ঢাকা, শুক্রবার, ১০ মাঘ ১৪৩১, ২৪ জানুয়ারি ২০২৫, ২৩ রজব ১৪৪৬

জাতীয়

ফের স্বাভাবিক বাংলাবাজার-শিমুলিয়া নৌরুট

ইমতিয়াজ আহমেদ, ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৯৫২ ঘণ্টা, অক্টোবর ৯, ২০২১
ফের স্বাভাবিক বাংলাবাজার-শিমুলিয়া নৌরুট বাংলাবাজার-শিমুলিয়া নৌরুটে চলাচল করছে সব ধরনের নৌযান

মাদারীপুর: দীর্ঘদিন অচলাবস্থার পর বাংলাবাজার-শিমুলিয়া নৌরুটে অনেকটাই স্বাভাবিক হয়ে এসেছে সব ধরনের নৌযান চলাচল। নৌরুটে টানা ৪৭ দিন বন্ধ ছিল ফেরি এবং ১৫৬ দিন বন্ধ ছিল স্পিডবোট।

তবে সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত শুধু লঞ্চ চলেছে।

মঙ্গলবার (৫ অক্টোবর) চলাচল শুরু করে ফেরি। এরপর বৃহস্পতিবার (৭ অক্টোবর) বিকেল থেকে চালু হয় স্পিডবোট। যাত্রী নিরাপত্তার বিষয়টি সামনে রেখে সকাল ৬টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত চলবে সব নৌযান। তবে রাতে বন্ধ থাকবে।

জানা গেছে, গত ৩ মে স্পিডবোট দুর্ঘটনায় ২৬ যাত্রীর প্রাণহানির পরই নৌরুটে স্পিডবোট চলাচল নিয়ে প্রশ্ন ওঠে। বেপরোয়া গতি, চালকদের উচ্ছৃঙ্খল আচরণ, নিয়মনীতির তোয়াক্কা না করে স্পিডবোট চালানোর বিষয়টি প্রকাশ্যে ওঠে আসে। অনুমোদন না থাকায় প্রশাসন সব স্পিডবোট চলাচল বন্ধ রাখে। এরপর স্পিডবোট নিবন্ধন প্রক্রিয়া শুরু হয়। একই সঙ্গে চালকদের প্রশিক্ষণ, ডোপটেস্ট ও পরীক্ষা নিয়ে সনদ দেয় সংশ্লিষ্ট বিভাগ।

দীর্ঘ ৫ মাসের প্রক্রিয়া শেষে নৌরুটে ১০১টি স্পিডবোটের নিবন্ধন শেষ হয়। এগুলোর মধ্যে শিমুলিয়া ঘাটের স্পিডবোট আছে ৫৩টি, বাংলাবাজার ঘাটের ২৯টি, মাঝিকান্দি ঘাটের ১৯টি। প্রতিটি স্পিডবোট ১২ জনের বেশি যাত্রী বহন করতে পারবে না।  

এর আগে পদ্মায় স্রোতের তীব্রতায় টানা ৪৭ দিন বন্ধ ছিল ফেরি চলাচল। স্রোত কমে আসায় গত মঙ্গলবার ভোর থেকে সীমিত পরিসরে চালু হয় ফেরি। প্রতিদিন সন্ধ্যা পর্যন্ত ৫টি ছোট ফেরি নৌরুটে হালকা যানবাহন পারাপার করবে বলে জানিয়েছে ঘাট কর্তৃপক্ষ।

এদিকে সব নৌযান চলাচল স্বাভাবিক হওয়ায় নৌরুটে যাত্রীদের ভোগান্তি কমবে বলে আশা করছেন দক্ষিণাঞ্চলের যাত্রীরা। পদ্মা পার হতে লঞ্চ ও ফেরির পাশাপাশি স্পিডবোট চলাচল করায় নির্দিষ্ট নৌযানে যাত্রীচাপও কমবে। ফলে স্বাচ্ছন্দ্যে পদ্মা পার হতে পারবেন যাত্রীরা।

যাত্রীদের সঙ্গে আলাপ করে জানা গেছে, মূলত ফেরি বন্ধ থাকায় সবচেয়ে বেশি ভোগান্তি পোহাতে হয়েছে। জরুরি দরকারে বা রোগী নিয়ে ঢাকা যাওয়া ছিল কষ্টকর বিষয়। এই রুট ব্যবহারকারীদের দীর্ঘপথ ঘুরে পাটুরিয়া-দৌলতদিয়া ব্যবহার করতে হয়েছে। ফেরি চালু হওয়ায় এ দুর্ভোগের নিরসন হয়েছে। এরপর স্পিডবোট চালুর মধ্য দিয়ে যাত্রীদের দ্রুত পদ্মা পার হতে আর বাধা থাকছে না। তবে স্পিডবোট চালানোর ক্ষেত্রে প্রশাসনের কঠোর তদারকি দাবি করেন তারা। যাতে করে বোট চালকেরা আগের রূপে ফিরে না যায়।

বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ-পরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআইডব্লিউটিএ) শিমুলিয়া ঘাট সূত্রে জানা গেছে, নিবন্ধনকৃত বোট এবং সনদপ্রাপ্ত চালকরাই নৌরুটে স্পিডবোট চালাবে। এছাড়া ৪৪টি বোটকে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র না থাকায় নিবন্ধন দেওয়া হয়নি। পরীক্ষায় অকৃতকার্য বেশ কয়েকজন চালকও সনদ পাননি।

শিমুলিয়া নদী বন্দরের নৌ নিরাপত্তা ও ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা বিভাগের সহকারী পরিচালক এবং বন্দর ও পরিবহন কর্মকর্তা (অতিরিক্ত দায়িত্ব মাওয়া) মো. শাহাদাত হোসেন বাংলানিউজকে জানান, দীর্ঘ প্রক্রিয়া শেষে নৌরুটে স্পিডবোট চলাচল শুরু করেছে। নিবন্ধনপ্রাপ্ত এবং সনদধারী চালকরা স্পিডবোট চালাবেন। যাত্রীদের লাইফ জ্যাকেট নিশ্চিত করাসহ সরকারি নির্দেশনা মেনে চালকরা বোট চালাবেন।

বিআইডব্লিউটিএ'র বাংলাবাজার লঞ্চ ঘাটের ট্রাফিক ইন্সপেক্টর আক্তার হোসেন বাংলানিউজকে জানান, নৌরুটে লঞ্চ চলাচল স্বাভাবিক রয়েছে। প্রতিদিন ভোর থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত লঞ্চ চলছে। এছাড়া স্পিডবোটও চালু হয়েছে। শুধুমাত্র নিবন্ধিত বোটগুলোই চলছে।

বাংলাদেশ সময়: ০৯৫১ ঘণ্টা, অক্টোবর ০৯, ২০২১
জেডএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।