ঢাকা: মুক্তিযুদ্ধে পরাজিত শক্তি এবং তাদের দোসররা ক্ষমতায় এসে ২১ বছর ধরে স্বাধীনতার ইতিহাসকে বিকৃত করার চেষ্টা করেছে বলে জানিয়েছেন শিক্ষা মন্ত্রী ডাঃ দীপু মনি এমপি।
বৃহস্পতিবার (২৫ মার্চ) রাত রারোটার দিকে রাজধানীর কৃষিবিদ ইনস্টিটিউটে 'গণহত্যা কালরাত্রি ও আলোকের অভিযাত্রী' শীর্ষক আলোচনায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি একথা বলেন।
'৭১ সালের ২৫ মার্চ কালরাতে অপারেশন সার্চলাইট শুরুর পর ঢাকা ক্যান্টনমেন্ট থেকে পাকিস্তানি ঘাতক সেনারা বের হয়ে এক কিলোমিটার দূরে ফার্মগেটে প্রথম ব্যারিকেডের মুখে পড়ে। তৎকালীন ছাত্রলীগ নেতা এবং বর্তমান স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের নেতৃত্বে মুক্তিযুদ্ধের প্রথম ব্যারিকেড তৈরী হয়, ঐতিহাসিক সেই ঘটনার সুবর্ণজয়ন্তী উপলক্ষে অনুষ্ঠানটির আয়োজন করে ২৫ মার্চ ১৯৭১-মুক্তিযুদ্ধের প্রথম ব্যারিকেড উদযাপন কমিটি।
দীপু মনি বলেন, পৃথিবীতে এরকম গণহত্যা ইতিহাস বিরল কিন্তু এই গণহত্যার পরিচিতি অনেক কম। দেশ স্বাধীন হওয়ার সাড়ে তিন বছরের মধ্যে জাতির জনক বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করে স্বাধীনতার পরাজিত শক্তি ও তাদের দোসররা যেহেতু ক্ষমতায় ছিল তারা মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বিশ্বাসী ছিল না। এরা মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসকে ভুলিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করেছে দীর্ঘ ২১ বছর।
তিনি বলেন, ৯৬ সালে আওয়ামী ক্ষমতায় এসে ইতিহাস বিকৃতি হওয়ার হাত থেকে রক্ষা পেয়েছে। আওয়ামী লীগ তৃতীয় ও চতুর্থ বার ক্ষমতায় থাকায় মুক্তিযুদ্ধের চেতনা অপ্রতিরোধ্যভাবে এগিয়ে চলেছে বলে তিনি জানান।
অনুষ্ঠানে প্রধান অালোচক হিসেবে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী অাসাদুজ্জামান খান কামাল এমপি বলেন, বঙ্গবন্ধু সিস্টেমেটিক আন্দোলন বিশ্বাস করতেন। নির্বাচনে জয়লাভের পরেও তিনি পাকিস্তানিদের সাথে আলোচনা চালিয়ে গিয়েছিলেন। তিনি জানতেন আলোচনা সফল হবে না। তারপরও আলোচনা করেছেন।
তিনি বলেন, প্রজন্ম থেকে প্রজন্মকে জানিয়ে দিতে হবে আমরা বীরের জাতি। স্বাধীনতার জন্য যে প্রাণ হানি এটা আমাদের সরণ রাখতে হবে। প্রধানমন্ত্রী নেতৃত্বে আমরা তলাবিহীন ঝুড়ি থেকে উন্নত দেশে পরিনত হয়েছি। আমরা সবাই মিলে এগিয়েই যাব কালোরাত্রিতে এটাই আমাদের প্রতিজ্ঞা।
সভায় বিশেষ অতিথি সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রী কে এম খালিদ এমপি বলেন, বীরত্ব গাঁথা গৌরবের জন্য স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালকে স্বাধীনতা পদকে ভুষিত করার দাবি জানান তিনি।
অনুষ্ঠানে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের মেয়র অাতিকুল ইসলাম বলেন, বঙ্গবন্ধু ৭ মার্চের সেই ১৯ মিনিটের ভাষণেই সব দিক নির্দেশনা ছিল। আমরা তাঁর সেই ভাষণে সব পেয়ে গিয়েছিলাম। সেদিন সেখানে আমার দুই ভাইও ছিলেন। আমার দুই ভাইও শান্তিনগরে ব্যারিকেডে অংশ নিয়েছে। তাই আমি বলতে চাই সেদিনের প্রথম ব্যারিকেড সেটা প্রথম ব্যারিকেড ছিল না এটা প্রথম প্রতিরোধ ছিল। এই ইতিতাসকে ভবিষ্যৎ পাঠ্য পুস্তকে অর্ন্তভুক্ত করার দাবি করেন তিনি।
চিত্রনায়ক মহিউদ্দীন আহমেদ আলমগীর বলেন, ৭ মার্চ বঙ্গবন্ধু স্বাধীনতার ঘোষণা করেছেন। হয়তো এটার পাঠ অন্য কেউ করতে পারেন। তবে বঙ্গবন্ধুর সাথে কারো তুলনা হয় না। দেশ এগিয়ে যাচ্ছে আসুন সবাই মিলে এক সাথে কাজ করি বলে তিনি উল্লেখ করেন।
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন উদযাপন কমিটির সদস্য সচিব কামাল উদ্দিন আহমেদ নান্নু।
অনুষ্ঠানে আরো উপস্থিত ছিলেন চিত্রনায়ক মহিউদ্দীন আহমেদ আলমগীর, ওমর সানী, ফেরদৌস, চিত্রনায়িকা মৌসুমি, অপু বিশ্বাস, মেজর (অব) সামসুল আরেফিন, সাংবাদিক মঞ্জুরুল আহসান বুলবুল, মুন্নি সাহা, লেফটেনেন্ট কর্নেল অব কাজী সাজ্জাদ জহিরসহ আরো অনেকে।
বাংলাদেশ সময়: ০১৩০ ঘন্টা, মার্চ ২৬, ২০২১
এসএমএকে/এমএমএস