ঢাকা: দক্ষিণ এশিয়ার বৃহত্তম শপিংমল বসুন্ধরা সিটি শপিং কমপ্লেক্স ১৭ বছর পেরিয়ে ১৮ বছরে পা দিয়েছে। দীর্ঘ পথ চলার এই সময়ে শুধু আরামদায়ক কেনাকাটাই নয়, রাজধানীর অন্যতম দর্শনীয় স্থান হয়ে উঠেছে বসুন্ধরা সিটি শপিং কমপ্লেক্স।
সোমবার (৪ অক্টোবর) বসুন্ধরা সিটির ১৭তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর অনুষ্ঠানে কেক কেটে বর্ষপূর্তি উদযাপন করেন বসুন্ধরা সিটি শপিং কমপ্লেক্সের সর্বস্তরের কর্মকর্তা, কর্মচারী ও দোকানমালিকরা।
অনুষ্ঠানে দেশের শীর্ষ শিল্পগোষ্ঠী বসুন্ধরা গ্রুপের চেয়ারম্যান আহমেদ আকবর সোবহানের বাণী পড়ে শোনান বসুন্ধরা সিটি ডেভেলপমেন্ট লিমিটেডের (বিসিডিএল) হেড অব ডিভিশন সাদ তানভীর।
এ সময় আরো উপস্থিত ছিলেন বসুন্ধরা সিটি ডেভলপমেন্ট লিমিটেডের ইনচার্জ মেজর (অব.) মো. মহসীনুল করিম ও বসুন্ধরা সিটি শপিং কমপ্লেক্সের সভাপতি এম এ হান্নান আজাদ।
কেক কেটে বর্ষপূর্তি উদযাপন করেন বসুন্ধরা সিটি শপিং কমপ্লেক্সের সর্বস্তরের কর্মকর্তা, কর্মচারী ও দোকানমালিকরা
বসুন্ধরা গ্রুপের চেয়ারম্যান চেয়ারম্যান আহমেদ আকবর সোবহান তার শুভেচ্ছা বাণীতে বলেন, কালের পরিক্রমায় বসুন্ধরা সিটি শপিং কমপ্লেক্স দীর্ঘ ১৭টি বছর অতিক্রম করে আজকে ১৮-তে পদার্পণ করেছে। আজকের এই দিনে আমি মহান আল্লাহ তা’লার দরবারে অশেষ কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি। এই চলমান অগ্রযাত্রার অংশীদার হিসেবে আমি বসুন্ধরা সিটি শপিং কমপ্লেক্সের সব দোকানমালিক/প্রতিনিধি, কর্মচারী/কর্মকর্তা, বসুন্ধরা সিটিতে কর্মরত ও প্রাক্তন কর্মকর্তা-কর্মচারী, বসুন্ধরা পরিবারের কর্মকর্তা-কর্মচারী এবং শুভানুধ্যায়ীদের প্রতি আমার আন্তরিক ধন্যবাদ জ্ঞাপন করছি।
তিনি বলেন, বাংলাদেশে একটি বিশ্বমানের শপিংমল স্থাপনের স্বপ্ন বাস্তবায়নের লক্ষ্যে আমরা আমাদের অভিযান শুরু করেছিলাম। আপনাদের সবার নিষ্ঠা, নিরলস প্রচেষ্টা, সক্রিয় অংশগ্রহণ এবং সমগ্র দেশবাসীর সমর্থন ও পৃষ্ঠপোষকতায় এখানে আমরা একটি আদর্শ সুস্থ সমৃদ্ধ নিরাপদ বাণিজ্যিক পরিবেশের দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছি। তবে আমাদের এগিয়ে চলার এই পথ সবসময় মসৃণ ছিল না। জীবনের স্বাভাবিকতায় কখনো কখনো আমাদের নানান চড়াই-উৎরাই ও প্রতিকূলতা অতিক্রম করতে হয়েছে। তবে সবসময়ই আপনাদের পাশে পেয়ে আমরা কৃতজ্ঞ।
