ঢাকা: দেশে পলিথিন ও প্লাস্টিক পণ্যের ব্যবহার বন্ধে ৯ দাবি জানিয়েছে দেশের ১৪টি পরিবেশবাদী সংগঠন।
শনিবার (৯ অক্টোবর) দুপুরে রাজধানীর শাহবাগে জাতীয় জাদুঘরের সামনে 'পলিথিন-প্লাস্টিকের ছড়াছড়িতে হুমকির মুখে পরিবেশ ও জনস্বাস্থ্য:পলিথিন ও প্লাস্টিক ব্যবহার বন্ধে চাই কার্যকর উদ্যোগ' শীর্ষক মানববন্ধন থেকে এ দাবি করা হয়।
মানববন্ধনে সভাপতিত্ব করেন পরিবেশ বাঁচাও আন্দোলনের (পবা) সাধারণ সম্পাদক প্রকৌশলী মো. আবদুস। সঞ্চালনা করেন পবার সম্পাদক এম এ ওয়াহেদ।
বক্তব্য রাখেন গ্রাম বাংলা উন্নয়ন কমিটির নির্বাহী পরিচালক এ কে এম মাকসুদ, পরিবেশ আন্দোলনের সভাপতি আমির হাসান মাসুদ, পুরান ঢাকা নাগরিক উদ্যোগের সভাপতি নাজিমউদ্দীন, বিডিক্লিকের সভাপতি আমিনুল ইসলাম টুব্বুস, সুবন্ধনের সভাপতি মো. হাবিবুর রহমান, গ্রিণফোর্সের আহসান হাবিব।
তারা বলেন, প্লাস্টিক বর্জ্যে সয়লাব চারপাশ। পলিথিন নিষিদ্ধ হওয়ার পর গত দুই দশকে শুধু রাজধানীতেই প্লাস্টিক বর্জ্য বেড়েছে ৩ গুণেরও বেশি। অথচ প্লাস্টিক পুনর্ব্যবহার কিংবা পলিথিনের বিকল্প তৈরিতে নেই কোনো উদ্যোগ। বর্জ্য ব্যবস্থাপনার গলদ ও নগরবাসীর অসচেতনতায় ভয়ংকর পরিণতির দিকে এগোচ্ছে প্রাণ, প্রকৃতি ও পরিবেশ।
তারা আরও বলেন, সরকারকে দ্বৈত নীতি ত্যাগ করতে হবে। কারণ সরকার একদিকে পলিথিনের পরিবর্তে পাটের ব্যাগ ব্যবহার করার কথা বলছে, অন্যদিকে পাটকলগুলো ধীরে ধীরে বন্ধ হয়ে যাচ্ছে। ফলে সাধারণ মানুষ পাটের ব্যাগ ব্যবহারে দিন দিন উৎসাহ হারাচ্ছে। একটি মাত্র প্লাস্টিক ব্যাগ মাটিতে মিশে যেতে সময় লাগে প্রায় এক হাজার বছর। সে জন্যই প্লাস্টিক বর্জ্য কীভাবে রিসাইকেল করা যায় তা বিজ্ঞানীদের কাছে এক বড় চ্যালেঞ্জ।
মানবন্ধন থেকে বক্তারা ৯ দফা দাবি তুলে ধরেন। এগুলো হচ্ছে- পলিথিন নিষিদ্ধের আইন কঠোরভাবে বাস্তবায়নের লক্ষ্যে পরিবেশ অধিদপ্তরের সক্রিয় ভূমিকা পালন করতে হবে। পলিথিন শপিং ব্যাগ ও টিস্যু ব্যাগের উৎপাদন ও ব্যবহার বন্ধে কার্যকর পদক্ষেপ নিতে হবে। নিষিদ্ধ পলিথিন ব্যাগ উৎপাদন, বাজারজাতকরণ ও ব্যবহারকারীদের আইনের আওতায় দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ব্যবস্থা করতে হবে। পলিথিনের বিকল্প হিসেবে পাটের ব্যাগ, কাপড়ের ব্যাগ, কাগজের ব্যাগ ইত্যাদি সহজলভ্য করা এবং এগুলো ব্যবহারে জনগণকে উদ্ভুদ্ধ করতে হবে। বন্ড লাইসেন্সের মাধ্যমে আমদানি করা পলি প্রোপাইলিন পলিথিন শপিং ব্যাগ তৈরির কাঁচামাল হিসেবে ব্যবহার বন্ধে কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া। টিস্যু ব্যাগ তৈরির কাঁচামাল আমদানি বন্ধে কার্যকর পদক্ষেপ নিতে হবে। পরিবেশ অধিদপ্তর, আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী, জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করতে হবে। প্লাস্টিক বর্জন, হ্রাস, পুনঃব্যবহারের ক্ষেত্রে জনসচেতনতা সৃষ্টি করতে হবে। প্লাস্টিক বর্জন, হ্রাস, পুনঃব্যবহার এবং পুনর্ব্যবহারযোগ্য করার লক্ষ্যে ব্যক্তিগত দায়িত্ব পালনে নাগরিকদের সচেষ্ট হতে হবে। প্লাস্টিক দূষণ মোকাবেলায় সরকার, বিশেষ করে স্থানীয় সরকারের সক্ষমতা বাড়াতে হবে।
বাংলাদেশ সময়:১৬৪২ ঘণ্টা, অক্টবর ০৯, ২০২১
আরকেআর/এমএমজেড