ঢাকা, শনিবার, ১১ মাঘ ১৪৩১, ২৫ জানুয়ারি ২০২৫, ২৪ রজব ১৪৪৬

জাতীয়

আজিজুল ও মিন্টুকে পাশাপাশি দাফন

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৪৩৯ ঘণ্টা, অক্টোবর ৫, ২০২১
আজিজুল ও মিন্টুকে পাশাপাশি দাফন আজিজুল ও মিন্টু

চুয়াডাঙ্গা: ফাঁসি কার্যকরের পর একসঙ্গে জানাজা শেষে মিন্টু ও আজিজকে নিজ গ্রামে পাশাপাশি দাফন করা হয়েছে।

মঙ্গলবার (৫ অক্টোবর) ভোরে জানাজার পর তাদেরকে গ্রামের কবরস্থানে দাফন করা হয়।

জানা গেছে, চুয়াডাঙ্গার আলমডাঙ্গা উপজেলার জোড়গাছা গ্রামের কমেলা খাতুন ও তার বান্ধবী ফিঙ্গে বেগমকে ২০০৩ সালের ২৭ সেপ্টেম্বর রায় লক্ষ্মীপুর গ্রামের মাঠে গলা কেটে হত্যা করা হয়। এ হত্যা মামলায় একই উপজেলার রায় লক্ষ্মীপুর গ্রামের আজিজ ওরফে আজিজুল (৫০) ও একই গ্রামের মিন্টু ওরফে কালুর (৫০) ফাঁসি কার্যকর হয় সোমবার রাতে। সব আনুষ্ঠানিকতা শেষে রাত ১২টার দিকে দু’ জনের মরদেহ তাদের স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করা হয়। রাত সাড়ে ১২টার দিকে আলাদা অ্যাম্বুলেন্সে তাদের মরদেহ নিয়ে রওনা দেয় স্বজনরা। রাত আড়াইটার দিকে তারা আলমডাঙ্গার নিজ গ্রাম রায় লক্ষ্মীপুরে পৌঁছান।

আজিজুল ও মিন্টুর দাফনের জন্য গ্রামের মসজিদে নির্ধারিত সময়ের ১০ মিনিট আগেই হয়ে যায় ফজরের জামায়াত। এরপর মসজিদের সামনের ফাঁকা চত্বরে দু’জনের জানাজা একসঙ্গে অনুষ্ঠিত হয়।

স্থানীয় খাসকরা ইউপি চেয়ারম্যান মোস্তাফিজুর রহমান রুন্নু বলেন, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর উপস্থিতিতে মরদেহ কবরে নামানো হয়। মুষলধারে বৃষ্টি হওয়ার কারণে দাফন কাজে কিছুটা বিলম্ব ও বিঘ্ন ঘটে।

যশোর কেন্দ্রীয় কারাগারের জেলার তুহিন কান্তি খান বলেন, চুয়াডাঙ্গার আলোচিত ধর্ষণ ও হত্যার ঘটনায় দণ্ডপ্রাপ্ত দু’ জনের ফাঁসি কার্যকরের জন্য কয়েক দিন আগে থেকেই আমরা প্রস্তুতি নিই। শনিবার যশোর কেন্দ্রীয় কারাগারে গিয়ে শেষবারের মতো স্বজনরা তাদের সঙ্গে দেখা করেন। তাদের দু’ জনের শেষ ইচ্ছা অনুয়ারী দু’ পরিবারের অর্ধ-শতাধিক মানুষের সঙ্গে দেখা করাই। এছাড়া তাদের ইচ্ছা অনুয়ায়ী শনিবার গরুর কলিজা ও ইলিশ মাছ খাওয়ানো হয়। রোববার  গ্রিল ও নান রুটি আর সোমবার মুরগির মাংস, দই আর মিষ্টি খাওয়ানো হয়।

এদিকে খুনিদের ফাঁসি কার্যকর করার জন্য কারাগারের নিরাপত্তায় সন্ধ্যার পর থেকেই গোটা এলাকায় পুলিশ ও র‍্যাবের নজরদারি বাড়ানো হয়। ১৩ জন অস্ত্রধারী কারারক্ষী কারাগারে দায়িত্বে ছিলেন। এছাড়া পুলিশ ও র‍্যাবের সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন কারাগারের প্রধান ফটকে।

কারা সূত্রে জানা গেছে, খুনিদের ফাঁসি কার্যকর করতে রাতে একে একে কারাগারে প্রবেশ করেন যশোরের জেলা প্রশাসক তমিজুল ইসলাম খান, পুলিশ সুপার প্রলয় কুমার জোয়াদ্দার, সিভিল সার্জন দিলীপ শেখ আবু শাহীন ও অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট কাজী সায়েমুজ্জামান।

রাতে দণ্ডপ্রাপ্ত আসামিদের গোসল করানোর পর তওবা পড়ান কারা মসজিদের ইমাম। রাতেই স্বজনদের সঙ্গে শেষ সাক্ষাতের পর তাদের খাবার খাওয়ানো হয়। এরপর তাদের রায় পড়ে শোনানো হয়। নিম্ন আদালতের রায়, আপিল এবং রাষ্ট্রপতির ক্ষমার আবেদন না মঞ্জুর হওয়ার বিষয়টি তাদের জানানো হয়। পরে তাদের জমটুপি পরিয়ে ফাঁসির মঞ্চে নেওয়া হয়।

সোমবার রাত পৌনে ১১টায় প্রথমে মিন্টু ওরফে কালু এবং এর পাঁচ মিনিট পর একই গ্রামের আজিজ ওরফে আজিজুলের ফাঁসি কার্যকর করা হয়।

রাতেই তাদের মরদেহ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। এরপর নিজ গ্রামে নিয়ে তাদের পাশাপাশি সমাহিত করা হয়।

বাংলাদেশ সময়: ১৪৩৯ ঘণ্টা, অক্টোবর ০৫, ২০২১
জেডএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।