ঢাকা, শুক্রবার, ৯ মাঘ ১৪৩১, ২৪ জানুয়ারি ২০২৫, ২৩ রজব ১৪৪৬

জাতীয়

বগুড়ায় বেড়েছে ৬২ পূজা মণ্ডপ  

কাওছার উল্লাহ আরিফ, ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৮৩৩ ঘণ্টা, অক্টোবর ৯, ২০২১
বগুড়ায় বেড়েছে ৬২ পূজা মণ্ডপ  

বগুড়া: নানা আয়োজনের মধ্য দিয়ে এ বছর অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের বৃহৎ উৎসব শারদীয় দুর্গাপূজা। দেশের বিভিন্ন জেলার মতো বগুড়াতেও উৎসবমুখর পরিবেশে দুর্গোৎসব পালন করে হিন্দু ধর্মাবলম্বীরা।

পূজাকে সামনে রেখে বগুড়ায় শেষ মুহূর্তে প্রতিমা রং করার কাজে ব্যস্ত শিল্পীরা। কারিগরদের রাত-দিন কাটছে প্রতিমা রঙের কাজে। এরই মধ্যে মণ্ডপে চলে গেছে অনেক প্রতিমা।  

গেল বছর করোনাভাইরাসের প্রকোপ বেড়ে যাওয়াসহ নানা কারণে বগুড়া জেলার মোট ১২টি উপজেলায় ৩০টি মণ্ডপ কমে ৬৩১টি মণ্ডপে দুর্গাপূজা অনুষ্ঠিত হয়। এ বছর ৬২টি মণ্ডপ বেড়ে মোট ৬৯৩টি মণ্ডপে অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে শারদীয় দুর্গাপূজা।  

এ নিয়ে পূজা উদযাপন পরিষদ জেলা ও উপজেলা পর্যায়ের নেতাদের সঙ্গে প্রশাসনের দফায় দফায় আলোচনা চলছে।

বগুড়া জেলা পূজা উদযাপন পরিষদের তথ্যমতে, জেলার ১২টি উপজেলার মধ্যে বগুড়া সদরে ১১৯টি, শাজাহানপুরে ৫৭টি, শিবগঞ্জে ৬০টি, সোনাতলায় ৫০টি, সারিয়াকান্দিতে ২৩টি, ধুনটে ৩৭টি, গাবতলীতে ৭৭টি, শেরপুরে ৮৬টি, নন্দীগ্রামে ৪৪টি, কাহালুতে ৩৭টি, আদমদীঘিতে ৬৩টি এবং দুপচাঁচিয়ায় ৪০টি মণ্ডপে দুর্গাপূজা অনুষ্ঠিত হবে।

প্রতি বছর দুর্গা উৎসব এগিয়ে আসলে জেলার প্রতিমাশিল্পীদের কদর বেড়ে যায়। বছরের অন্য সময় তারা কৃষি কাজসহ বিভিন্ন পেশায় জীবিকা নির্বাহ করে থাকেন। করোনা পরিস্থিতির মধ্যে মানবেতর জীবনযাপন করেছে এমন অনেক প্রতিমাশিল্পী।  

করোনার দুশ্চিন্তা থাকলেও চলতি বছরের সেপ্টেম্বরে সংক্রমণ ও মৃত্যুর হার কমার কারণে আনন্দ-উৎফুল্লতা নিয়ে দিনরাত ২৪ ঘণ্টা প্রতিমা তৈরির কাজে নেমে পড়েছেন তারা। সঠিক সময়ে প্রতিমা তৈরির কাজ শেষ করতে হবে বলে পরিবারের সদস্যরা ছাড়াও বাড়তি চার-পাঁচজন শ্রমিক নিয়ে রাত-দিন ব্যস্ত সময় পার করতে হয় তাদের। এখন দম ফেলার সময় নেই প্রতিমাশিল্পীদের। ইতোমধ্যেই মনের মাধুরী মিশিয়ে তারা গড়ে তুলেছেন দেবী দুর্গার প্রতিমা। এখন রঙ তুলির আঁচড়ে সেই প্রতিমাকে দেওয়া হচ্ছে সুন্দর রূপ।

