ঢাকা, মঙ্গলবার, ১৩ মাঘ ১৪৩১, ২৮ জানুয়ারি ২০২৫, ২৭ রজব ১৪৪৬

জাতীয়

সাত দফা দাবি ইভ্যালির মার্চেন্ট-ভোক্তাদের

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৪৫২ ঘণ্টা, অক্টোবর ৩, ২০২১
সাত দফা দাবি ইভ্যালির মার্চেন্ট-ভোক্তাদের

ঢাকা: দেশের প্রথম সারির ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান ইভ্যালির মার্চেন্ট এবং ভোক্তারা সাত দফা দাবি জানিয়েছেন।

এগুলো হলো- ইভ্যালির সিইও মোহাম্মদ রাসেল এবং চেয়ারম্যান শামীমা নাসরিনের মুক্তি; রাসেলকে নজরদারির মাধ্যমে দিকনির্দেশনা দিয়ে ব্যবসায় করার সুযোগ দেওয়া; এসক্রো সিস্টেম চালু হওয়ার আগে অর্ডারকৃত পণ্য ডেলিভারি দিতে রাসেলকে সময় দেওয়া এবং বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অধীনে ইক্যাব, পেমেন্ট গেটওয়ে, মার্চেন্ট ও ভোক্তা প্রতিনিধিদের সমন্বয় কমিটি গঠন।

এছাড়া, করোনাকালীন বিভিন্ন খাতের মতো ই-কমার্স প্ল্যাটফর্মকেও প্রণোদনা প্রদান; ই-কমার্স প্ল্যাটফর্মগুলোর বাণিজ্য মন্ত্রলণালয় থেকে ব্যাংক গ্যারান্টিসহ লাইসেন্স নেওয়া বাধ্যতামূলক করা; ই-কমার্স বাংলাদেশের সবচেয়ে সম্ভাবনাময় খাত, যেখানে হাজার হাজার উদ্যোক্তা সৃষ্টি এবং লাখ লাখ কর্মসংস্থান হচ্ছে, তাই এই সেক্টরকে সরকারিভাবে সুরক্ষা দেওয়ার দাবিও জানানো হয়।

রোববার (৩ অক্টোবর) দুপুরে রাজধানীর ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে (ডিআরইইউ) ইভ্যালির মার্চেন্ট ও ভোক্তাদের যৌথ সংবাদ সম্মেলন থেকে এসব দাবি জানানো হয়। সংবাদ সম্মেলন সমন্বয় করেন ইভ্যালির মার্চেন্ট এবং ভোক্তা মো. নাসির উদ্দিন এবং সাকিব হাসান।

এ সময় লিখিত বক্তব্যে তারা বলেন, আমরা প্রায় ৭৪ লাখ গ্রাহক, ৩৫ হাজারের বেশি বিক্রেতা এবং ৫ হাজারের বেশি স্থায়ী-অস্থায়ী কর্মকর্তা-কর্মচারী ইভ্যালির সঙ্গে প্রত্যক্ষভাবে জড়িত। ব্যবসায়ের পরিধি বড় হলে কিছু অভিযোগ বা সমন্বয়হীনতা থাকতে পারে। আমরা মনে করি বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের নেতৃত্বে, স্বরাষ্ট্র, অর্থ ও আইসিটি মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ ব্যাংক, ই-ক্যাব, মার্চেন্ট, ভোক্তাসহ সবার প্রতিনিধি ও ইভ্যালির কর্মকর্তাদের সমন্বয়ে একটি কমিটি করে এই সমন্বয়হীনতা বা সঙ্কট থেকে উত্তরণ সম্ভব। এই সঙ্কট মোকাবেলা করতে ব্যর্থ হলে আমরা প্রায় ৭৫ লাখ পরিবার ঋণগ্রস্ত হয়ে পথে বসার উপক্রম হবো। আমাদের বিশ্বাস এই সঙ্কট সংশ্লিষ্ট সবার আলাপ আলোচনার মাধ্যমে নিরসন করা সম্ভব।

