সিলেট: কাস্টমস কর্মকর্তার জ্ঞাত বহির্ভূত আয় ৫ কোটি ২১ লাখ ৬৭ হাজার ৩৩৪ টাকা। নিজের নামে সোয়া কোটি টাকার সম্পদ।
২০১৬ সালের ৯ আগস্ট কাস্টমস, এক্সাইজ ও ভ্যাট কমিশনারেট, সিলেটের কমিশনার হিসাবে যোগ দিয়েছিলেন শফিকুল ইসলাম। সে সময় থেকে তার বিরুদ্ধে তদন্তে নামে দুদক। ২০২০ সালের ২০ জানুয়ারি শফিকুল ইসলাম ও তার স্ত্রী মাহবুবা ইসলামের বিরুদ্ধে (মামলা নং-১ ও ২) দায়ের করা হয়।
দুদক সমন্বিত জেলা কার্যালয়ের উপ-পরিচালক মো. নূর-ই-আলম দীর্ঘ তদন্ত শেষে গত ২২ মার্চ শফিকুল ইসলামের বিরুদ্ধে ও পরদিন ২৩ মার্চ তার স্ত্রী মাহবুবা ইসলামের বিরুদ্ধে মহানগর বিশেষ জজ আদালতে অভিযোগপত্র (চার্জশিট) দাখিল করেন।
অভিযোগপত্রে শফিকুল দম্পতি জ্ঞাত আয় বহির্ভূতভাবেই অর্জিত সম্পদ ভোগ দখল করছেন তারা। এ কারণে মানিলন্ডারিংয়ের অপরাধে অভিযুক্ত করে অভিযোগপত্র দাখিল করা হয়েছে।
দুদক সমন্বিত জেলা কার্যালয়ের উপ-পরিচালক মো. নূর-ই-আলম বাংলানিউজকে বলেন, অবৈধ আয় থেকে বিদেশে অর্থ পাচারের তথ্য মিলেনি। তবে, তার ছেলের নামে অর্জিত জমির হিসাব জ্ঞাত বহির্ভূত আয়ে দেখানো হয়েছে।
অভিযোগপত্রে দেখা যায়, কাস্টমস কর্মকর্তা শফিকুল ইসলামের জ্ঞাত বহির্ভূত আয় ৫ কোটি ২১ লাখ ৬৭ হাজার ৩৩৪ টাকা। এই সম্পদের মধ্যে শফিকুল স্থাবর সম্পদ ৩৭ লাখ ৪৫ হাজার টাকা ঘোষণা দেন। কিন্তু তদন্তে পাওয়া যায় ৫২ লাখ ৯৬ হাজার টাকা। ১৫ লাখ ৫১ হাজার টাকা মূল্যের স্থাবর সম্পদের তথ্য গোপন রাখেন তিনি।
এছাড়া ৯৫ লাখ ১৩ হাজার ৪৫৭ টাকা মূল্যের অস্থাবর সম্পদের ঘোষণা দিয়েছিলেন। তদন্তে এক কোটি ৫১ লাখ ৪৬ হাজার ৬৭২ টাকা মূল্যের অস্থাবর সম্পদ অর্জনের প্রমাণ মিলে। এতে করে শফিকুলের সম্পদের ব্যবধান দাঁড়ায় ৭১ লাখ ৮৪ হাজার ২১৫ টাকা। তদন্তে ৫৬ লাখ ৩৩ হাজার ২১৫ টাকার সম্পদ গোপনের তথ্য মিলে।
তদন্তকালে রেকর্ড পর্যালোচনা করে দেখা যায়, নিজ ও সন্তানদের নামে ৫২ লাখ ৯৬ হাজার টাকার স্থাবর ও এক কোটি ৫১ লাখ ৪৬ হাজার ৬৭২ টাকার অস্থাবর সম্পদসহ মোট ২ কোটি ৪ লাখ ৪২ হাজার ৬৭২ টাকার সম্পদ অর্জন করেন।
তদন্ত কর্মকর্তা তদন্তে দেখতে পান, পারিবারিক ব্যয়সহ অন্যান্য খাতে ৩২ লাখ ৭৩ হাজার ৫শ ১৮ টাকা ব্যয় করেছেন। এটা বাদ দিয়েও জ্ঞাত বহির্ভূত আয় দাঁড়ায় ২ কোটি ৩৭ লাখ ১৬ হাজার ১৯০ টাকা।
কাস্টমস কর্মকর্তার নিজ নামে বৈধ আয়ের উৎস মিলে এক কোটি ২০ লাখ ৩০ হাজার ১২৫ টাকা। এর বাইরে ১ কোটি ১৬ লাখ ৮৬ হাজার ৬৫ টাকা মূল্যের সম্পদের বৈধ অর্জন দেখাতে ব্যর্থ হন। আর ছেলের নামে কেনা ৮৬৮.৫ শতাংশ জমির ক্রয়ের গোপন রেখেছিলেন। এছাড়া তার স্ত্রীর মাহবুবা ইসলামের অবৈধ সম্পদের পরিমান ৪ কোটি ৪ লাখ ৮১ হাজার ২৬৯ টাকার অবৈধ সম্পদ জ্ঞাত আয় বহির্ভূতভাবেই অর্জন করেন।
তদন্ত কর্মকর্তা বলেন, এসব অভিযোগে দুদক আইন ২০০৪ এর ২৭ (১) ধারায় শাস্তিযোগ্য অপরাধ সংগঠিত করেন। এছাড়া অবৈধভাবে উপার্জিত সম্পদ গোপন রাখায় মানিলন্ডারিং প্রতিরোধে আইন ২০১২ এর ৪ (২) ধারায় শাস্তিযোগ্য অপরাধ করেছেন তারা।
বাংলাদেশ সময়: ০৬৪০ ঘণ্টা, মার্চ ২৭, ২০২১
এনইউ/এএটি