ঢাকা, সোমবার, ২৯ বৈশাখ ১৪৩১, ১৩ মে ২০২৪, ০৪ জিলকদ ১৪৪৫

জাতীয়

ব্রিটিশ মিউজিয়ামে স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তী উদযাপন

ডিপ্লোম্যাটিক করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৪৩১ ঘণ্টা, মার্চ ৫, ২০২২
ব্রিটিশ মিউজিয়ামে স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তী উদযাপন ব্রিটিশ মিউজিয়ামে প্রথমবারের মতো বাংলাদেশের স্বাধীনতা উদযাপন

ঢাকা: বাংলাদেশের স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তী এবং বঙ্গবন্ধুর জন্মশত বার্ষিকী উদযাপনের অংশ হিসেবে লন্ডনের বাংলাদেশ হাইকমিশন ও লন্ডন বারা অব ক্যামডেন কাউন্সিল যৌথভাবে যুক্তরাজ্যের অন্যতম ঐতিহাসিক স্থাপনা ব্রিটিশ মিউজিয়ামে বাংলাদেশের স্বাধীনতার সূবর্ণ জয়ন্তী উদযাপন করেছে।  

ব্রিটিশ মিউজিয়ামে এই প্রথমবারের মতো বাংলাদেশের স্বাধীনতা উদযাপন করা হলো।

শনিবার (৫ মার্চ) লন্ডনের বাংলাদেশ হাইকমিশন এ তথ্য জানায়।

বাংলাদেশের জাতীয় পতাকার রং লাল-সবুজে আলোকিত ব্রিটিশ মিউজিয়ামে আয়োজিত উৎসবমুখর অনুষ্ঠানে বক্তৃতাকালে যুক্তরাজ্যে নিযুক্ত বাংলাদেশের হাইকমিশনার সাইদা মুনা তাসনিম বলেন, পঞ্চাশ বছর আগে বাংলাদেশের মানুষ সর্বোচ্চ ত্যাগ স্বীকার করে এবং রক্তের বিনিময়ে আমাদের জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ক্যারিশম্যাটিক নেতৃত্বে স্বাধীনতা অর্জন করেছে। বঙ্গবন্ধু বাংলাদেশকে একটি গণতান্ত্রিক, ধর্মনিরপেক্ষ, প্রগতিশীল এবং অন্তর্ভুক্তিমূলক গণপ্রজাতন্ত্র হিসেবে প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। আজ মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দূরদর্শী নেতৃত্বে ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধের মূল্যবোধে পরিচালিত বাংলাদেশ এশিয়ার অন্যতম সমৃদ্ধ ও স্থিতিস্থীল দেশ হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে।

ব্রিটিশ-বাংলাদেশি কমিউনিটির অবদানের কথা উল্লেখ করে হাইকমিশনার বলেন, ১৯৭১ সালে যুক্তরাজ্য প্রবাসী বাংলাদেশিরা দেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের স্বপক্ষে বিদেশে সবচেয়ে অদম্য ফ্রন্ট গড়ে তুলেছিলেন। আজো তাঁরাই দুই কমনওয়েলথ দেশের মধ্যে সংযোগের ও ঐতিহাসিক বন্ধুত্বের সবচেয়ে শক্তিশালী স্তম্ভ।

যুক্তরাজ্যের বিরোধীদলীয় নেতা এবং হলবর্ন ও সেন্ট প্যানক্রাসের (ক্যামডেন) এমপি স্যার কিয়ের স্টারমার অনুষ্ঠানে বলেন, বাংলাদেশের প্রতিষ্ঠাতা বঙ্গবন্ধুর সঙ্গে লেবার পার্টির প্রধানমন্ত্রী হ্যারল্ড উইলসনের বিশেষ সম্পর্ক ছিল, যা আমাদের দুই দেশের মধ্যে ঘনিষ্ঠ বন্ধুত্বের প্রতীক। আমার নেতৃত্বে লেবার পার্টি এই যোগসূত্রকে আরও গভীর ও শক্তিশালী করার প্রচেষ্টা অব্যাহত রাখবে।

