ঢাকা, শুক্রবার, ১০ মাঘ ১৪৩১, ২৪ জানুয়ারি ২০২৫, ২৩ রজব ১৪৪৬

জাতীয়

নিজের বাল্যবিয়ে ঠেকিয়ে প্রশংসায় ভাসছে মোনালিসা

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৮১৯ ঘণ্টা, অক্টোবর ৭, ২০২১
নিজের বাল্যবিয়ে ঠেকিয়ে প্রশংসায় ভাসছে মোনালিসা

কুড়িগ্রাম: কুড়িগ্রামের ফুলবাড়ী উপজেলায় করোনাকালীন সময়ে নিজের বাল্যবিয়ে নিজেই ঠেকিয়ে দৃষ্টান্ত স্থাপন করে প্রশংসায় ভাসছে প্রত্যন্ত গ্রামের স্কুল শিক্ষার্থী মোনালিসা আক্তার।

সাহসিকতার সঙ্গে নিজের বাল্যবিয়ে ঠেকানোয় বিশেষ সংবর্ধনা দিয়েছে প্রশাসন।

মেয়েটি ফুলবাড়ী উপজেলার বড়লই উচ্চ বিদ্যালয়ের ২০২১ সালের এসএসসি পরীক্ষার্থী।

বৃহস্পতিবার (৭ অক্টোবর) দুপুর ১২টার দিকে উপজেলার ফুলবাড়ী উচ্চ বালিকা বিদ্যালয়ের হলরুমে উপজেলা প্রশাসন আয়োজিত অনুষ্ঠানে ফুলেল শুভেচ্ছায় সংবর্ধনা জানিয়ে মোনালিসার হাতে ক্রেস্ট ও সম্মাননা স্মারক তুলে দেওয়া হয়।
 
সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে ফুলবাড়ী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সুমন দাশের সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান গোলাম রব্বানী সরকার।

প্রধান অতিথি ফুলবাড়ী উপজেলা চেয়ারম্যান তার বক্তব্যে নিজের ব্যক্তিগত ফান্ড থেকে প্রতিমাসে মোনালিসার পড়াশুনার খরচ বাবদ ১ হাজার টাকা দেওয়ার ঘোষণা দেন।

এ সময় অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি আতাউর রহমান শেখ, মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা সোহেলী পারভীন, মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা আব্দুল হাই, ফুলবাড়ী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রাজীব কুমার রায়, সাবেক মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার মজিবর রহমান, জছি মিঞা মডেল সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আবেদ আলী খন্দকার, বড়লই উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আব্দুস সোবহানী আঙ্গুর, ভাঙ্গামোড় দাখিল মাদ্রাসার সুপার ইসমাইল হোসেন প্রমুখ।

মোনালিসা আক্তার জানায়, চলতি বছরের ২২ সেপ্টেম্বর স্কুল থেকে বাড়িতে গিয়ে মোনালিসা দেখতে পায় তার বাড়িতে দুইজন অতিথি এসেছে। সেদিনও সে বুঝতে পারেনি তাকে বিয়ের জন্য পাত্রপক্ষের লোক দেখতে এসেছে। পরে সে বুঝতে পারে, বাবা-মা গোপনে তার বিয়ে চুক্তি করে ফেলেছেন।  

বিষয়টি নিয়ে বাবা-মা তাকে বলেন দেখ আমরা গরিব। ভালো পাত্র পাওয়া গেছে তুমি বিয়েতে রাজি হও। যদি আমাদের মৃত্যু হয় তাহলে তোকেকে দেখবে কে?। তখন সে বাবা-মাকে জানিয়ে দেয় আমি বিয়ে করবো না। আমার বিয়ের বয়স হয়নি।  আমি পড়াশুনা করে নিজে প্রতিষ্ঠিত না হওয়া পর্যন্ত বিয়ে করবো না।

পরে সে বাল্যবিয়ে থেকে কীভাবে রক্ষা পাওয়া যায়-এনিয়ে তার বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের সঙ্গে পরামর্শ করে বাবা-মাকে বাল্যবিয়ের কু-ফল বুঝিয়ে পরবর্তীতে বিয়ে ভেঙে যায়। পুরো বিষয়টি উপজেলা প্রশাসনের নজরে এলে ইউএনও সুমন দাস ও উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মোনালিসাকে সংবর্ধনা দেন।

বাংলাদেশ সময়: ১৬১৪ ঘণ্টা, অক্টোবর ০৭, ২০২১
এফইএস/এএটি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।