ঢাকা: রাজধানীর খিলক্ষেতে নিহত চিকিৎসক জয়দেব কুমার দাসের ময়নাতদন্ত সম্পন্ন হয়েছে।
রোববার (১৭ অক্টোবর) দুপুরে ময়নাতদন্ত সম্পন্ন করেন ঢাকা মেডিক্যাল কলেজের ফরেনসিক বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ডা. জান্নাতুন নঈম।
মর্গ সুত্রে জানা গেছে, মরদেহ অর্ধগলিত ছিল। শরীরে আঘাতের চিহ্ন পরিলক্ষিত হয়নি। মরদেহের বাম হাতে ইনজেকশনের সিরিঞ্জসহ কেনোলা লাগানো ছিল। মরদেহ থেকে ব্লাড, চামড়া, হার্ট, লাঞ্চ ও ভিসেরা ক্যামিকেল এনাইলাইসিসের জন্য সংগ্রহ করা হয়েছে।
এর আগে খিলক্ষেত থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) রাসেল পারভেজ সুরতাল রিপোর্টে উল্লেখ করেন, নিকুঞ্জ-২ এর ১৫ নম্বর সড়কের ৮ নম্বর বাড়ির একটি ফ্ল্যাট থেকে মরদেহটি উদ্ধার করা হয়। এ সময় রুমের ভেতরে গিয়ে দেখা যায়- নিহত চিকিৎসকের বাম হাতে কেনোলাসহ একটি সিরিঞ্জ লাগানো, একটি সুইসাইডাল নোটসহ খাতা, লাল কলম, তিনটি সিরিঞ্জে থাকা তরল পদার্থ, দুইটি মোবাইল, পাঁচটি ইনজেকশনের খালি প্যাকেট।
এসআই রাসেল পারভেজ জানান, বাড়িটির ৮ তলায় ফ্ল্যাটের একটি কক্ষ থেকে দুর্গন্ধ পেয়ে পাশের ফ্ল্যাটের ভাড়াটিয়ারা থানায় খবর দেয়। এরপর রাতেই ওই বাসায় গিয়ে রুমের দরজা ভেঙে খাটে শোয়া অবস্থায় জয়দেবের মরদেহ উদ্ধার করা হয়। এ সময় সিআইডির ক্রাইম সিন ও ঘটনাস্থল থেকে বিভিন্ন আলামত সংগ্রহ করে। ফ্ল্যাটটিতে দু'জন মিলে থাকতেন। অপর এক চিকিৎসক পূজার ছুটিতে বাড়ি গিয়েছিলেন।
মৃত জয়দেবের ফুফাতো ভাই অজয় কুমার দাস জানায়, তাদের বাড়ি দিনাজপুরের পার্বতীপুর উপজেলার দক্ষিণ সালন্দার কুমারপাড়ায়। জয়দেবের বাবার নাম দিলীপ চন্দ্র দাস। জয়দেব সিলেট ওসমানি মেডিক্যাল থেকে ডাক্তারি পাশ করে ইন্টার্নি শেষ করেছে। তার বাবা গ্রামের বাড়িতে ভ্যান চালায়। তিন ভাই এক বোনের মধ্যে জয়দেব ছিল বড়।
অজয় আরও জানায়, সকালে খবর পাওয়া যায় জয়দেব খিলক্ষেত এলাকায় মারা গেছে। সকালেই জয়দেবের ছোট ভাইকে নিয়ে ঢাকা আসি। কিন্তু কীভাবে জয়দেব মারা গেছে তা জানতে পারিনি। তবে জয়দেব কোনো ভাবেই আত্মহত্যা করতে পারে না।
জয়দেবের বন্ধু প্রান্ত মজুমদার বলেন, দুই-তিন মাস আগে এফসিপিএস পড়াশুনার জন্য ঢাকায় আসে জয়দেব। তখন কুড়িল বিশ্বরোড চৌরাস্তায় আমার সঙ্গে মেসে থাকতো। পরে গত ১৪ তারিখে নিকুঞ্জের বাসায় উঠে। নিকুঞ্জ থাকলেও আমার এখানে খাওয়া দাওয়া করতো। রাতে খেতে না আসায় ফোন দেই। কিন্তু রিসিভ করে না। ১৫ তারিখ সকালে কয়েকবার ফোন দিলেও রিসিভ করেনি।
প্রান্ত আরও জানায়, আমার বিশ্বাস জয়দেব আত্মহত্যা করতে পারে না।
এদিকে খিলক্ষেত থানার ভারপাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মুনসি সাব্বির আহমেদ জানান, চিকিৎসকের মরদেহ উদ্ধারের সময় সেখান থেকে একটি সুইসাইট নোট পাওয়া গেছে। সেটা দেখে জানা যায় একটি মেয়ের সঙ্গে তার প্রেম ছিল। এটি আত্নহত্যার ঘটনা হতে পারে তবুও পুলিশ সকল বিষয় তদন্ত করে দেখছে ময়নাতদন্তের প্রতিবেদেন পেলে মৃত্যুর কারণ জানা যাবে।
আরও পড়ুন >>> দরজা ভেঙে চিকিৎসকের মরদেহ উদ্ধার
বাংলাদেশ সময়: ২০৩৫ ঘণ্টা, অক্টোবর ১৭, ২০২১
এজেডএস/কেএআর