ঢাকা: শুধুমাত্র বাংলাদেশি ৩৪টি চ্যানেল দিয়ে গ্রাহক ধরে রাখা সম্ভব নয় বলে জানিয়েছে ক্যাবল অপারেটরস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (কোয়াব)।
শনিবার (২ অক্টোবর) বিকেলে রাজধানীর বনানীর একটি হোটেলে সরকারি সিদ্ধান্তে ক্লিনফিড না থাকায় বিদেশি চ্যানেল বন্ধ রাখার পরিপ্রেক্ষিতে এক সংবাদ সম্মেলনে কোয়াব নেতারা এ কথা বলেন।
কোয়াব নেতারা বলেন, গ্রাহকেরা তাদের নিজেদের স্বার্থে ইউটিউব, ফেসবুকসহ বিভিন্ন ওটিটি প্ল্যাটফর্মে চলে যাবেন। এতে দ্রুত গ্রাহক কমে যাবে। ক্যাবল অপারেটর ব্যবসায়ীরা আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হবেন। একপর্যায়ে তাদের পক্ষে ব্যবসা টিকিয়ে রাখা দুরূহ হবে।
সংবাদ সম্মেলনে কোয়াবের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি এস এম আনোয়ার পারভেজ বলেন, সরকার যে অর্ডার দিয়েছে, আমরা সেটি অক্ষরে অক্ষরে পালন করছি। তথ্য মন্ত্রণালয় আমাদের অভিভাবক। ক্যাবল অপারেটরদের পক্ষ থেকে তথ্যমন্ত্রীর কাছে বিনীত আবেদন করছি, ডিজিটালাইজেশন প্রক্রিয়া কমপ্লিট না হওয়া পর্যন্ত অন্তত যেসব বিদেশি চ্যানেলগুলো বন্ধ আছে, সেই চ্যানেলগুলো যেন আমরা পুনরায় সচল করতে পারি, সে ব্যাপারে যেন তিনি একটা উদ্যোগ গ্রহণ করেন।
তিনি আরও বলেন, ২৫ বছরে তিলে তিলে গড়ে তোলা আমাদের এই ক্যাবল ইন্ডাস্ট্রি। এখানে আমাদের চার লাখ মানুষের রুটিরুজির বিষয় জড়িত। ইউটিউবের রমরমা অবস্থা। যেসব বিদেশি চ্যানেল বাংলাদেশে বন্ধ হয়েছে, সেসব চ্যানেল তাদের প্রতিটি সিরিয়াল সঙ্গে সঙ্গে ইউটিউবে আপলোড করে দিচ্ছে। সেখানে কিন্তু বাংলাদেশি পণ্যের বিজ্ঞাপন ইউটিউবে যাচ্ছে। এই টাকাটা চলে যাচ্ছে ইউটিউব কোম্পানির কাছে। দেশের বাইরে থেকে অনেকগুলো অ্যাপস চলছে। হইচই, নেটফ্লিক্স, আমাজন, হট স্টার, জি-ফাইভ এরা কিন্তু বাংলাদেশ থেকে গ্রাহক নিচ্ছে। কোনো বৈধ উপায়ে তারা গ্রাহক নিচ্ছে না। এরা কিন্তু গ্রাহকের মাধ্যমে বাংলাদেশ থেকে অনেক টাকা নিয়ে যাচ্ছে।
কোয়াব সভাপতি বলেন, মানুষ কিন্তু বসে থাকবে না। সুইচ করবে, এক জায়গা থেকে আরেক জায়গায় চলে যাবে। এই সুইচ করার সুযোগে ক্যাবল টিভি নেটওয়ার্কের ব্যবসা যদি রাস্তায় বসে যায়, আমরা যদি এই সেক্টরে জড়িত মানুষকে বেকারত্বের দিকে ঠেলে দিই, তাহলে এর দায়ভার কে নেবে?
কোয়াবের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক এ বি এম সাইফুল হোসেন ২০০৬ সালের ক্যাবল টেলিভিশন নেটওয়ার্ক পরিচালনা আইনটি যুগোপযোগী করার দাবি জানান।
শুধু ৩৪টি বাংলা চ্যানেল দিয়ে গ্রাহক ধরে রাখা সম্ভব নয় মন্তব্য করে এ বি এম সাইফুল হোসেন বলেন, ক্লিনফিড আমরা অবশ্যই চাই। আমরা ক্লিনফিডের বিপক্ষে না। আমরা ডিস্ট্রিবিউটরের সঙ্গে আলাপ আলোচনা করেছি, আইন অনুযায়ী আমাদের ক্লিনফিড সরবরাহ করতে হবে। ক্লিনফিড অনুষ্ঠান আমাদের কাছে সরবরাহ করা হোক। ডিস্ট্রিবিউটররা সে মোতাবেক ব্রডকাস্টারের সঙ্গে আলোচনা করেছে। আমি নিজেও ব্রডকাস্টারের সঙ্গে আলাপ করেছি।
সংবাদ সম্মেলনে আরও বক্তব্য দেন কোয়াবের সাবেক মহাসচিব নিজাম উদ্দিন মাসুদ। সংবাদ সম্মেলনে শতাধিক ক্যাবল অপারেটর ব্যবসায়ী উপস্থিত ছিলেন।
বাংলাদেশ সময়: ০২০৬ ঘণ্টা, অক্টোবর ০৩, ২০২১
আরকেআর/এমএইচএম