ঢাকা, শনিবার, ১০ মাঘ ১৪৩১, ২৫ জানুয়ারি ২০২৫, ২৪ রজব ১৪৪৬

জাতীয়

মহালয়ায় শুরু দেবীপক্ষের

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৯৫৮ ঘণ্টা, অক্টোবর ৬, ২০২১
মহালয়ায় শুরু দেবীপক্ষের

নারায়ণগঞ্জ: বাঙালী হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব শারদীয় দুর্গাপূজার পুণ্যলগ্ন শুভ মহালয়া। এদিন থেকেই শুরু হয় দেবীপক্ষের।

এ উপলক্ষে বুধবার (৬ অক্টোবর) দিনের শুরুতে হিন্দু ধর্মাবলম্বীরা শ্রী শ্রী চন্ডীপাঠের মধ্য দিয়ে দেবী দুর্গার মর্ত্যলোকে আগমনের আমন্ত্রণ জানিয়েছেন। শারদীয় দুর্গাপূজার একটি গুরুত্বপূর্ণ অনুষঙ্গ হলো এই মহালয়া।

এবার দেবী দুর্গা ঘোটকে (ঘোড়ায়) মর্ত্যলোকে আসবেন এবং দোলায় (নৌকা) চড়ে কৈলাশ পর্বতে স্বামীগৃহে ফিরে যাবেন। প্রতিমা শিল্পীরা এখন ব্যস্ত প্রতিমার গায়ে তুলির শেষ আচঁড় এঁকে দিতে।

আগামী ১১ অক্টোবর ষষ্ঠীতে দেবী দুর্গার বোধন, আমন্ত্রণ ও অধিবাসের মধ্যে দিয়ে শুরু হবে পাঁচদিনের শারদীয় দুর্গাপূজার আনুষ্ঠানিকতা। ১২ অক্টোবর সপ্তমী, ১৩ অক্টোবর মহাষ্টমী ও কুমারী পূজা, ১৪ অক্টোবর মহানবমী এবং ১৫ অক্টোবর বিজয় দশমীতে প্রতিমা বিসর্জন ও বিজয়া শোভাযাত্রার মধ্যে দিয়ে শেষ হবে এই বর্ণিল উৎসব।

এদিকে নারায়ণগঞ্জে এবার মোট ২১৫ টি পূজামণ্ডপে মহালয়ার মাধ্যমে শুরু হয়েছে দেবীপক্ষের। যা গতবারের তুলনায় ১০টি বেশি। এ ছাড়াও অনেকে করোনার কারণে ব্যক্তিগতভাবে নিজ বাড়িতে আয়োজন করেছেন শারদীয় দুর্গাপূজা উদযাপনের।

বুধবার সকালে শহরের বেশ কয়েকটি পূজা মণ্ডপ ঘুরে পূজার ব্যাপক প্রস্তুতি দেখা গেছে। দেবীকে স্বাগত জানাতে সবখানেই এখন সাজ-সাজ আবহ। মণ্ডপে মণ্ডপে মাটি আর খড়ের গন্ধ মিলেমিশে একাকার। নিরাভরণ দুর্গা প্রতিমার দিকে দৃষ্টি ফেললে মনে হচ্ছে শিল্পীর হাতের যাদুতে মহালয়ার আগেই প্রাণ পেয়েছে দেবী দুর্গা।

নারায়ণগঞ্জের শহরের টানবাজার, সাহাপাড়া, মিনাবাজার, ডালপট্টি, নিতাইগঞ্জ, আমলাপাড়া, গলাচিপা, উকিলপাড়া, চাষাঢ়া রামকৃষ্ণ মিশন আশ্রম, নন্দীপাড়া, পালপাড়া, নতুন পালপাড়া, দেওভোগ রাজা লক্ষ্মী নারায়ণ জিউর আখড়া, দেওভোগ দুর্গা মন্দিরসহ শহরের বিভিন্ন এল ছোট বড় আকারের পূজা হয়। এসব পূজা দেখতে ষষ্ঠী থেকে দশমীর ভোর পর্যন্ত ভক্তদর্শনার্থীদের ভীড় লেগেই থাকে।

শিল্পী সুমন পাল বলেন, প্রতিমার মাটির কাজ শেষ। এখন সাদা রঙ করা হচ্ছে। পরবর্তীতে বিভিন্ন রঙে মায়ের প্রতিমা সাজিয়ে তোলা হবে। এখনও আরও ১০ থেকে ১২ দিন বাকি থাকায় ধীরে স্বস্তিতেই কাজ চলছে। তিনিসহ ৬ জন মিলে প্রতিদিন সকাল ৮টা থেকে রাত ১১টা পর্যন্ত কাজ করছেন। মহালয়ার পর থেকেই গভীর রাত পর্যন্ত কাজ চলবে। আশা করছেন পঞ্চমীতেই প্রতিমাগুলো মণ্ডপে পৌঁছে দেওয়া হবে।

মনণ্ডর সাজসজ্জার কমার্শিয়াল আর্টিষ্ট টিংকু কুমার দে জানান, তিনি এবার দুটি পূজা মণ্ডপের কাজ করছেন। একটি প্রজন্ম প্রত্যাশা ও অন্যটি ডিআইটি পূজা মণ্ডপ। ধর্মীয় ভাবগাম্ভীর্যকে ঠিক রেখে সনাতন ধর্মীয় সংস্কৃতির আধলেই মণ্ডপগুলো সাজানো হচ্ছে। ইতোমধ্যে মণ্ডপের অনেক কাজ শেষ। বিশেষ করে ককশিটের কাজ শেষ। এখন ফ্রেমসহ অন্যান্য আনুসাঙ্গিক কাজ চলমান রয়েছে। কয়েকদিন পর থেকে রঙের কাজ শুরু হবে। সাধ্যের মধ্যে সেরা কাজটাই দিতে চেষ্টা করছেন। পঞ্চমীর মধ্যেই এ কাজ শেষ হয়ে যাবে।

বলদেব জিউর আখড়া শিব মন্দিরের সভাপতি জয় কে রায় চৌধুরী বাপ্পী বলেন, পূজার প্রস্তুতি অনেক ভালো। করোনায় লকডাউনের কারণে অনেকেই আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত। ব্যবসা-বাণিজ্য ভালো হয়নি। অনেকের হাতে টাকা নেই। এজন্য বড় কোনো বাজেট নেই। তবে পূজার আয়োজন ঠিকই আছে। প্রসাদের আয়োজন করা হয়েছে। দশমীতে সিধুঁর দানসহ প্রতিদিন পুষ্পাঞ্জলী দেওয়া এসব কিছুই থাকবে।

বাংলাদেশ সময়: ০৯৫২৮ ঘণ্টা, অক্টোবর ০৬, ২০২১
এমএমজেড

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।