ্দিকী, পায়রা বন্দর কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান কমোডর হুমায়ুন কল্লোল উপস্থিত ছিলেন।

বাংলাদেশ সময়: ০০৪০ ঘণ্টা, মার্চ ১৬, ২০২১
এসই/এইচএডি/

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।