ঢাকা, মঙ্গলবার, ৩১ বৈশাখ ১৪৩১, ১৪ মে ২০২৪, ০৫ জিলকদ ১৪৪৫

জাতীয়

মাস্টার্স পাস চন্দ্রশেখরের বহুরূপী পরিচয়

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৩৪৫ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২৭, ২০২২
মাস্টার্স পাস চন্দ্রশেখরের বহুরূপী পরিচয় গ্রেফতার হওয়ার পর কান্নায় ভেঙে পড়েন চন্দ্রশেখর মিস্ত্রি। ছবি: বাংলানিউজ

ঢাকা: ‘মাস্টার্স পাস করা চন্দ্রশেখর মিস্ত্রির (৪২) পেশাই প্রতারণা। শুধুমাত্র শেখর নামে পরিচয় দিয়ে আসা এই প্রতারক নিজেকে কখনো প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের চিফ কম্পট্রোলার, প্রধানমন্ত্রীর এপিএস, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর এপিএস, সেনাবাহিনী ও পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তার পরিচয় দিতেন।

বিভিন্ন পরিচয়ে তদবিরের নামে শতাধিক লোকের কাছ থেকে হাতিয়ে নিয়েছেন লাখ লাখ টাকা। ইতোপূর্বে প্রতারণার ঘটনায় গ্রেফতার হলেও জামিনে বেরিয়ে আবারও শুরু করেন প্রতারণা'।

সম্প্রতি প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের চিফ কম্পট্রোলার পরিচয়ে চন্দ্রশেখর মিস্ত্রি ঢাকা রেসিডেন্সিয়াল মডেল কলেজের অধ্যক্ষকে ফোন করে একজন ছাত্রকে ভর্তির জন্য চাপ প্রয়োগ করেন। এ ঘটনায় দায়ের করা মামলা তদন্তের ধারাবাহিকতায় এই চন্দ্রশেখরকে গ্রেফতার করে মোহাম্মদপুর থানা পুলিশ।

বুধবার (২৬ জানুয়ারি) তেজগাঁও থানাধীন নাজনীনবাগ এলাকা থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়। এ সময় তার কাছ থেকে চাকরিপ্রার্থীর সিভি, সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের চাকরির বিজ্ঞপ্তি, বিভিন্ন সরকারি প্রতিষ্ঠানের বদলির আবেদন, সরকারি স্কুল-কলেজের ভর্তির আবেদন, সরকারের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাদের নাম, মোবাইল নম্বর, একাধিক সিল, ৬টি মোবাইল ফোন, ৪টি ডেবিট কার্ড ও বিভিন্ন ব্যাংকের চেক জব্দ করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার (২৭ জানুয়ারি) দুপুরে নিজ কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা জানান তেজগাঁও বিভাগের উপ-কমিশনার (ডিসি) বিপ্লব কুমার সরকার।

তিনি বলেন, গ্রেফতার চন্দ্রশেখর মিস্ত্রি সরকারি-বেসরকারি চাকরিতে নিয়োগ, বদলি, স্কুল-কলেজে ভর্তি জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনে পাঠানো, গণভবন এবং প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে প্রবেশ পাস ও প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাতের ব্যবস্থা করে দেওয়ার কথা বলে শতাধিক লোকের কাছ থেকে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নেয়। তার আসল নাম চন্দ্রশেখর মিস্ত্রি হলেও তিনি শেখর নামে পরিচয় দিতেন।

গত ২০ জানুয়ারি প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের চিফ কম্পট্রোলার পরিচয়ে চন্দ্রশেখর মিস্ত্রি ঢাকা রেসিডেন্সিয়াল মডেল কলেজের অধ্যক্ষকে ফোন করে একজন ছাত্রকে ভর্তির জন্য চাপ প্রয়োগ করেন। এ ঘটনায় অধ্যক্ষ মোহাম্মদপুর থানায় একটি মামলা করেন। এ অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে তাকে গ্রেফতার করা হয়।  

গ্রেফতার চন্দ্রশেখরকে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদের ভিত্তিতে তিনি বলেন, প্রতারক চন্দ্রশেখর মিস্ত্রি যখন মোবাইলফোনে নিজেকে উচ্চপদস্থ সরকারি কর্মকর্তা হিসেবে পরিচয় দিতেন, আগে থেকে তার কন্ঠ নকল করার প্র্যাকটিস করে অবিকলভাবে তার মতো করে কথা বলতেন। তার মোবাইলফোনের কললিস্ট পর্যালোচনা করে এসব তথ্যের সত্যতা পাওয়া গেছে।

চন্দ্রশেখর মিস্ত্রি ২০১৬ সালে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের কর্মকর্তা পরিচয়ে প্রতারণার অভিযোগে তেজগাঁও থানায় গ্রেফতার হয়েছিল।  

এক প্রশ্নের জবাবে ডিসি বিপ্লব কুমার সরকার বলেন, তার সঙ্গে এই প্রতারণার কাজে আর কারা কারা জড়িত তা জিজ্ঞাসাবাদে জানা যাবে। এখন পর্যন্ত চন্দ্রশেখর মিস্ত্রি শতাধিক লোকের সঙ্গে প্রতারণা করেছে বলে জানা গেছে।

বাংলাদেশ সময়: ১৩৪৩ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২৭, ২০২২
পিএম/এএটি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।