ঢাকা, রবিবার, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১, ২৮ এপ্রিল ২০২৪, ১৮ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

ইসি গঠন আইন সরকারের কূটকৌশল

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৭৩৭ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২৭, ২০২২
ইসি গঠন আইন সরকারের কূটকৌশল

ঢাকা: নির্বাচন কমিশন গঠন আইন সরকারের একটি কূটকৌশল বলে অভিযোগ করেছেন বিএনপির সংসদ সদস্যরা। এটাকে ইসি গঠনের আইন না বলে অনুসন্ধান কমিটি গঠনের আইন বলেও তারা মন্তব্য করেন।

বৃহস্পতিবার (২৭ জানুয়ারি) প্রধান নির্বাচন কমিশনার ও অন্যান্য নির্বাচন কমিশনার আইন পাসের আগে আলোচনায় অংশ নিয়ে বিএনপির সংসদ সদস্য হারুনুর রশিদ ও রুমিন ফারহানা এসব কথা বলেন।

বিএনপির সদস্য হারুনুর রশিদ বলেন, সংবিধানে বলা আছে নির্বাহী বিভাগের দায়িত্ব ইসিকে সহায়তা করা। কিন্তু না করলে কী হবে তা বলা নেই। এসব নিয়ে একটি পুরো আইন হওয়া উচিত। এই আইনটি সরকারের একটি কূটকৌশল।  ২০১৪ সালে বিনা ভোটের নির্বাচন হয়েছে, ২০১৮ সালে দিনের ভোট রাতে হয়েছে। এই আইনের মাধ্যমে আগামীতে দিনের বেলা নতুন কৌশলে নির্বাচন করবে কিনা, তা নিয়ে মানুষের প্রশ্ন আছে। এখন যে রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট তাতে নিরপেক্ষ সরকার ছাড়া সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব নয়। এ বিষয়ে আলোচনার ব্যবস্থা করার দাবি জানাই।

হারুনুর রশিদ আরও বলেন, জনগণ মনে করে সরকার আইন করার নামে তাদের সাথে প্রহসন করছে। এই আইনটির সাথে ২০১৭ সালের সার্চ কমিটির প্রজ্ঞাপনে খুব একটা অমিল নেই। কোনো আইন মানুষের অকল্যাণে হলে তা করার থেকে না করাই ভালো। সার্চ কমিটিতে অন্তর্ভুক্তির যোগ্যতা একটি, তা হলো সরকারের অনুগত হওয়া। সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানের প্রধানদের সার্চ কমিটির দায়িত্ব দেওয়া হলে তাদেরও বিতর্কিত করা হবে। এই আইনে জনগণ হতাশ। তারা এটা চায় না। তাদের দাবি বর্তমান প্রধানমন্ত্রী ১৯৯৫-৯৬ ও ২০০৬ সালে  তত্ত্বাবধায়ক সরকার চেয়েছিলেন সেই তত্ত্বাবধায়ক সরকার। অবশ্যই নির্বাচনকালীন সরকারের অধীনে নির্বাচন হতে হবে। প্রধানমন্ত্রীকে অনুরোধ জানাবো, আপনি উদ্যোগ নিন। সব রাজনৈতিক দলগুলোর সাথে বসে নির্বাচনকালীন সময়ে কীভাবে নির্বাচনটি করবেন সেটা ঠিক করুন। সরকারে থাকতে একরকম বক্তব্য আর বিরোধী দলে গেলে অন্যরকম বক্তব্য ঠিন নয়।

বিএনপির আরেক সদস্য রুমিন ফারহানা বলেন, সংবিধান অনুযায়ী রাষ্ট্রপতি প্রধানমন্ত্রীর পরামর্শ অনুযায়ী কাজ করতে বাধ্য। স্বাধীনভাবে রাষ্ট্রপতি কোনো কাজ করতে পারেন না। কিন্তু রাষ্ট্রপতিকে একটি ইল্যুশন হিসেবে সামনে আনা হয়।

তিনি বলেন, আওয়ামী লীগও তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থার জন্য আন্দোলন করেছিল। তখন রজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে পারস্পরিক আস্থার ঘাটতি ছিল। এখন সে ঘাটতি আরও অনেক বেড়েছে। জাতীয় থেকে স্থানীয় সব নির্বাচন মাগুরার নির্বাচনের চেয়ে অনেক খারাপ হয়। সুতরাং ’৯৬ সালের চেয়ে এখন তত্ত্বাবধাক সরকার আরও বেশি দরকার।

রুমিন ফারহানা বলেন, আদালত বলেছিলেন, সংসদ চাইলে আরও দুটি নির্বাচন তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে হতে পারে। সংবিধান সংশোধন কমিটিতে সব দল এই ব্যবস্থা রাখার পক্ষে মত দিয়েছিল। পরে অজানা কারণে এটি বাতিল করা হয়। এখন যে পরিস্থিতি তত্ত্বাবধায়ক সরকার ছাড়া কোনো নির্বাচনই সম্ভব না। সঠিকভাবে নির্বাচন না হওয়ার কারণে বিশ্বের অনেক দেশে গৃহযুদ্ধ হয়েছে। দেশের সার্বভৌমত্বকে হুমকির মুখে ফেলেছে।

তিনি বলেন, ইসি গঠনে সংবিধানে আইন করার কথা বলা আছে কিন্তু অংশীজনের সাথে কথা না বলে তাড়াহুড়া করে আইন করা আইওয়াশ ছাড়া কিছুই নয়। এই আইনটি কেবল বিএনপি নয়, বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও সুশীল সমাজ প্রত্যাখ্যান করেছে। তারা কঠোর সমালোচনা করেছে। এটাকে ইসি গঠনের আইন না বলে অনুসন্ধান কমিটি গঠনের আইন বলা যেতে পারে।

বাংলাদেশ সময়: ১৭৩৪ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২৭, ২০২২
এসকে/এমজেএফ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।