লক্ষ্মীপুর: দীর্ঘ ৩৪ বছর ধরে বিছানায় পড়ে থাকা খোরশেদ আলমকে একটি হুইল চেয়ার এবং তার পরিবারকে আর্থিক সহায়তা দেওয়া হয়েছে।
হামদর্দ (ওয়াক্ফ) ল্যাবরেটরিজ বাংলাদেশের এমডি ড. হাকিম মো. ইউছুফ হারুন ভূঁইয়ার সহধর্মিণী সমাজসেবক কামরুনাহার পলিনের নিজস্ব অর্থায়নে খোরশেদকে একটি হুইল চেয়ার এবং তার পরিবারকে নগদ ১০ হাজার টাকা সহায়তা দেওয়া হয়।
শারীরিক প্রতিবন্ধী খোরশেদ আলম (৩৪) ও তার ছোট ভাই মানসিক প্রতিবন্ধী মোরশেদ আলমসহ (২৪) তাদের পরিবারের করুণ চিত্র নিয়ে শনিবার সকালে বাংলানিউজে সংবাদ প্রকাশিত হলে বিষয়টি অনেকের নজরে আসে।
এর পরেই ব্যক্তি উদ্যোগে খোরেশেদ আলমকে হুইল চেয়ার এবং তার পরিবারকে আর্থিক সহায়তা দেওয়া হয়েছে।
লক্ষ্মীপুর সদর উপজেলার চররুহিতা ইউনিয়নের চর লামচী গ্রামে পরিবারের সঙ্গে বসবাস করেন খোরশেদ ও মোরশেদ। তারা দিনমজুর আজাদ হোসেন ও খুরশিদা বেগম দম্পতির সন্তান।
এদিকে হুইল চেয়ারে বসতে পেরে হাসি ফুটেছে প্রতিবন্ধী খোরশেদ আলমের মুখে। হুইল চেয়ারটি পাওয়ার পর তাতে বসে বাড়ির আশপাশ ঘুরে দেখেন তিনি।
জানা গেছে, দুই প্রতিবন্ধী ভাই ও তাদের অবস্থা নিয়ে সংবাদ প্রকাশ হলে হামদর্দ (ওয়াক্ফ) ল্যাবরেটরিজ বাংলাদেশের এমডি ড. হাকিম মো. ইউছুফ হারুন ভূঁইয়ার সহধর্মিণী সমাজসেবক কামরুনাহার পলিনের নিজস্ব অর্থায়নে খোরশেদকে একটি হুইল চেয়ার এবং তার পরিবারকে নগদ ১০ হাজার টাকা সহায়তা দেন। তার হয়ে শনিবার (৯ অক্টোবর) দুপুরে সবুজ বাংলাদেশ নামে একটি সামাজিক সংগঠনের লোকজন এ সহায়তা খোরশেদের বাড়িতে পৌঁছে দেন।
এ সময় সংগঠনের সভাপতি ইসমাইল হোসেন বাবু ও সদস্য তকি উদ্দিন আহমেদসহ স্থানীয় কয়েকজন সংবাদকর্মী উপস্থিত ছিলেন।
খোরশেদের বাবা দিনমজুর আজাদ হোসেন অনুদান পেয়ে সবাইকে ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন, এই দুই সন্তান নিয়ে আমি অনেক কষ্টে আছি। যারা আমার পাশে এসে দাঁড়িয়েছেন তাদের আমি ধনবাদ জানাই। এদের চিকিৎসা করাতে গিয়ে আমি সহায়-সম্বল সব হারিয়েছি। এখন শুধু ঘরের ভিটেটা আছে। বাজারে পান দোকান দিয়ে যা আয় হয়, তা দিয়ে কোনোমতে সংসার চালাই। মানসিক প্রতিবন্ধী ছোট ছেলেটিকে আজ আট বছর ধরে শিকলে বেঁধে রেখেছি। সুযোগ পেলেই সে চলে যেতে চেষ্টা করে। সু-চিকিৎসা করাতে পারলে হয়তো ভালো হতে পারতো।
জানা যায়, জন্ম থেকে শারীরিক প্রতিবন্ধী খোরশেদ দীর্ঘ ৩৪ বছর থেকে বিচানায় পড়ে আছেন। জন্মের পর ৭ বছর পর্যন্ত ভালো ছিল তার ছোট ভাই মোরশেদ। হঠাৎ করে খিঁচুনি উঠে মানসিক সমস্যা দেখা দেয়। অর্থাভাবে সু-চিকিৎসা করাতে পারেনি পরিবারটি। এদিক সেদিক গিয়ে অন্যের ক্ষতি করবে সেই ভয়ে তার পায়ে শিকল পরিয়ে রাখা হয়েছে। এভাবে পার হয়েছে দীর্ঘ আট বছর। সুস্থ না হলে বাকি জীবনটা হয়তো এভাবেই কাটাতে হবে তাকে।
** ৮ বছর শিকলবন্দি ছোট ভাই, ৩৪ বছর বিছানায় বড় ভাই
বাংলাদেশ সময়: ০৯৫৫ ঘণ্টা, অক্টোবর ১০, ২০২১
আরএ