ঢাকা, রবিবার, ৫ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১, ১৯ মে ২০২৪, ১০ জিলকদ ১৪৪৫

জাতীয়

শব্দ করে পড়লে ভুল শুধরে যায়: আরেফিন সিদ্দিক

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৭০২ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ৩, ২০২২
শব্দ করে পড়লে ভুল শুধরে যায়: আরেফিন সিদ্দিক

ঢাকা: কোমলমতি শিশুদের ছোটবেলা থেকেই শব্দ করে পড়ায় উৎসাহিত করতে প্রতিবছরের মতো এবারও বিশ্বজুড়ে উদযাপিত হচ্ছে ‘শব্দ করে পড়া দিবস-২০২২’।

এরই ধারাবাহিকতায় বুধবার (২ ফেব্রুয়ারি) এক ওয়েবিনারের আয়োজন করে স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন ‘রিড অ্যালাউড বাংলাদেশ’।

অনুষ্ঠানে বক্তারা মেধাভিত্তিক আগামী প্রজন্ম গড়তে শব্দ করে পড়ার গুরুত্ব তুলে ধরেন।

রিড অ্যালাউড বাংলাদেশের প্রতিষ্ঠাতা রূপক সিংহের সভাপতিত্বে সেমিনারে উপস্থিত ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) সাবেক উপাচার্য ড. আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক, কারিগরি ও মাদরাসা শিক্ষা বিভাগের অতিরিক্ত সচিব ড. মো. ওমর ফারুক, মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব রঞ্জিত কুমার দাস, জাতীয় শিশু হাসপাতালের অধ্যাপক ডা. এন কে ঘোষ, খুলনা মেট্রোপলিটন পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার সরদার রাকিবুল ইসলাম। এছাড়া অনুষ্ঠানে দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে শিশু-কিশোর ও অভিভাবকরাও যুক্ত হন।

সেমিনারে শিশুদের শব্দ করে পড়ার তাগিদ দিয়ে আরেফিন সিদ্দিক বলেন, শব্দ করে পড়ার প্রয়োজনীয়তা বহুমাত্রিক। মানুষকে সুন্দরভাবে বোঝাতে সক্ষম হতে চাইলে শ্রুতিমধুরভাবে কথা বলতে জানতে হবে। এগুলো প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষার অংশ। আমরা দেখতে পাই বিশ্ববিদ্যালয়ে এসেও অনেক শিক্ষার্থী সঠিক উচ্চারণে কথা বলতে পারে না। কারণ তার ভুল-ক্রুটি কেউ শুধরে দেয়নি। শব্দ করে পড়ার অভ্যাস তৈরি করলে শিশুদের ছোটবেলা থেকেই এ ভুলগুলো সম্পর্কে সচেতন করা সম্ভব হবে।

ড. মো. ওমর ফারুক জানান, ডিজিটাল ডিভাইস সার্বক্ষণিক ব্যবহারের ফলে আজকের শিশুরা অনেক বেশি আত্মকেন্দ্রিক হয়ে উঠছে। তারা মোবাইল ফোনেই পৃথিবীটা দেখে। এ কারণে তাদের মধ্যে তৈরি হয়েছে জড়তাও। শিশুদের অন্যদের সঙ্গে মেলামেশা ও তাদের কথা বলার অভ্যাস গড়ে তুলতে শব্দ করে পড়ার ওপর গুরুত্ব দেওয়া জরুরি।

অধ্যাপক ডা. এন কে ঘোষ বলেন, আমরা যখন শব্দ করে পড়ি তখন অনেকগুলো ইন্দ্রিয় একসঙ্গে ওই বিষয়টি মনে রাখতে সাহায্য করে। তাই শিশুর বুদ্ধিবৃত্তিক বিকাশে শব্দ করে পড়ার অভ্যাস গড়ে তোলার প্রয়োজনীয়তা অপরিসীম।  

রঞ্জিত কুমার দাস বলেন, শব্দ করে পড়লে পড়ায় মনোযোগ ধরে রাখা যায়, উচ্চারণটা সঠিক না ভুল, তা অন্যরা শুধরে দিতে পারে। আমরা যখন ছোট ছিলাম পরিবার থেকে এ বিষয়টির ওপর জোর দেওয়া হতো। এখন হয়তো আগের মতো শব্দ করে পড়া নিয়ে অতটা ভাবা হয় না।

রূপক সিংহ অনুষ্ঠানে অংশ নেওয়া শিশুদের উদ্দেশে বলেন, তোমরা এখন যে শিক্ষা নেবে, সেভাবেই ভবিষ্যতে নিজেকে তৈরি করবে। এজন্য তোমাদের সঠিক দিকনির্দেশনা দিতে আমাদের আজকের এ আয়োজন। মনে রাখবে, শব্দ করে পড়ার অভ্যাসের সঙ্গে নিবিড় পারিবারিক ও সামাজিক সম্পর্ক রয়েছে। তাই ‘শব্দ করি পড়ি, নিজেকে আবিষ্কার করি’ এ প্রত্যয়ে তোমরা দেশ ও জাতিকে সমৃদ্ধ করে তোলো, এটাই আমার চাওয়া।

ভার্চ্যুয়াল সেমিনারে গল্প কথন, কবিতা আবৃত্তি, গান ও উপস্থিত বক্তৃতার আয়োজন করা হয়। অনুষ্ঠানে অংশ নেওয়া শিশুরা শব্দ করে পড়ার গুরুত্ব সম্পর্কে তাদের নিজস্ব চিন্তা-ভাবনা তুলে ধরে। এদের মধ্য থেকে ৫০ জনকে রিড অ্যালাউড বাংলাদেশের স্থায়ী সদস্য পদ দেওয়া হবে বলে জানিয়েছে সংগঠনটি। এরপর তাদের সঙ্গে নিয়ে পরিচালনা করা হবে বছরব্যাপী ‘শব্দ করে পড়া’ বিষয়ক ক্যাম্পেইন।

রিড অ্যালাউড বাংলাদেশ বিগত বেশ কয়েক বছর ধরেই বাংলাদেশে ‘বিশ্ব শব্দ করে পড়া দিবস’ পালন করে আসছে।

বাংলাদেশ সময়: ১৬৫৯ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ০৩, ২০২২
এমআইএইচ/আরবি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।