ঢাকা, রবিবার, ২৮ বৈশাখ ১৪৩১, ১২ মে ২০২৪, ০৩ জিলকদ ১৪৪৫

জাতীয়

কাজ শেষ না হতেই বেহাল সড়ক!

হারুন-অর-রশীদ, ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২০২৪ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ৫, ২০২২
কাজ শেষ না হতেই বেহাল সড়ক!

ফরিদপুর: ফরিদপুরের বোয়ালমারীতে সাড়ে ১৫ কোটি টাকার বেশি ব্যয়ে নবনির্মিত কাজী সিরাজুল ইসলাম মহিলা কলেজের সামনে থেকে মধুখালীর নওয়াপাড়া পর্যন্ত সড়কের অবস্থা বেহাল। স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর কর্তৃক বাস্তবায়নাধীন সড়কটি সংস্কারসহ প্রশস্তকরণের পর ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় চরম  হতাশ এলাকাবাসী।

শনিবার (৫ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, সড়কটির মাত্র দুই সপ্তাহ আগে সংস্কার করা স্থানেরও পিচ উঠে যাচ্ছে। কোথাও সড়ক ফেটে চৌচির হয়ে গেছে।

এলাকাবাসীর অভিযোগ, নিম্নমানের কাজের জন্যই সড়কের এ বেহাল দশা। নিম্নমানের ইট ও বিটুমিন দিয়ে নির্মাণ করা হচ্ছে সড়ক। গত ১০ দিনে সড়কটির কোন কোন স্থান অন্তত চারবার সংস্কার করা হয়েছে। তবে ঠিকাদারের দাবি, ভারি ট্রাক চলার কারণেই সদ্য সংস্কার করা সড়কটি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

জানা গেছে, উপজেলার নতুন বাসস্ট্যান্ড সংলগ্ন কাজী সিরাজুল ইসলাম মহিলা কলেজের সামনে থেকে ময়নার ভিতর দিয়ে মধুখালীর নওয়াপাড়া পর্যন্ত ১২ দশমিক ১৫ কিলোমিটার দীর্ঘ সড়কটির সংস্কার কাজ চলছে। প্রায় সাড়ে ১৫ কোটি ৫৮ লাখ ৯১ হাজার ৪৯১ টাকা ব্যয়ে এই সংস্কার এবং প্রশস্তকরণের কাজ করছে মেসার্স জাহিদ অ্যান্ড ব্রাদার্স নামের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান।

উপজেলার ঘোষপুর ইউনিয়নের ৭ নং ওয়ার্ড মেম্বার দেলোয়ার হোসেন বলেন, সড়কটি ১৫/২০ দিন আগে করা হয়েছে। এখন পা দিলেই পিচ উঠে যায়। ময়লার ওপর ঢালাই দিয়েছে ঠিকাদার।

ঘোষপুর ইউনিয়নের গোহাইলবাড়ি গ্রামের বাসিন্দা মুকুল মিয়া বলেন, বালুর ওপর কার্পেটিং করায় এক সপ্তাহ পরই পিচ উঠে যাচ্ছে।

ফরিদপুর জজ কোর্টের আইনজীবী অ্যাডভোকেট গাজী শাহিদুজ্জামান লিটন তার ফেসবুকে স্ট্যাটাস দিয়েছেন, ‘শুনলাম ফরিদপুরের বোয়ালমারী উপজেলার কাজী সিরাজুল ইসলাম মহিলা কলেজ টু গোহাইলবাড়ি সড়ক নির্মাণ কাজে ‘সমুদ্র-চুরি’ হয়েছে। ’

এ বিষয়ে সড়কটির ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের মালিক মো. জাহিদুল হোসেন জাহিদ বলেন, ১২কিলোমিটার সড়কের ১১ কিলোমিটারে কোন সমস্যা নেই। বাকি এক কিলোমিটারে ১০ চাকার বালুবাহী ট্রাক চলাচলের কারণে এমনটি হয়েছে।

তিনি আরও বলেন, বিটুমিন গলে শুকাতে ১৫ দিন সময় লাগে। কিন্তু সড়কের গোহাইলবাড়ি বাজার হতে চণ্ডিবিলা মাঝিপাড়া পর্যন্ত এক কিলোমিটার সড়কে প্রতিদিন রাতেই বালুবাহী ১০ চাকার ট্রাক চলে। এতে আমার পঞ্চাশ লাখ টাকা লোকসান হবে।

এ ব্যাপারে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের ফরিদপুর জেলা নির্বাহী প্রকৌশলী কে এম ফারুক হোসেন বলেন, কার্পেটিং শুকাতে সময় লাগে। আমাদের দেশের সড়কগুলো ১০ চাকার ট্রাক চলাচলের উপযোগী না। নতুন সড়কে ১০ চাকার বালুবাহী ট্রাক চলায় পিচ উঠে গেছে। আমরা পুরো টিমই সড়কের সংস্কার কাজ পরিদর্শন করেছি। ১০ চাকার ট্রাক চলাচল বন্ধের জন্য উপজেলা চেয়ারম্যান ও ইউএনওর সহায়তা চেয়েছি। তারা সহায়তার আশ্বাস দিয়েছেন।

বাংলাদেশ সময়: ২০২৪ ঘণ্টা, ৫ ফেব্রুয়ারি, ২০২২
এমএমজেড

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।