তারা বলেন, আমরা ৩৫ হাজারের বেশি উদ্যোক্তা ইভ্যালির সঙ্গে ব্যবসা করি, এর বেশির ভাগের হাতেখড়ি ইভ্যালির মাধ্যমে। বর্তমানে ইভ্যালির চেয়ারম্যান শামীমা নাসরিন ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক এবং সিইও মোহাম্মদ রাসেল কয়েকটি অভিযোগের ভিত্তিতে কারাগারে থাকায় আমাদের পথে বসার উপক্রম হয়েছে। আমাদের পুরাতন বকেয়া টাকা এবং ওয়্যার হাউসে ডেলিভারির জন্য প্রস্তুতকৃত পণ্য নষ্ট হওয়ার আশঙ্কায় ভুগছি। ভোক্তারা তাদের অর্ডার করা প্রয়োজনীয় পণ্য পাওয়া থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। অধিকাংশ উদ্যোক্তা নানাভাবে ঋণ এবং সরবরাহকারীদের থেকে ধারে পণ্য নিয়ে সরবরাহ করছে। ইভ্যালি যদি আগের মতো ব্যবসা করতে না পারে, উদ্যোক্তারা সর্বশান্ত এবং ঋণ সাপ্লায়ার ক্রেডিটের জন্য মামলার সম্মুখীন হবো।

বক্তারা বলেন, গত ২৪ জুন বাণিজ্য মন্ত্রণালয় ও তথ্য যোগাযোগ প্রযুক্তি মন্ত্রণালয় এবং ই-ক্যাবের দূরদর্শী সিদ্ধান্তে এসওপি সার্ভিস চালু করা হয়েছে, যা ই-কমার্স সেক্টরের জন্য মাইলফলক। এসওপি সার্ভিসের জন্য বর্তমানে কোনো কাস্টমার প্রতারিত হওয়ার সুযোগ নেই। পুরাতন ডেলিভারি না হওয়া পণ্যের জন্য রাসেল সময় চেয়েছেন, আমরা ভোক্তারা তাকে সময় দিয়ে সহযোগিতা করতে চাই। এখন ইভ্যালি নিজস্বভাবে কোনো ভর্তুকি দিচ্ছে না, মার্চেন্টের দেওয়া কমিশনই ভোক্তাদের জন্য ডিসকাউন্ট হিসেবে থাকে। যেহেতু হাজার হাজার ব্র্যান্ড প্রতিনিয়ত নতুন পণ্য বাজারে নিয়ে আসছে, তার মধ্যে প্রতি মাসে ৫/৬টা নতুন পণ্য যদি ব্র্যান্ডগুলো ইভ্যালিতে বিক্রয় প্রমোশন করে তাহলে প্রতিষ্ঠানটির লোকসান পূরণ হতে বেশি দিন লাগবে না। যেমন কিছুদিন আগে রিয়েলমি ৮ (৫জি) হ্যান্ডসেট শুধুমাত্র ইভ্যালিতে বিক্রয় প্রমোশন করা হয়। তাতে ৫ মিনিটে ৫০ হাজারের মতো অর্ডার নিশ্চিত হয়। এতে দেখা যায় ৫০ হাজার সেটে প্রতি পিস ১০০০ টাকা করে হলেও প্রায় পাঁচ কোটি টাকা মুনাফা হয়েছে। ইভ্যালির দায় প্রায় ৫০০ কোটি টাকা। এটা পূরণ হতে বেশি দিন লাগবে না।

সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, তিন বছর ধরে একটি ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান দেশে ব্যবসা করছে। বর্তমানে তাদের অসংখ্য সাবস্ক্রাইবার আছে। এমন একটি প্লাটফর্ম তৈরি হতে নতুন করে আরও অনেক সময় লাগবে। তার থেকে এই প্রতিষ্ঠানটিকে ঢেলে সাজানো কি উত্তম নয়? তাই আমরা প্রধানমন্ত্রীর কাছে আবেদন জানাবো- লাখো ভোক্তার স্বপ্ন পূরণ এবং হাজার হাজার নতুন উদ্যোক্তা সৃষ্টি হওয়ার মাধ্যম ইভ্যালি যেন কোনো ষড়যন্ত্রের শিকার না হয়।

বাংলাদেশ সময়: ১৪৫২ ঘণ্টা, অক্টোবর ০৩, ২০২১
এইচএমএস/এমএমজেড

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।