ঢাকা: সাইকরাইন উপলক্ষে সকাল থেকেই পুরান ঢাকার আকাশ সেজেছে রং-বেরঙের ঘুড়িতে। তা দেখলেই মনে হয়, পাখিদের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে যেন পুরান ঢাকায় উড়তে শুরু করেছে সাকরাইনের ঘুড়ি।
শুক্রবার (১৪ জানুয়ারি) সকালে সূর্যোদয়ের পর থেকেই এ অঞ্চলের বাসাবাড়ির ছাদে চলছে ঘুড়ি ওড়ানোর প্রস্তুতি। ঘুড়ি ওড়ানোর জন্য সুতা-মাঞ্জা দেওয়া থেকে শুরু করে গান-বাজনাসহ পিঠা উৎসবেরও আয়োজন চলছে বেশ। বিপুল উৎসাহে ছোটবড় সবাই মেতে উঠেছেন সাকরাইনের আনন্দে।
বাংলা বর্ষ অনুযায়ী আজ শুক্রবার পৌষের শেষ দিন বা পৌষ-সংক্রান্তি। এই সংক্রান্তি কথাটিই পুরান ঢাকায় সাকরাইন নামে পরিচিত। আর সাকরাইনের মূল বৈশিষ্টই হলো ঘুড়ি উৎসব। এ উৎসবকে ঘিরে প্রায় একমাস আগে থেকেই শুরু হয় প্রস্তুতি। বিশেষ করে এ এলাকার দোকানিদের ঘুড়ি এবং ফানুস বানানোর তোড়জোড় লক্ষ্য করা যায় বেশ জোরেসোরে।
পুরান ঢাকার বাসাবাড়ির ছাদগুলোতে এখন কিশোর-কিশোরীদের ঢল আর হৈ-হুল্লোড়। তাদের হাত ধরে আকাশে উড়ছে চোখদার, পানদার, বলদার, দাবাদার, লেজওয়ালা, পতঙ্গ ইত্যাদি নামের ঘুড়ি। নিজের ঘুড়িকে সবচেয়ে ওপরে তোলার প্রতিযোগিতা নিয়ে রয়েছে ঘুড়ি কাটাকাটির লড়াইও। এছাড়া বেশ কয়েকটি বাসার ছাদে শুরু হয়েছে সাউন্ড সিস্টেমে গানবাজনাও।
এই এলাকার বাসিন্দাদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, দুপুরের পর থেকেই আকাশের বুকে বাড়তে থাকবে ঘুড়ির সংখ্যা। ঘরে ঘরে হবে পিঠাপুলির উৎসব। বেলা গড়িয়ে সন্ধ্যা হলেই আকাশে উড়বে রংবেরঙের ফানুস। আতশবাজির আলোয় উজ্জ্বল হবে পুরান ঢাকার আকাশ। সন্ধ্যা পার হলেই শুরু হবে সাউন্ড সিস্টেম আর নাচ-গান।
এ বিষয়ে আমিনুর রহমান নামে এই এলাকার এক বাসিন্দা বলেন, এক সময় ঘুড়ি, নাটাই আর মাঞ্জাতে সীমাবদ্ধ থাকলেও সাকরাইনের পরিসর এখন ব্যাপক। দিনের প্রথম পর্বে চলে ঘুড়ি কাটাকাটির প্রতিযোগিতা। গোত্তা খাওয়া ঘুড়ি এবং 'ভোকাট্টা' রবের সঙ্গে সাউন্ড সিস্টেমের তালে তালে গানবাজনার মাধ্যমে আনন্দ-উল্লাস চলতে থাকে শীতের মিষ্টি বিকেল জুড়ে।
সন্ধ্যা নামতেই শুরু হয়ে যায় চোখ ধাঁধানো আতশবাজির প্রদর্শনী। লেজার শো আর 'ডিস্কো লাইট' এর পাশাপাশি কেউ কেউ কেরোসিন মুখে মশালে ফুঁ দিয়ে অগ্নিকুণ্ড তৈরি করে। সন্ধ্যার আকাশে ঘুড়ির জায়গা নেয় রঙিন ফানুস। আলোর ঝলকানিতে ঢেকে যায় পুরান ঢাকার সম্পূর্ণ আকাশ।
বাংলাদেশ সময়: ১৪২০ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১৪, ২০২২
এইচএমএস/এসআইএস