ঢাকা, শনিবার, ৪ মাঘ ১৪৩১, ১৮ জানুয়ারি ২০২৫, ১৭ রজব ১৪৪৬

জাতীয়

রাজধানীতে হাতে গোনা বাস, ভোগান্তি

হোসাইন মোহাম্মদ সাগর, ফিচার রিপোর্টার | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৪২০ ঘণ্টা, নভেম্বর ৫, ২০২১
রাজধানীতে হাতে গোনা বাস, ভোগান্তি

ঢাকা: জ্বালানি তেলের মূল্যবৃদ্ধির জের ধরে শুক্রবার (৫ নভেম্বর) সকাল থেকে শুরু হওয়া বাস মালিকদের ধর্মঘটে রাজধানীতে দেখা গেছে গণপরিবহনের তীব্র সংকট। ঢাকার বেশিরভাগ গণপরিবহন যেহেতু ব্যক্তি মালিকানাধীন, তাই মালিকরা অতিরিক্ত অর্থে জ্বালানি কিনে লোকসানের আশঙ্কায় পরিবহন বের করেননি পথে।

সকাল থেকে রাজধানীর শাহবাগ, কারওয়ান বাজার, ফার্মগেট, খামারবাড়ি, এলিফ্যান্ট রোড, কলাবাগান, ধানমন্ডি, আসাদগেট ও শ্যামলী এলাকায় কোনো যানবাহন দেখা যায়নি বললেই চলে।

তবে মাঝে মধ্যে খিলগাঁও-মোহাম্মদপুর রুটে তরঙ্গ পরিবহন এবং গুলিস্তান-ফার্মগেট-মিরপুর রুটে হাতে গোনা কয়েকটি রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন বিআরটিসি বাস চলাচল করতে দেখা গেছে। তবে সেগুলোতে ছিল উপচেপড়া ভিড়। অনেকেই আবার বাসের দরজায় ঝুলে ঝুলেও যাত্রা করেছেন।

এ প্রসঙ্গে ফার্মগেট থেকে বিআরটিসির যাত্রী আরিফুর রহমান নামে একজন বলেন, গণপরিবহন বন্ধ হলে সব থেকে বেশি ভোগান্তিতে পড়ে সাধারণ মানুষ। বাসে যেখানে ভাড়া ১০ টাকা, রিকশায় গেলে ৭০ টাকা। সিএনজি নিলে ১২০ টাকা। কী করার, তাই অনেকক্ষণ হেঁটে ফার্মগেট এসে গুলিস্তানের বাসের জন্য অপেক্ষা করছিলাম। পরে আধাঘণ্টা দাঁড়িয়ে একটি বাস পাওয়া গেলেও তাতে ঝুলে ঝুলে যাত্রা করা ছাড়া উপায় নেই।

এদিকে শুক্রবার হওয়ায় আরও বেশি বিপাকে পড়েছে ঢাকার বাইরে থেকে রাজধানীতে আসা সরকারি চাকরির পরীক্ষার্থীরা। একদিকে যেমন সকালে নির্দিষ্ট পরীক্ষা কেন্দ্রে যেতে তাদের গুনতে হয়েছে ভোগান্তি, ঠিক তেমনি পরীক্ষা শেষ করে বাসায় ফেরার জন্য কষ্ট যেন তাদের চরমে।

এ বিষয়ে ইমরান হোসেন নামে এক পরীক্ষার্থী বলেন, আমার জাতীয় সংসদের একটি চাকরির পরীক্ষা ছিল মোহাম্মদপুর রেসিডেন্সিয়াল মডেল কলেজে। গত রাতে ঢাকাতে এলেও সকাল বেলা আত্মীয়ের বাসা থেকে বাইকে করে পরীক্ষা কেন্দ্রে গেছি। পরীক্ষা শেষ করে প্রায় এক ঘণ্টা দাঁড়িয়ে আছি। কোনো বাস পাচ্ছি না। এখন কীভাবে ফিরবো জানি না। এরপরে আবার গ্রামে ফেরার পালা তো আছেই।

তিনি বলেন, গ্রামে ফেরার জন্য বাস বন্ধ হলেও ট্রেন চলছে। কিন্তু ট্রেনের সিট পাওয়া কঠিন। এরপর আবার অনলাইনে টিকিট করা আরও বেশি বিরক্তিকর। আর বাস বা অন্যান্য গণপরিবহন বন্ধ থাকায় স্টেশনে গিয়ে টিকিট করাও অসম্ভব প্রায়। সব মিলিয়ে বেশ বিড়ম্বনার মধ্যে পড়ে গেছি আমরা পরীক্ষার্থীরা, যারা ঢাকার বাইরে থেকে পরীক্ষা দিতে এসেছি।

এদিন অধিকাংশ মানুষকেই দেখা গেছে হেঁটে যাত্রা করতে। রাজধানীর সব সময়ের ব্যস্ততম সড়কগুলোও ছিল থমথমে। আর পরিস্থিতি স্বাভাবিক না হওয়া পর্যন্ত পথে গণপরিবহন নামাবেন না বলে সিদ্ধান্ত নিয়েছেন বেশির ভাগ গণপরিবহনের মালিক।

এর আগে শুক্রবার সকাল ৬টা থেকে অনির্দিষ্টকালের জন্য সব ধরনের গণপরিবহন ও পণ্য পরিবহন চলাচল বন্ধ রাখার ঘোষণা দেওয়া হয় বৃহস্পতিবার (৪ নভেম্বর)। ডিজেলের মূল্যবৃদ্ধির প্রতিবাদে পণ্য পরিবহন ও গণপরিবহন মালিকরা এ সিদ্ধান্ত নেন।

বাংলাদেশ সময়: ১৪১৬ ঘণ্টা, নভেম্বর ০৫, ২০২১
এইচএমএস/আরবি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।