ঢাকা: বিদেশি চ্যানেলের বিজ্ঞাপনমুক্ত সম্প্রচার বা ক্লিনফিডকে স্বাগত জানিয়ে আইন প্রয়োগে সরকারকে সকলের সহযোগিতা করা উচিত, এমনটাই বলছে দেশের টেলিভিশন মালিকদের সংগঠন এটকো।
শনিবার (০২ অক্টোবর) সন্ধ্যায় অ্যাসোসিয়েশন অব টেলিভিশন চ্যানেল ওনার্স-এটকো'র ভার্চুয়াল সংবাদ সম্মেলনে সংগঠনের সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট মোজাম্মেল হক বাবু বলেন, ক্লিনফিডের বিধানটি ১৫ বছরের পুরনো।
ক্লিনফিড এবং ডিজিটালাইজেশন ভারসাম্য এ খাতের সকল অংশীজনের জন্যই সুফল বয়ে আনবে উল্লেখ করে একাত্তর টিভির ব্যবস্থাপনা পরিচালক বাবু বলেন, আইনটিতে যেহেতু সবার স্বার্থ রক্ষা হবে, তাই একটু সময় লাগলেও আমাদের ধৈর্য্যধারণ করা উচিত।
তিনি বলেন, বিদেশি বিজ্ঞাপনের উপচে পড়া আধিক্য আক্ষরিক অর্থেই কমানো প্রয়োজন এবং আইন প্রয়োগের বিষয়ে তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রীর সঙ্গে আমরা সহমত পোষণ করি। সরকার কোনো বিদেশি চ্যানেল বন্ধ করেনি, এখানকার পরিবেশক-অপারেটরেরাই ক্লিনফিড চালাতে না পেরে বন্ধ রেখেছে। ক্যাবল অপারেটরস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ-কোয়াব এর ঐক্য পরিষদ অংশটি আইনের প্রতি শ্রদ্ধা দেখিয়ে সরকারের সঙ্গে আলোচনায় আগ্রহ প্রকাশ করেছে বলেও জানান এটকো'র এই মুখপাত্র। একই সঙ্গে কোয়াবের বিক্ষোভে কোনো ফল হবে না, আইনের প্রতি শ্রদ্ধা দেখাতে হবে বলে জানান তিনি।
উল্লেখ্য, পূর্বঘোষণা অনুসারে ক্যাবল নেটওয়ার্ক পরিচালনা আইন ২০০৬ আইনানুযায়ী বিদেশি চ্যানেলগুলোর বিজ্ঞাপনমুক্ত বা ক্লিনফিড সম্প্রচার বাস্তবায়নে পয়লা অক্টোবর থেকে তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের নির্দেশে মোবাইল কোর্ট পরিচালনা শুরু হয়েছে। যে বিদেশি চ্যানেলগুলোর ক্লিনফিড এদেশের পরিবেশকরা এখনো দেখাতে পারছে না, তারা সেগুলোর সম্প্রচার বন্ধ রেখেছে।
তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী বলেছেন, 'বহু আগে থেকে তাদেরকে বারবার আইন মেনে চলার কথা বলা হয়েছে, বিদেশি চ্যানেলের পরিবেশক, ক্যাবল অপারেটর, দেশি চ্যানেলগুলোর মালিকদেরসহ গত আগস্টে আবার বৈঠক করে এই সময়সীমা নির্ধারণ করা হয়েছে। সরকার কোনো চ্যানেল বন্ধ করেনি, পরিবেশক-অপারেটররা করেছেন। আশা করি শিগগিরই তারা ক্লিনফিড সম্প্রচার করবেন। '
এদিকে তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদের নির্দেশনায় বিদেশি টিভি চ্যানেলের বিজ্ঞাপনমুক্ত বা ক্লিনফিড সম্প্রচার বাস্তবায়নের উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়েছে বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়ন-বিএফইউজে এবং ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়ন-ডিইউজে।
শনিবার (০২ অক্টোবর) দু'টি পৃথক বিবৃতিতে বিএফইউজে সভাপতি মোল্লা জালাল, মহাসচিব আব্দুল মজিদ এবং ডিইউজে সভাপতি কুদ্দুস আফ্রাদ ও সাধারণ সম্পাদক সাজ্জাদ আলম খান তপু বলেন, বিদেশি টিভি চ্যানেলে বিজ্ঞাপনমুক্ত বা ক্লিনফিড সম্প্রচার না করার কারণে দীর্ঘদিন ধরে দেশের অর্থনীতি, শিল্পী, সংস্কৃতি ও মিডিয়া ইন্ডাস্ট্রি ব্যপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। বছরে দুই হাজার কোটি টাকা বিনিয়োগ থেকে দেশ বঞ্চিত হচ্ছে।
গত ১ অক্টোবর থেকে ক্লিনফিড অনুষ্ঠান চালানোর উদ্যোগ কার্যকরের ফলে দেশীয় টেলিভিশন শিল্পের আর্থিক সংকট অনেকটা কমবে। তারা আরও বলেন, চ্যানেল বন্ধ করার সিদ্ধান্ত সরকারের নয়, এটা পরিবেশক বা ক্যাবল অপারেটরদের।
বিবৃতিতে সাংবাদিক নেতারা সম্প্রচার শিল্পের পাশে দাঁড়ানোয় তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদকে ধন্যবাদ জানান। পাশাপাশি সম্প্রচার সাংবাদিকদের জন্যে ওয়েজবোর্ড রোয়েদাদ ঘোষণার দাবি জানিয়ে বলেন, সম্প্রচার শিল্প বিকাশের স্বার্থেই সাংবাদিকদের ন্যায্য বেতন ও চাকরি সুরক্ষার জন্যে জোরালো পদক্ষেপ নিতে হবে।
বাংলাদেশ সময়: ০২১৮ ঘণ্টা, অক্টোবর ০৩, ২০২১
জিসিজি/এমএইচএম