সিলেট: হেফাজতে ইসলামের ডাকা হরতাল চলাকালে সিলেটে সংঘর্ষের ঘটনায় জামায়াত-শিবির ও হেফাজতের দুই শতাধিক নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়েছে।
রোববার (২৮ মার্চ) মধ্যরাতে কোতোয়ালির বন্দরবাজার ফাঁড়ির ইনচার্জ (এসআই) মোস্তাফিজুর রহমান বাদী হয়ে এ মামলা দায়ের করেন।
মামলায় গ্রেফতার আসামিরাসহ ১৬ জনের নামোল্লেখ করে এজাহারে অজ্ঞাত ২০০ জনকে আসামি করা হয়।
সিলেট কোতোয়ালি মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবু ফরহাদ খান বাংলানিউজকে এ তথ্য নিশ্চিত করেন।
তিনি বলেন, মামলায় দেশীয় অস্ত্রশস্ত্রে সজ্জিত হয়ে পুলিশের কর্তব্য কাজে বাধা দেওয়া এবং পুলিশ সদস্যদের হত্যার উদ্দেশ্যে মারপিট, জখম ভয়-ভীতি প্রদর্শনসহ পুলিশকে লক্ষ্য করে ককটেল নিক্ষেপ করার অপরাধ আনা হয়। এছাড়া জব্দ দেখানো হয় ১৫টি মোটরসাইকেল, একটি বাইসাইকেল, ৩টি ককটেল সদৃশ বস্তু, ৩টি হকিস্টিক, ৬টি বাঁশের লাঠি এবং ৫টি রড।
সংঘর্ষ চলাকালে পুলিশ ৫ জনকে আটক করলেও জিজ্ঞাসাবাদে সংশ্লিষ্ট ৩ জনকে মামলায় গ্রেফতার দেখিয়েছে। তারা হলেন—কিশোরগঞ্জ সদরের বাজিতপুরের মো. শাহিন মিয়ার ছেলে বর্তমানে নগরের ছড়ারপাড়ের বাসিন্দা মো. নিবর (১৯), একই এলাকার আনোয়ার হোসেনের ছেলে মো. হাছিব (২০), ব্রাক্ষণবাড়িয়া জেলার নাসিরনগরের ধরমণ্ডল গ্রামের আহমদ আলীর ছেলে দক্ষিণ সুরমা উপজেলার বরিইকান্দির বাসিন্দা শাহীন আহমদ (১৯)।
মোদী বিরোধী আন্দোলনে কেন্দ্রীয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে সিলেটেও হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের ডাকা সকাল-সন্ধ্যা হরতাল পালিত হয়। রোববার ভোর থেকে সিলেটের রাস্তায় নেমে পড়েন হেফাজতের নেতা-কর্মীরা। সিলেট নগরের গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টে টায়ার জ্বালিয়ে পিকেটিং করেন তারা। সিলেটের বেশকিছু পয়েন্টে অবস্থান নিয়ে অবরোধ করেন সংগঠনটির নেতাকর্মীরা। নগর ছাড়াও সড়ক মহাসড়কে ইট বিছিয়ে, বিদ্যুতের খাম্বা ফেলে সড়ক অবরোধ করে রাখেন তারা।
রোববার বেলা ১২টার দিকে হরতাল বিরোধী মিছিল বের করে আওয়ামী লীগ ও অংগ সহযোগী সংগঠন। বেলা পৌনে ১টার দিকে আওয়ামী লীগ ও অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মীরা জেলা পরিষদের সামনে থেকে হরতাল বিরোধী মিছিল নিয়ে চৌহাট্টা পয়েন্ট ঘুরে সিটি পয়েন্ট এসে সমাবেশে মিলিত হয়। এ সময় শিবির নেতাকর্মী স্লোগান দিয়ে মাঠে নামলে ছাত্রলীগ ধাওয়া দেয়। ছাত্রলীগ সিটি পয়েন্টে সংঘবদ্ধ হয়ে শিবিরের নেতাকর্মীদের ধাওয়া করলে সংঘর্ষ বাধে। এ সময় কয়েকটি ককটেল বিস্ফোরণের শব্দ শোনা যায়।
সংঘর্ষ চলাকালে উভয় পক্ষে ব্যাপক ইটপাটকেল নিক্ষেপ করা হয়। এতে রক্তাক্ত হয়েছেন অনেকেই। এ সময় আশপাশের এলাকায় আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। পুলিশ শিবির নেতাকর্মীদের ধাওয়া করে ৫ শিবির কর্মীকে আটক করে।
সিলেট কোতোয়ালি মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবু ফরহাদ খান বলেন, হেফাজত নেতাকর্মীরা সকালেই মাঠ ছেড়ে চলে যায়। এরপর হরতাল সফল করতে শিবির নেতাকর্মীরা মাঠে নেমে সংঘর্ষে জড়িয়েছে। পুলিশ তাদের ধাওয়া করলে পালিয়ে যায়। এ সময় ৫ জনকে আটক করা হয়।
বাংলাদেশ সময়: ১৩৩৬ ঘণ্টা, মার্চ ২৯, ২০২১
এনইউ/এমজেএফ