১০ অক্টোবর সন্ধ্যায় বোধনের মধ্য দিয়ে দেবীর আগমন ঘটবে। ষষ্ঠীতে দশভুজা দেবী দুর্গার আমন্ত্রণ ও অধিবাসনের মাধ্যমে শুরু হবে পূজার আনুষ্ঠানিকতা। উঁচু-নিচু, ধনী-গরিব ভেদাভেদ ভুলে পরবর্তী চার দিন হিন্দু ধর্মাবলম্বীরা মেতে থাকবে দুর্গোৎসবে।  

১৫ অক্টোবর দশমীতে বিসর্জনের মাধ্যমে দেবী বিদায় নেবেন মর্ত্য থেকে। হিন্দু ধর্মে বিশ্বাস ও পঞ্জিকা মতে, এ বছর দেবী দুর্গা দূর কৈলাশ ছেড়ে পিতৃগৃহ মর্ত্যধামে আসবেন ঘোড়ায় চড়ে। বিজয়া দশমীতে দোলায় চড়ে দেবী বিদায় নেবেন।

বগুড়া উত্তর চেলোপাড়া নববৃন্দাবন হরিবাসর এলাকার প্রতিমার কারিগর কাজল প্রামাণিক বাংলানিউজকে বলেন, ২০২০ সালে করোনার কারণে তার কারখানায় ১৮টি প্রতিমার কাজ করতে পেরেছিলেন। এ বছর প্রতিমা তৈরি করেছেন ২১টি। তাছাড়া প্রতিবছর তার কারখানায় ২০-২৫টি প্রতিমা তৈরি করা হয়।

তিনি আরও জানান, দিন দিন প্রতিমা তৈরিতে ব্যবহিত সামগ্রীর দাম বাড়ছে। ২০২০ সালের মতো এ বছরও তার তৈরি প্রতিমার দাম ২০ থেকে ৫৫ হাজার টাকা।  

শাজাহানপুর উপজেলার উত্তম, তন্ময়সহ একাধিক প্রতিমা শিল্পী বাংলানিউজকে জানান, প্রতিমা তৈরিতে সরঞ্জাম খড়, সুতা, বাঁশ ছাড়াও রং ও অন্য উপকরণের দাম বেড়েছে। এতে প্রতিমা তৈরিতে তাদের খরচ আগের তুলনায় অনেক বেশি হচ্ছে।  

বগুড়া জেলা পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি দীলিপ বাবু বাংলানিউজকে জানান, দফায় দফায় জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে প্রশাসক ও পুলিশ প্রশাসনের  সঙ্গে তাদের মিটিং হয়েছে। করোনা সংক্রমণ রোধে কেন্দ্রীয়ভাবে তাদের ১৮টি শর্ত বা দিক নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।  

তিনি আরও জানান, ওই শর্তগুলোর মধ্যে রয়েছে মণ্ডপে মণ্ডপে হাত ধোয়ার ব্যবস্থা করা, সামাজিক দূরত্ব বজায় নিশ্চিত করা, মাস্ক ব্যবহার করা, দর্শনার্থীদের মণ্ডপে বেশি সময় অতিবাহিত না করা, কোনো প্রকার সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন না করা, উচ্চ আওয়াজে কোনো প্রকার সাউন্ড বক্স বা গান বাজনা না করা।

আরও পড়ুন: 

কক্সবাজারে ৩০৪ মণ্ডপে দুর্গাপূজা

বাংলাদেশ সময়: ১৮৩৩ ঘণ্টা, অক্টোবর ৯, ২০২১
কেইউএ/জেএইচটি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।