ঢাকা: গৃহায়ন ও গণপূর্ত প্রতিমন্ত্রী শরীফ আহমেদ বলেছেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে কার্বনমুক্ত, টেকসই, নিরাপদ ও সাশ্রয়ী আবাসন এবং পরিকল্পিত নগরায়ন নিশ্চিত করতে সরকার নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে।
সোমবার (৪ অক্টোবর) রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে বিশ্ব বসতি দিবস উপলক্ষে গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয় আয়োজিত আলোচনা সভায় তিনি এ কথা বলেন।
প্রতিমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশে ভৌগোলিকভাবে একটি দুর্যোগপ্রবণ এলাকায় অবস্থিত, বৈশ্বিক জলবায়ু পরিবর্তনের এই ক্ষতিকর প্রভাবে ক্ষতিগ্রস্তদের তালিকায় বাংলাদেশের অবস্থান শীর্ষে রয়েছে। জলবায়ু পরিবর্তনের অভিঘাত মোকাবিলায় উন্নত বিশ্বের পাশাপাশি বাংলাদেশের মতো উন্নয়নশীল দেশেরও উন্নয়ন পরিকল্পনায় বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া প্রয়োজন।
শরীফ আহমেদ বলেন, অপরিকল্পিত নগরায়ন, শিল্পায়ন এবং জীবাশ্ম জ্বালানির মাত্রাতিরিক্ত ব্যবহারের ফলে বায়ুমণ্ডলে কার্বনের পরিমাণ দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। ফলে গ্রিন হাউস ইফেক্টের মাধ্যমে বৈশ্বিক উষ্ণতা আশঙ্কাজনকভাবে বেড়ে চলেছে। ফলে প্রাকৃতিক দুর্যোগের সংখ্যা ও তীব্রতা বৃদ্ধি পাচ্ছে।
প্রতিমন্ত্রী বলেন, পৃথিবীর স্থলভাগের মোট আয়তনের মাত্র ২ শতাংশ শহরাঞ্চল। অথচ এই শহরাঞ্চল থেকেই মোট কার্বন নিঃসরণের ৭০ ভাগ কার্বন নিঃসরণ হয়। শহরের সমন্বিত উন্নয়ন এবং পরিকল্পিত নগরায়নের মাধ্যমে কার্বন নিঃসরণ হ্রাস করতে পারলে পৃথিবীর মোট কার্বন নিঃসরণের হার অনেকটাই নিয়ন্ত্রণে রাখা সম্ভব হবে।
তিনি বলেন, ইউএন হ্যাবিট্যাটের তথ্যমতে, আধুনিক প্রযুক্তির সঠিক ব্যবহারের মাধ্যমে ভবনসমূহ থেকে নিঃসৃত কার্বনের ৫৮ শতাংশ পর্যন্ত হ্রাস করা সম্ভব। প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়নে অর্থাৎ ২০৪১ সালের মধ্যে একটি উন্নত সমৃদ্ধ বাংলাদেশ বিনির্মাণের লক্ষ্যে সরকার কাজ করে যাচ্ছে। এর অংশ হিসেবে গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয় সবার জন্য আবাসন নিশ্চিতের জন্য নানামুখী পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে।
প্রতিমন্ত্রী বলেন, সুষ্ঠু পরিকল্পনা ও গবেষণার মাধ্যমে জমির সর্বোত্তম ব্যবহার নিশ্চিত করে সবার জন্য আবাসনের ব্যবস্থা করতে সরকার সর্বদা সচেষ্ট রয়েছে। সকল প্রকার উন্নয়ন কর্মকাণ্ডে পরিবেশ সুরক্ষার বিষয়টি সর্বাগ্রে প্রাধান্য দেওয়া হচ্ছে। এজন্য আবাসিক স্থাপনা নির্মাণে উন্নত প্রযুক্তির ব্যবহার, পরিবেশবান্ধব নির্মাণ সামগ্রী, বিদ্যুৎ সাশ্রয়ী ব্যবস্থা, রেইন ওয়াটার হারভেস্টিং, নিজস্ব সুয়ারেজ ট্রিটমেন্ট প্লান্ট এবং পর্যাপ্ত সবুজায়নের ব্যবস্থা রাখা হচ্ছে। ভবন নির্মাণের ক্ষেত্রে ল্যান্ডস্কেপিং, সৌরবিদ্যুৎ ইত্যাদি প্রয়োগের মাধ্যমে গ্রীন বিল্ডিং টেকনোলজি নিশ্চিত করার লক্ষ্যে কাজ করছে সরকার।
গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. শহীদ উল্লা খন্দকারের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত আলোচনা সভায় বিশেষ অতিথি ছিলেন বাংলাদেশে ইউএনডিপির আবাসিক প্রতিনিধি সুদীপ্ত মুখার্জী।
অনুষ্ঠানের মূল প্রবন্ধ সম্মিলিতভাবে উপস্থাপন করেন নগর উন্নয়ন অধিদপ্তরের পরিচালক ড. খুরশিদ জাবিন হক, স্থাপত্য অধিদপ্তরের প্রধান স্থপতি মনজুরুর রহমান, হাউসিং অ্যান্ড বিল্ডিং রিসার্চ ইনস্টিটিউটের মহাপরিচালক আশরাফুল আলম এবং গণপূর্ত অধিদপ্তরের প্রধান প্রকৌশলী শামীম আখতার।
অনুষ্ঠান শেষে প্রতিমন্ত্রী বিশ্ব বসতি দিবস-২০২১ উপলক্ষে গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয় থেকে প্রকাশিত একটি বিশেষ স্মরণিকার মোড়ক উন্মোচন করেন।
বাংলাদেশ সময়: ১৬৪৩ ঘণ্টা, অক্টোবর ৪, ২০২১
জিসিজি/জেএইচটি