নীলফামারী: মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক বলেছেন, স্বাধীন বাংলাদেশে স্বাধীনতাবিরোধীদের নামে কোনো প্রতিষ্ঠান থাকা জাতির জন্য কলঙ্কজনক। স্বাধীনতাবিরোধীদের নামে কোনো প্রতিষ্ঠানের নাম থাকতে পারে না।
মঙ্গলবার (৫ অক্টোবর) নীলফামারী থেকে সদর ও সৈয়দপুর উপজেলার নবনির্মিত মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্স উদ্বোধন শেষে এক মুক্তিযোদ্ধা সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি একথা বলেন।
মন্ত্রী বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বীর মুক্তিযোদ্ধাদের যথাযথ মর্যাদা এবং সুযোগ-সুবিধা বৃদ্ধির জন্য নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছেন। অসচ্ছল বীর মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য ৩০ হাজার বীরনিবাস নির্মাণ কাজ চলমান রয়েছে। বীর মুক্তিযোদ্ধাদের বিনামূল্যে চিকিৎসার ব্যবস্থা করা হয়েছে। এজন্য ইতোমধ্যে বিভিন্ন বিশেষায়িত হাসপাতাল এবং জেলা-উপজেলা স্বাস্থ্য কেন্দ্রে অর্থ বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। এছাড়া গত ৭ বছরে মুক্তিযোদ্ধাদের সম্মানী ভাতা ৩ হাজার টাকা থেকে ২০ হাজার টাকায় উন্নীত করা হয়েছে।
তিনি বলেন, আপনারা মুক্তিযোদ্ধা। পাকিস্তানীদের সঙ্গে মুখোমুখি যুদ্ধ হয়েছে এমন সব জায়গার তালিকা দেন সেখানে স্মৃতিসৌধ নির্মাণ করা হবে।
তিনি আরও বলেন, বর্তমান বাংলাদেশের উন্নয়নের সকল ভিত বঙ্গবন্ধু গড়ে গেছেন। আর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বঙ্গবন্ধুর পরিকল্পনাগুলো বাস্তবায়ন করে দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন।
মন্ত্রী এ সময় বর্তমান সরকারের বিভিন্ন উন্নয়ন কর্মকাণ্ড তুলে ধরেন এবং নতুন প্রজন্মকে মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় উদ্বুদ্ধ হয়ে বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলা গড়তে নিজেদের যোগ্য করে গড়ে তুলতে আহ্বান জানান তিনি।
মন্ত্রী বলেন, বঙ্গবন্ধুর হত্যার পরে যারা রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় এসেছিল তারা সেদিন বাংলাদেশকে মিনি পাকিস্তান বানানোর চেষ্টা করেছিল। প্রত্যেকটি নাগরিকের ভাত, কাপড়, চিকিৎসা, বাসস্থান, শিক্ষা আমরা কিছুই দিতে পারি নাই। দেশ তখন উল্টো দিকে হাঁটছিল। আর এখন নীলফামারী তথা পুরো দেশে রাস্তা-ঘাট, পুল-কালভার্ট হয়েছে, সবার মাথার ওপরে ছাদ হয়েছে। এই জেলায় উত্তরা ইপিজেড, নাসিং ইনস্টিটিউট, বেকার যুবকদের ট্রেনিং সেন্টার, যুব উন্নয়ন কেন্দ্র, মেডিক্যাল কলেজ, ২৫০ শয্যা হাসপাতাল ও আন্তর্জাতিক শেখ কামাল স্টেডিয়াম হয়েছে।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে জেলা প্রশাসক হাফিজুর রহমান চৌধুরীর সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন- সাবেক সংস্কৃতিমন্ত্রী ও নীলফামারী-২ আসনের সংসদ আসাদুজ্জামান নূর, জাতীয় সংসদের সংরক্ষিত আসনের এমপি রাবেয়া আলীম, জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা জয়নাল আবেদীন, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার এএসএম মোক্তারুজ্জামান, মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডের সাবেক কমান্ডার বীর মুক্তিযোদ্ধা সহিদুল ইসলাম, সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জেসমিন নাহার, মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সাবেক জেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ড কাউন্সিলের কান্তি ভূষণ কুণ্ডু, সদর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান শাহিদ মাহমুদ, সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আবুজার রহমান প্রমুখ।
এছাড়া ভার্চ্যুয়ালি সৈয়দপুর উপজেলার বীর মুক্তিযোদ্ধা নেতারা উপস্থিত ছিলেন।
পরে মন্ত্রী দিনাজপুর জেলার খানসামা উপজেলা থেকে খানসামা ও নবাবগঞ্জ উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্স ভবনের উদ্বোধন করেন। মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের জেলা মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্স নির্মাণ প্রকল্পের আওতায় প্রতিটি প্রায় ২ কোটি ২০ লাখ টাকা ব্যয়ে এসব কমপ্লেক্স নির্মাণ করা হয়।
বাংলাদেশ সময়: ২১০৫ ঘণ্টা, অক্টোবর ০৫, ২০২১
আরএ