ঢাকা, রবিবার, ৫ মাঘ ১৪৩১, ১৯ জানুয়ারি ২০২৫, ১৮ রজব ১৪৪৬

জাতীয়

সাড়ে ৬ বছর হাজতবাসের পর সাজা হলো ৬ মাস!

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১০৩৯ ঘণ্টা, অক্টোবর ২৯, ২০২১
সাড়ে ৬ বছর হাজতবাসের পর সাজা হলো ৬ মাস!

যশোর: যশোরের ঝিকরগাছায় ৮পিস ইয়াবা উদ্ধার মামলায় প্রায় সাড়ে ৬ বছর হাজতবাসের পর আসলাম (৩৫) নামের এক ব্যক্তির ছয় মাসের কারাদণ্ড হয়েছে। তার হাজতবাসকে সাজা বিবেচনা করে বৃহস্পতিবার যশোরের সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের বিচারক গৌতম মল্লিক এ রায় দিয়েছেন।

 

এর আগে বিনাবিচারে জেল খাটার বিষয়টি আদালতের নজরে আনে বাংলাদেশ লিগ্যাল এইড অ্যান্ড সার্ভিসেস ট্রাস্টের (ব্লাস্ট)। এরপর আদালতের নির্দেশে ১৯ অক্টোবর আসলামকে মুক্তি দেওয়া হয়।  

আসামি আসলাম যশোরের ঝিকরগাছা উপজেলার রাজবাড়িয়া গ্রামের কাওসার আলী সরদারের ছেলে।

বাংলাদেশ লিগ্যাল এইড অ্যান্ড সার্ভিসেস ট্রাস্টের (ব্লাস্ট) প্যারালিগ্যাল টিমের আইনজীবী জান্নাতুল ফৌরদৌস জানান, মালেশিয়া প্রবাসী আসলাম ২০১৪ সালে দেশে ফেরেন। এরপর তিনি মাদকাসক্ত হয়ে পড়েন।  ২০১৫ সালের ২৭ মে যশোরের ঝিকরগাছা রাজবাড়িয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সামনে ফাঁকা মাঠের পূর্বপাশ থেকে পুলিশ ৮ পিস ইয়াবাসহ আসলামকে গ্রেফতার করে। এই মামলায় আদালত তাকে কারাগারে পাঠায়। পরিবারের লোকজন আর

আসলামের খোঁজখবর নেয়নি। তার জন্য আইনজীবীও নিয়োগ হয়নি। দীর্ঘদিন ধরে কারাগারেই বন্দি ছিল। কারাবন্দি অবস্থায় মানসিক ভারসাম্যহীনতার শিকার হয়। এক পর্যায়ে ব্লাস্টের প্যারালিগ্যাল টিমের সঙ্গে আসলামের সাক্ষাৎ হয়। তখনও প্যারালিগ্যাল টিমের সদস্যদের সঙ্গে অসংলগ্ন কথা বলা শুরু করে।

এরপর তার পরিবারের লোকজনের ঠিকানা উদ্ধার করা হয়। তার তথ্য সংগ্রহ করে ব্লাস্ট বরাবর তার পক্ষ থেকে আইনজীবী নিয়োগের আবেদন করা হয়। বিনাবিচারে ৬ বছর ৫ মাস হাজতখাটার বিষয়টি অবগত করে ১৮ অক্টোবর আদালতে জামিন আদেন করা হয়।

এরপর আদালত তার জামিন মঞ্জুর করে। ১৯ অক্টোবর যশোর কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে মুক্তি পান আসলাম। এরপর ২১ অক্টোবর আদালতে দোষ স্বীকার করে আবেদন করেন আসলাম। তার হাজতবাসকে সাজা হিসেবে বিবেচনা করে আদালতে আবেদন করেন আসলামের আইনজীবী।  

বৃহস্পতিবার (২৮অক্টোবর) সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত আসলামের হাজতবাসকে সাজা হিসেবে বিবেচনা করে ছয় মাসের কারাদণ্ড দিয়েছেন।
আসলামের ভাই আবু বক্কর বলেন, আসলাম মালেশিয়ায় ছিল এক বছর। এরপর বাড়ি ফিরে আসে। এলাকার খারাপ লোকের সঙ্গে চলাচল করত। এক পর্যায়ে নেশাগ্রস্ত হয়ে পড়ে। তাকে নিষেধ করলে উল্টো আমাদের ওপর ক্ষিপ্ত হত।

নেশার আসর থেকে পুলিশ তাকে আটক করে। প্রথম দিকে আমরা খোঁজখবর নিতাম। পরে আর নিতে পারিনি। আমরা ভাইয়েরা সবাই গরীব। নিজেদের সংসারই ঠিকমতো চলে না। কয়েকদিন আগে আসলামকে আমাদের বাড়িতে দিয়ে গেছে পুলিশ। আসলাম অসুস্থ, ভুল বকে। তার চিকিৎসা করানোর মতো টাকা আমাদের নেই। পৈত্রিক সম্পত্তি বিক্রি করে আসলাম নেশার পেছনে শেষ করেছে। তারপরও চিকিৎসার চেষ্টা করবো।


বাংলাদেশ সময়: ১০৩৮ ঘণ্টা, অক্টোবর ২৯,২০২১ 
ইউজি/এসআইএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।