মাদারীপুর: প্রতিনিয়ত প্রশাসন অভিযান চালিয়ে ইলিশ শিকারিদের জেল-জরিমানা করছে। উচ্ছেদ করছে অস্থায়ী বাজারও।
জানা যায়, ইলিশ নিধনে সরকারের নিষেধজ্ঞা বাস্তবায়নে অভিযানের শুরু থেকেই মাদারীপুর জেলার শিবচরের পদ্মা নদী ও সংলগ্ন চরগুলোতে প্রশাসনের ব্যাপক অভিযান চলছে। প্রশাসন অভিযান চালিয়ে কয়েকটি হাট-বাজারের শতাধিক অস্থায়ী স্থাপনাও উচ্ছেদ করেছে। চলতি অভিযানে শিবচরেই প্রায় ২০০ জেলেকে এক বছর করে কারাদণ্ড দিয়েছেন ভ্রাম্যমাণ আদালত। তবে নদী ও চরগুলোতে স্থায়ীভাবে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী বা প্রশাসন না থাকায় সুযোগ পেয়েই জেলেরা নদীতে নেমে পড়ছে।
সরেজমিনে গিয়ে জানা যায়, প্রশাসন চলে গেলেই আবার বসছে ইলিশ হাট। এক্ষেত্রে জেলেসহ ক্রেতা-বিক্রেতার বেছে নিয়েছে সড়কহীন চর। নদী ও চরগুলোতে স্থায়ীভাবে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী বা ক্যাম্প না থাকায় মাদারীপুরের শিবচর, শরীয়তপুরের জাজিরা, মুন্সীগঞ্জের লৌহজং, ঢাকার দোহার, ফরিদপুরের সদরপুর অংশের পদ্মা নদী ও চরগুলোতে প্রকাশ্যেই বিক্রি হচ্ছে মা ইলিশসহ ছোট বড় ইলিশ।
জেলে আলমাছ হোসেন বলেন, ‘নিষেধাজ্ঞা থাকার কারণে এ সময় পদ্মায় মাছ বেশি পাওয়া যায়। তাই আমরা মাছ ধরি। পদ্মার বিভিন্ন চরে নিয়ে বিক্রি করি। ’
সাইফুল ইসলাম নামে আরও এক জেলে বলেন, ‘নিষেধাজ্ঞার সময় আমাদের শিবচরের প্রশাসন অনেক কড়াকড়ি থাকলেও মুন্সিগঞ্জ, জাজিরাসহ অন্য অঞ্চলে প্রশাসন ততটা কড়াকড়ি করে না। তাই আমরা ওইসব অঞ্চলে গিয়ে মাছ ধরে চরেই বিক্রি করি। ’
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক ক্রেতা বলেন, শুনেছি পদ্মার চর মাদবরচরের খাড়াকান্দি এলাকায় কম দামে ইলিশ মাছ পাওয়া যায়। তাই ট্রলারে চরে ভেঙে ভেঙে এ চরে এসে কিছু মাছ কিনলাম। তবে মাছের দাম বেশি মনে হচ্ছে।
ফরিদপুর থেকে পিকনিকে আসা কয়েকজন কলেজছাত্র বলেন, আমরা জানতে পেরেছি এ চরে ইলিশ মাছ কিনতে পাওয়া যায়। তাই বন্ধুরা মিলে এখানে এসে তাজা ইলিশ মাছ কিনে এখন খিচুরি রান্না করছি। একেকজন একেকটা ইলিশ মাছ খাবো। তবে দাম কম বেশি হওয়ায় ছোট মাছ কিনেছি।
শিবচর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. আসাদুজ্জামান বলেন, আমরা প্রতিনিয়ত দফায় দফায় পদ্মায় অভিযান পরিচালনা করছি। জেলেদের জেল-জরিমানা করা হচ্ছে। চরগুলোতে অভিযান চালিয়ে শতাধিক ইলিশ বিক্রির স্থাপনা উচ্ছেদ করা হয়েছে। তবে মা ইলিশ রক্ষায় স্থায়ীভাবে নদী ও চরগুলোতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী মোতায়ন প্রয়োজন।
বাংলাদেশ সময়: ১২২৬ ঘণ্টা, অক্টোবর ২২, ২০২১
আরবি