ঢাকা: টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে স্থানীয় সরকারের প্রতিষ্ঠানগুলো যেমন জেলা পরিষদ শক্তিশালী করতে হবে, যেন উন্নয়নের ক্ষেত্রে জেলা-উপজেলা ও ইউনিয়ন পর্যায়ে কেউ পিছিয়ে না থাকে। বৃহস্পতিবার (৪ নভেম্বর) ঢাকায় অনুষ্ঠিত একটি জাতীয় কর্মশালায় অংশগ্রহণ করে বক্তারা এ কথা বলেন।
স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয় এবং জাতিসংঘ উন্নয়ন কর্মসূচির (ইউএনডিপি) যৌথ উদ্যোগে ’এসডিজি অর্জনে জেলা পরিষদ শক্তিশালীকরণ’ শীর্ষক এ কর্মশালাটি অনুষ্ঠিত হয়।
তাজুল ইসলাম কর্মশালায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে বলেন, যদিও স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠানগুলো অতীতের যে কোনো সময়ের চেয়ে এখন অনেক বেশি শক্তিশালী এবং অধিক জনবান্ধব তারপরও আমরা যদি ২০৩০ সালের মধ্যে এসডিজি অর্জন করতে চাই তাহলে জেলা পরিষদগুলোর সক্ষমতা বাড়াতে আরও সহায়তা প্রয়োজন। মন্ত্রী এ ব্যাপারে সব উন্নয়ন সহযোগীকে এগিয়ে আসার উদাত্ত আহ্বান জানান।
তিনি আরও বলেন, জেলা পরিষদ স্থানীয় সম্পদের যথাযথ ব্যবহারের মাধ্যমে তাদের সমস্যা সমাধান করতে পারে। কিন্তু এজন্য অন্যান্য স্থানীয় সরকার সংস্থার সঙ্গে সমন্বয় করা প্রয়োজন।
কর্মশালায় বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশে কর্মরত সুইজারল্যান্ডের রাষ্ট্রদূত নাথালি চুয়ার্ড। তিনি তার বক্তব্যে বাংলাদেশ ও সুইজারল্যান্ডের অংশীদারিত্বে সুইস এজেন্সি ফর ডেভেলপমেন্ট অ্যান্ড করপোরেশনের (এসডিসি) সহায়তায় পরিচালিত প্রকল্পের সংখ্যা তুলে ধরে বলেন, আমি আশা করি স্থানীয় সরকারের বিভিন্ন উদ্যোগকে শক্তিশালী করার ক্ষেত্রে এবং টেকসই উন্নয়ন লক্ষামাত্রা বাস্তবায়নে সুইজারল্যান্ড সব সময় বাংলাদেশের পাশে থাকবে।
এছাড়া কর্মশালায় বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ইউএনডিপি বাংলাদেশের আবাসিক প্রতিনিধি সুদীপ্ত মুখার্জি। তিনি বলেন, বাংলাদেশ সরকারের সঙ্গে ইউএনডিপি বহু বছর ধরে কাজ করছে। আমরা এসডিজির স্থানীয়করণ এবং উপজেলা-ইউনিয়ন পরিষদের সক্ষমতা বাড়াতেও সরকারকে সহায়তা করে আসছি। নাগরিকদের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করার মাধ্যমে একটি কার্যকর জেলা পরিষদ ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠার ক্ষেত্রে আমাদের সহায়তা ভবিষ্যতেও অব্যাহত থাকবে। খুব শিগগিরই প্ৰধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্য (এসডিজি) বিষয়ক মুখ্য সমন্বয়ক এবং এলজিআরডি মন্ত্রণালয়ের নেতৃত্বে আন্তর্জাতিক আর্থিক প্রতিষ্ঠান এবং অন্যান্য উন্নয়ন সহযোগী সংস্থার সঙ্গে আমরা পিছিয়ে থাকা জেলাসমূহ চিহ্নিত করে, এসডিজি স্থানীয়করণে তাদের শক্তিশালী করতে কাজ করবো, যেন কেউ পিছিয়ে না থাকে। আমরা এরইমধ্যে এসডিজি বাস্তবায়নে শেষ দশকে এসে গেছি, এখন সময় সবাইকে নিয়ে সর্বাত্মক চেষ্টা করতে হবে যেন জেলা পরিষদ আরও শক্তিশালী হয় ও স্থানীয় পর্যায়ে সঠিক ডাটা সংরক্ষণ ও নিরীক্ষণের মাধ্যমে সামনে এগিয়ে যেতে পারে। এসডিজি অর্জনের ক্ষেত্রেও বাংলাদেশ যে বিশ্বের কাছে রোল মডেল হয়ে উঠবে এ বিষয়ে আমার কোনো সন্দেহ নেই।
কর্মশালার সভাপতি স্থানীয় সরকার বিভাগের সিনিয়র সচিব হেলালুদ্দীন আহমদ ইউএনডিপিকে স্থানীয় পর্যায়ে বিভিন্ন সরকারি প্রতিষ্ঠানের সহায়তা দেওয়ার জন্য ধন্যবাদ জানান। তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করে বলেন, জেলা পরিষদের সক্ষমতা বাড়াতে ইউএনডিপির সহায়তা ভবিষ্যতেও অব্যাহত থাকবে। তিনি বলেন, জেলা পর্যায়ের উন্নয়ন কর্মকাণ্ড সমন্বয় করতে হলে একটি সক্ষম ও জনবান্ধব জেলা পরিষদ প্রয়োজন।
কর্মশালার শুরুতে ‘জেলা পরিষদ: চ্যালেঞ্জ, সম্ভাবনা ও এগিয়ে যাওয়ার উপায়’ শীর্ষক মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের লোক প্রশাসন বিভাগের অধ্যাপক মোবাস্বের মোমেন।
অন্যান্যের মধ্যে স্থানীয় সরকার বিভাগের কর্মকর্তা, বিভিন্ন স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধি, উন্নয়ন সহযোগী, শিক্ষাবিদ, বিশেষজ্ঞ, সুশীল সমাজের প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।
বাংলাদেশ সময়: ০৮২৯ ঘণ্টা, নভেম্বর ০৪, ২০২১
টিআর/আরবি