মাগুরা: মাগুরায় প্রতিবেশীর বিরুদ্ধে বাড়ি দখলের অপচেষ্টার অভিযোগ করেছেন মায়া রানী মণ্ডল নামে এক বিধবা।
বুধবার (০৬ অক্টোবর) বিকেলে শ্রীপুর উপজেলার শ্রীকোল ইউনিয়নের চরবড়রিয়া গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।
মায়া রানী মণ্ডল জানান, বছর দুয়েক আগে স্বামী মারা যাওয়ার পর এক মেয়ে, আর দুই ছেলেকে নিয়ে কোনমতে সংসার চালাচ্ছিলেন। কিন্তু প্রতিবেশী রবে মণ্ডলের লোলুপ দৃষ্টি পড়ে তাদের বসত ভিটার ওপর।
এক হাত, তো কাল দু’হাত- এভাবেই আস্তে আস্তে তাদের বাড়ির জায়গা দখলের চেষ্টা করতে থাকেন রবে মণ্ডল। এক পর্যায়ে ঘোষণা দেন বসত বাড়ির অর্ধেক জায়গা তার। সে মোতাবেক বুধবার বাঁশ দিয়ে ঘিরে প্রায় অর্ধেক জায়গা জোরপূর্বক দখল করে নেন। শুধু তাই নয়, তাদের বাড়িতে ঢোকার রাস্তা পর্যন্ত ঘিরে দিয়েছেন রবে মণ্ডল। এতে বাঁধা দিলে মায়া রানী মণ্ডল ও তার মেয়ে শেফালীকে পিটিয়ে ও কুপিয়ে আহত করেছেন রবে মণ্ডলের চার ছেলে। আহত অবস্থায় বুধবার রাতে তাদের মাগুরা ২৫০ শয্যা হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মায়া রানী মণ্ডল বুধবার রাত সাড়ে ১০টার দিকে বলেন, বছর দুয়েক হয়েছে তার স্বামী রতন মণ্ডল মারা গেছেন। এর প্রায় এক বছর পর রবে মণ্ডল ছোনগাছা গ্রাম থেকে এসে তাদের বাড়ির পাশের জমি কিনে সেখানে বাড়ি করে বসবাস শুরু করেন। এরপর থেকেই রবে মণ্ডল তাদের বাড়ির জমি জোরপূর্বক অল্প অল্প করে দখল করতে থাকেন। কয়েক দিন আগে সে পূজা করার তুলসি গাছ তুলে ফেলে দেয়। এরপর বুধবার বিকেলে তার গরু বাঁধার জায়গাসহ বাড়ির প্রায় অর্ধেক জমি চার ছেলেকে নিয়ে রবে মণ্ডল জোর করে ঘিরে দখল করেছে। এমনকি মায়া রানীর বাড়ি ঢোকার রাস্তাটি ঘিরে নিয়েছে।
তিনি আরও বলেন, এ সময় মেয়ে শেফালী মণ্ডল কাজ থেকে বাড়িতে ফিরে রবে মণ্ডলের কাছে জমি ঘেরা দেওয়ার কারণ জানতে চা। তখন রবে মণ্ডলের চার ছেলে রেজাউল মণ্ডল, শাহিনুর মণ্ডল, জনি মণ্ডল ও আজিনুর মণ্ডল শেফালীকে লাঠি দিয়ে মারধর করতে থাকে। এ সময় ঠেকাতে গেলে তারা দা দিয়ে মায়া ও আমাকে কোপ দেয়। হাত দিয়ে ঠেকাতে গেলে আমার হাতের তালুতে কোপ লাগে।
মায়া রানী বলেন, এরপর যাতে আমরা থানায় না যেতে পারি তার জন্য বাড়িতে লোক বসিয়ে রাখে। অনেক সময় পরে আমরা শ্রীপুর থানায় যাই। তখন পুলিশ বলে আগে চিকিৎসা নেও, পরে অভিযোগ দিও।
মেয়ে শেফালী মন্ডল বলেন, রবে মন্ডল আর তার ছেলেরা খুব অত্যাচারী। ছোনগাছা গ্রাম থেকে তারা খারাপ কাজ করে পরে এখানে এসে বাড়ি করে। তাদের ভয়ে কেউ কোনো কথা বলতে পারে না। কেউ কিছু বললেই তারা তাকে মারধর করে।
মাগুরা ২৫০ শয্যা হাসপাতালের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক ডা. অমর প্রসাদ বলেন, মায়া রানী মণ্ডলের হাতের তালুতে দেশীয় অস্ত্রের কোপ লাগায় তিনটি শেলাই লেগেছে। আর তার মেয়ে শেফালীর শরীরে মারধরের চিহ্ন রয়েছে।
শ্রীপুর থানার ভা্রপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সুকদেব রায় বলেন, আহত মায়া রানী থানায় এসেছিলেন। লিখিত অভিযোগ দিতে বলেছি, কিন্তু পরে তারা আর আসেনি।
বাংলাদেশ সময়: ০৩০৮ ঘণ্টা. অক্টোবর ০৭, ২০২১
এমএমজেড