স্যার কিয়ের স্টারমার ২০১৬ সালে তাঁর বাংলাদেশ সফরের কথা স্মরণ করে আবারও বাংলাদেশ ভ্রমণের আশা প্রকাশ করেন। তিনি বঙ্গবন্ধুর জন্মশত বার্ষিকী উপলক্ষে হাই কমিশন আয়োজিত ‘বঙ্গবন্ধু ও ব্রিটেন বাংলাদেশ ৫০ এট ব্রিটিশ মিউজিয়াম’ শীর্ষক একটি স্মারক চিত্র প্রদর্শনীরও উদ্বোধন করেন।

অনুষ্ঠানে লন্ডনের মেয়র সাদিক খান বলেন, ব্রিটিশ জনগণ ও যুক্তরাজ্য প্রবাসী বাংলাদেশিসহ বিভিন্ন কমিউনিটির মানুষ ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের স্বপক্ষে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিলেন। আমাদের দুই দেশের মধ্যে মহান সম্পর্কের ক্ষেত্রে আজো তাঁরা সবিশেষ ভূমিকা পালন করে চলেছেন। বিশেষ করে লন্ডনে বাংলাদেশি কমিউনিটি বিভন্ন ক্ষেত্রে উল্লেখযোগ্য অবদান রাখছেন।

ক্যামডেনের কাউন্সিলর ও ক্যাবিনেট মেম্বার ফর ইয়ং পিপল, ইক্যুয়ালিটিল অ্যান্ড কোহেশন আবদুল হাই বলেন, আমরা ক্যামডেনে বাংলাদেশ হাই কমিশন এবং ব্রিটিশ মিউজিয়ামের সহযোগিতায় বাংলাদেশের স্বাধীনতার সূবর্ণ জয়ন্তি উদযাপন করতে পেরে খুবই আনন্দিত।

অনুষ্ঠানে ব্রিটিশ মিউজিয়ামের পরিচালক হার্টউইগ ফিশার বলেন যুক্তরাজ্যের এক নম্বর পর্যটক আকর্ষণ ব্রিটিশ মিউজিয়ামে বাংলাদেশ ৫০ উদযাপনের আয়োজন করতে পেরে আমরা সম্মানিত। তিনি বলেন, এই মিউজিয়ামে বাংলাদেশের ঐতিহাসিক নিদর্শন প্রদর্শন করা হচ্ছে এবং ভবিষ্যতে বাংলাদেশ থেকে সমসাময়িক শিল্প ও অন্যান্য নিদর্শন সংগ্রহ করা হবে।

অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন ক্যামডেন কাউন্সিলের লিডার জর্জিয়া গোল্ড এবং বিশিষ্ট মুক্তিযোদ্ধা ও ব্রিটিশ-বাংলাদেশি সমাজসেবী মাহমুদ হাসান।

অনুষ্ঠানে অ্যাঞ্জেলা রেইনার এমপি, বিরোধী দলের উপনেতা, ব্যারনেস প’লা উদ্দিন, রোশনারা আলী এমপি, ক্যাথরিন ওয়েস্ট এমপি, স্যার আখলাক চৌধুরী, ব্রিটিশ হাইকোর্টের সাবেক বিচারপতি, রবার্ট ইভান্স, সাবেক এমইপিসহ ক্রস-পার্টির নির্বাচিত কর্মকর্তা ও প্রতিনিধি এবং ব্রিটিশ-বাংলাদেশি কমিউনিটির সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।  

এতে ব্রিটিশ-বাংলাদেশি কমিউনিটির এবং ক্যামডেন মিউজিক এবং নিউহ্যাম মিউজিক ট্রাস্ট চিলড্রেনস কয়্যার-এর শিল্পীরা নৃত্য, সঙ্গীত এবং আবৃত্তি পরিবেশন করে।

বাংলাদেশ সময়: ১৪২৫ ঘণ্টা, মার্চ ০৫, ২০২২
টিআর/এসআইএস
 

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।