মাগুরা: মাগুরার শ্রীপুর উপজেলার ৩ নম্বর শ্রীকোল ইউনিয়নের চর-বড়বিলা গ্রামের বিধবা মায়া রানী মন্ডলের বসতবাড়ির জমি জোরপূর্বক দখল ও মেয়েসহ তাকে মারধরের ঘটনায় মামলা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (৭ অক্টোবর) রাতে শ্রীপুর থানায় ৭ জনকে আসামি করে মামলাটি দায়ের করেন মায়া রানীর মেয়ে শেফালী মন্ডল।
মামলার আসামিরা হলেন- মায়া রানী মন্ডলের প্রতিবেশী মৃত হানেফ মন্ডলের ছেলে রবি মন্ডল (৫৫), রবি মন্ডলের চার ছেলে রেজাউল মন্ডল (৩৮), শাহিনুর মন্ডল (৩৫), আজিনুর মন্ডল (২৮), জনি মন্ডল (২৫) এবং রেজাউল মন্ডলের ছেলে হাসিব মন্ডল (১৯) ও শাহিনুর মন্ডলের ছেলে তাহসিন মন্ডল (১৯)।
উল্লেখ্য, গত বুধবার (৬ অক্টোবর) বিকেলে বিধবা মায়া রানীর প্রতিবেশী রবি মন্ডল ও তার ছেলেসহ অন্য আসামিরা জোর করে মায়া রানীর বসতবাড়ির জমি দখল করে। এতে বাঁধা দিতে গেলে আসামিরা মায়া রানীর মেয়ে শেফালী মন্ডলকে মারধর করে। এ সময় মেয়েকে বাঁচাতে মা মায়া রানী এগিয়ে এলে আসামিরা তাকে দা দিয়ে কোপ দেয়। বুধবার রাতে তাদের দু’জনকে মাগুরা ২৫০ শয্যা হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
আহত মায়া রানী বলেন, বছর দুয়েক হলো আমার স্বামী রতন মন্ডল মারা গেছেন। এর প্রায় এক বছর পরে আসামি রবি মন্ডল ছোন গাছা গ্রাম থেকে এসে আমাগের (আমাদের) বাড়ির পাশের জমি কিনে সেনে (সেখানে) বাড়ি করে বসবাস শুরু করে। এরপর থেকেই রবি মন্ডল আমাগের বাড়ির জমি জোর করে অল্প অল্প করে দখল করতি থায়ে (থাকেন)। কয়েক দিন আগে সে আমার পূজো করার তুলসি গাছ তুলে ফেলে দেয়। এরপর বুধবার বিকেলে চার ছওয়ালের (ছেলেকে) সাথে নিয়ে রবি মন্ডল আমার গরু বান্দার (বাঁধার) জায়গাসহ বাড়ির প্রায় অর্ধেকটা জমি জোর করে ঘিরে দখল করে নেয়। তারা আমার বাড়ি ঢুকার (ঢোকার) রাস্তাডাও ঘিরে নেয়। এ সময় আমার মায়ে (মেয়ে) শিফালী কাজ থেকে বাড়িতে ফিরে কেন আমাগের জমি তারা ঘিরে নিলো তা জানতি (জানতে) চালি (চাইলে) রবে মন্ডলের চার ছওয়াল (ছেলে) রেজাউল মন্ডল, শাহিনুর মন্ডল, জনি মন্ডল ও আজিনুর মন্ডল আমার মায়ে (মেয়ে) শেফালীকে লাঠি দিয়ে মারধর করতি থায়ে (থাকে)। এ সুমায় (সময়) আমি ঠেয়াতি (ঠেকাতে) গেলি (গেলে) তারা ছ্যান দা দিয়ে আমার কোপ দেয়। হাত দিয়ে ঠেয়াতি (ঠেকাতে) গেলি (গেলে) আমার হাতের তালুতে কোপটি নাগে (লাগে)।
মায়া রানীর মেয়ে শেফালী বলেন, রবি মন্ডল আর তার ছেলেরা খুব অত্যাচারী। ওপার ছোনগাছা গ্রাম থেকে তারা খারাপ কাজ করে পরে এখানে এসে বাড়ি করে। তাদের ভয়ে কেউ কোনো কথা বলতে পারেনা। কেউ কিছু বললেই তারা তাকে মারধর করে।
তবে এ বিষয়ে অভিযুক্ত রবি মন্ডল ও তার ছেলেদের সঙ্গে কথা বলা সম্ভব হয়নি।
মাগুরা ২৫০ শয্যা হাসপাতালের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক ডা. অমর প্রসাদ বলেন, চিকিৎসাধীন মায়া রানীর হাতের তালুতে তিনটি সেলাই লেগেছে।
এ বিষয়ে শ্রীপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সুকদেব রায় বলেন, লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। ৭ জনকে আসামি করে মামলা করা হয়েছে। আসামিদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যাবস্থা নেওয়া হবে।
বাংলাদেশ সময়: ১৭৫১ ঘণ্টা, অক্টোবর ০৮, ২০২১
কেএআর