ঢাকা: প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় ও বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর বিভিন্ন পদে চাকরি দেওয়ার নামে বিপুল পরিমাণ অর্থ হাতিয়ে নেওয়া একটি চক্রের মূলহোতাসহ পাঁচজনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)।

গ্রেফতাররা হলেন- মো. আব্দুস সাত্তার (৫২), মো. আলী হোসেন (৪০), মো. শাহাদাত হোসেন (৫৫), মো. মোস্তফা (৬২) ও মো. জামাল হোসেন (৫০)।

সোমবার (১১ অক্টোবর) দুপুরে রাজধানীর মালিবাগে সিআইডি কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তদন্তকারী সংস্থার অতিরিক্ত ডিআইজি ইমাম হোসেন এ তথ্য জানান।

তিনি বলেন, মোহাম্মদপুর থানায় সম্প্রতি দায়ের হওয়া দু’টি প্রতারণার মামলা তদন্তের সূত্র ধরেই এই চক্রটিকে গ্রেফতার করা হয়।

আসামিরা নিজেদের প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় ও সেনাবাহিনীতে কর্মরত দাবি করে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে প্রশাসনিক কর্মকর্তা পদে, বাংলাদেশ সেনাবাহিনীতে সৈনিক ও অফিস সহকারী পদে চাকরি পাইয়ে দেবে বলে বেশ কয়েকজন চাকরিপ্রার্থীর কাছ থেকে বিপুল পরিমাণ অর্থ হাতিয়ে নেন। তাদের মধ্যে কয়েকজনকে সৈনিক পদে ও কয়েকজনকে ঢাকা সেনা সদর দপ্তরের অফিস সহকারী পদে ভুয়া নিয়োগপত্রও দেন। নিয়োগপত্র নিয়ে প্রার্থীরা কর্মস্থলে যোগদানের জন্য হাজির হতে গেলে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ নিয়োগপত্রগুলো ভুয়া বলে জানান। ইতোমধ্যে প্রতারক চক্র মোবাইল ফোন বন্ধ করে আত্মগোপন করে।

ভুক্তভোগীরা এ বিষয়ে সিআইডির কাছে অভিযোগ করলে বিভিন্ন প্রযুক্তির সহায়তায় সিআইডি ঢাকা মেট্রো পশ্চিম ইউনিট দীর্ঘদিন মনিটর করে এই চক্রের মূলহোতাসহ পাঁচজনকে গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়।

আসামিদের কাছ থেকে ভুয়া নিয়োগপত্র, মোবাইল ফোনসেট, কয়েকজন শিক্ষকের চাকরির এমপিও ভুক্তির আবেদনসহ বিভিন্ন চাকরিপ্রার্থীর সিভি, ছবিসহ অন্যান্য কাগজপত্র পাওয়া যায়।

তিনি বলেন, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়, তারা বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর বিভিন্ন পদের ভুয়া নিয়োগপত্র দেওয়াসহ বিভিন্ন দপ্তরে তদবির বাণিজ্য করে থাকেন। এছাড়া আসামিরা বিভিন্ন সরকারি দপ্তরের আদেশের কপি জাল করে থাকেন বলে জানা যায়।

গ্রেফতাররা সংঘবদ্ধ প্রতারক ও জালিয়াত চক্রের সক্রিয় সদস্য। তারা জনপ্রতি আট থেকে ১০ লাখ টাকা করে ১১ জনের কাছ থেকে প্রায় এক কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন বলে নিশ্চিত হওয়া গেছে।

ডিআইজি ইমাম হোসেন বলেন, আসামিরা একেকজন ৭ম, ৮ম শ্রেণি ও এসএসএি পাশ। ইতোপূর্বে তারা বিভিন্ন গার্মেন্টসসহ কেউ কেউ সেনানিবাসে কনস্ট্রাকশনের কাজ করেছেন। পরবর্তীতে তারা বিভিন্ন প্রতারণার মাধ্যমে সংঘবদ্ধভাবে চাকরি দেওয়ার নামে ভুয়া জমির দালালি, বিট কয়েন বেচাকেনাসহ বিভিন্ন অপরাধ করে আসছেন। তাদের অন্যান্য সহযোগীদের গ্রেফতারের চেষ্টা অব্যাহত আছে।

আসামিদের আদালতে পাঠিয়ে রিমান্ড চাইবে সিআইডি।

বাংলাদেশ সময়: ১৮৫২ ঘণ্টা, অক্টোবর ১১, ২০২১
এসজেএ/এমআরএ