বসুন্ধরা গ্রুপের চেয়ারম্যান আরো বলেন, বিগত দিনগুলোর অভিজ্ঞতাসমূহ থেকে শিক্ষা গ্রহণ করে আমরা এখন আরও পরিণত। প্রত্যাশার বিপরীতে যে অপ্রাপ্তিগুলো ছিল, তা আমাদের প্রদান করেছে টেকসই উন্নয়ন অর্জনের দক্ষতা ও সামনের সারিতে অবস্থান সুদৃঢ় করার শক্তি। সামনের দিনগুলোতেও আমরা বাংলাদেশের ইতিবাচক দৃষ্টান্তসমূহ ছড়িয়ে দিতে চাই বিশ্বব্যাপী। আমরা চাই বাংলাদেশের গৌরব ছড়িয়ে পড়ুক সমগ্র পৃথিবীজুড়ে। এ ক্ষেত্রে আপনাদের সবার দায়িত্বশীল ভূমিকা ও সক্রিয় অংশগ্রহণ অপরিহার্য। সবার সম্মিলিত প্রচেষ্টায় আগামী দিনেও দেশ ও জাতির সমৃদ্ধির পথে আমরা কার্যকর ভূমিকা রাখবো।
আহমেদ আকবর সোবহান বলেন, আমি বসুন্ধরা সিটি শপিংমলের সর্বাঙ্গীন সাফল্য কামনা করছি। সেই সঙ্গে কামনা করি আপনাদের সবার সুস্বাস্থ্য, সুখী ও সমৃদ্ধ জীবন। মহান আল্লাহ রাব্বুল আলামিন আমাদের সবার ওপর রহমত ও বরকত দান করুন।
অনুষ্ঠানে বসুন্ধরা সিটি ডেভেলপমেন্ট লিমিটেডের ইনচার্জ মেজর (অব.) মো. মহসীনুল করিম বলেন, আমরা ১৮ বছরে পা দিতে যাচ্ছি। স্বপ্ন আমরা সবাই দেখি, সেটি বাস্তবায়নেরও যোগ্যতা দরকার। স্বপ্ন দেখেছিলেন মাননীয় চেয়ারম্যান প্রায় আজ থেকে ৩০ বছর আগে। তিনি স্বপ্ন দেখেছিলেন বাংলাদেশে একটি বিশ্বমানের বাণিজ্যিক ভবন নির্মাণের। শুরু হয়েছিল জায়গা নির্ধারণ, জমি কেনা, অনেক প্রক্রিয়া। শেষ পর্যন্ত ১৯৯৯ সালের ফেব্রুয়ারিতে শুরু এটির নির্মাণকাজ। ২০০৪ সালের মে মাসে নির্মাণকাজ শেষ হওয়ার পর ৫ অক্টোবর বসুন্ধরা সিটি বাণিজ্যিকভাবে উদ্বোধন হয়। নবীন কয়েকজন আর্কিটেক্ট এই ভবন নির্মাণ করেছেন। দেশি-বিদেশি ইঞ্জিনিয়ারদের সহায়তায় এটা নির্মাণ হয়েছে। এটাকে আমি তাজমহলের সঙ্গে তুলনা করতে চাই না। তাজমহল তৈরি করতে সম্রাট শাহজাহানের অর্থভাণ্ডার দেউলিয়া হয়ে গিয়েছিল। কিন্তু আমাদের সেরকম কিছু হয়নি। আমাদের চেয়ারম্যান দক্ষ ও চিন্তাশীল একজন মানুষ। তার সুদক্ষ পরিকল্পনায় বাংলাদেশের তাজমহল বসুন্ধরা সিটি শপিং কমপ্লেক্স নির্মিত হয়েছে।
বসুন্ধরা সিটি শপিং কমপ্লেক্সের দোকানমালিক সমিতির সভাপতি হান্নান আজাদ বলেন, এই শপিংমল সারা বিশ্বের একটি বিস্ময়। এমন কোনো পরিবার নেই যে, বসুন্ধরা সিটি শপিং কমপ্লেক্স চেনে না। এ জন্য চেয়ারম্যান মহোদয়ের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানাই। তিনি চিন্তা করেছিলেন এমন একটি মার্কেট হবে, যেখান থেকে দৈনন্দিন জীবনের সব চাহিদা পূরণ করা সম্ভব। এজন্য তিনি এটি নির্মাণ করেন। এই মার্কেট দিয়ে কয়েক লাখ লোকের কর্মসংস্থান হয়েছে।
বাংলাদেশ সময়: ১৫৩০ ঘণ্টা, অক্টোবর ০৪, ২০২১
এসএমএকে/এমজেএফ