সাভার (ঢাকা): সাভারে বকেয়া বাসা ভাড়ার জন্য সুমাইয়া আক্তার (১৮) নামে জাতীয় জুডো দলের এক নারী খেলোয়াড়কে পিটিয়ে রক্তাক্ত করার অভিযোগ পাওয়া গেছে বাড়িওলার বিরুদ্ধে। মঙ্গলবার (৮ মার্চ) নারী দিবসে রাত সাড়ে ১০টার দিকে আশুলিয়ার জামগড়ার মোল্লা বাড়ি এলাকায় এ ঘটনা ঘটেছে।
ভুক্তভোগী সুমাইয়া আক্তার ২০১৯ সালে সাউথ এশিয়ান গেমসে স্বর্ণ পদক জিতেছিলেন। তিনি এবার এসএসসি পরীক্ষার্থী। তিনি শেরপুরের নালিতাবাড়ী থানার সমুরচুরা গ্রামের মোন্তাজ আলীর মেয়ে। পরিবার আশুলিয়ার জামগড়ার মোল্লা বাড়ি এলাকায় শফিকুল ইসলামের ভাড়া বাসায় বসবাস করে।
সুমাইয়া আক্তার জানান, সামনে তার এসএসসি পরীক্ষা। বাবা, মা ও ভাই জামগড়া এলাকায় ভাড়া বাসায় থাকেন। তবে তিনি সেখানে থাকেন না, জুড়ো ফেডারেশনেই থাকেন। দুই-তিন দিন আগে মায়ের সঙ্গে থাকবেন বলে জামাগড়ায় আসেন।
তিনি বলেন, রাতে বাসায় বসে পড়ছিলাম। তখন বাড়িওয়ালার স্ত্রী এসে বকেয়া ভাড়ার জন্য চেঁচামেচি করছিলেন। দুই-তিন মাসের ভাড়া পেতেন তারা। আমি বলছি, যা পান দিয়ে দেব। এনিয়ে কথা কাটাকাটির এক পর্যায়ে উনি (বাড়িওয়ালার স্ত্রী) আমাকে থাপ্পড় দেন। আমিও তখন তাকে থাপ্পড় দিয়েছি। এরপর উনি স্বামী শফিকুল ও ছেলে হৃদয়কে ডেকে নিয়ে এসে আমাকে এলোপাতাড়ি মারধর করেন। আমার আম্মু বাধা দিতে গেলে তাকেও মারধর করে। এসময় লোহার পাইপ জাতীয় কিছু একটা দিয়ে আমার মাথায় আঘাত করে রক্তাক্ত করছে ওনারা। থানায় যাওয়ার পর পুলিশ আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দিয়েছে।
অভিযুক্ত বাড়ি মালিক শফিকুল ইসলাম বলেন, ‘নিচতলায় দুই রুমের ফ্লাট নিয়া থাকে হ্যারা। ৬ হাজার ট্যাকা ভাড়া। ৪০ হাজার ট্যাকা বাসা ভাড়া পাওনা। গেছে মাসে আমারে ৬ হাজার ট্যাকা দিছে। তিন মাস আগে হ্যারা বাসা ছাইরা দিবো কইছে। কিন্তু এই মাস শেষ হইয়া গেলেও যায় নাই। এখন আমরাতো আরেক ভাড়াটিয়ারে বাসা ভাড়া দিয়া দিছি। তারাও অন্যহানে বাসা ছাইড়া দিয়া এহন এই বাসায় উঠবো। এই জন্য আমার ওয়াইফ রাতের বেলা তাগো কাছে গেছিলো। তখন কথা কাটাকাটির সময় হ্যার মাইয়াডা আমার বউরে মারছে। মাইয়াডা ক্যারাতি জানেতো। আমার অসুস্থ ওয়াইফরে মাইরা কিছু থোয় নাই। আপনার বিশ্বাস না হলে বাসার ভাড়াটিয়ারা আছিলো, আইসা তাগো জিগায় দেখেন। ’
এ সময় সুমাইয়াকে তার স্ত্রী আগে থাপ্পড় দেওয়ার বিষয়টি অস্বীকার করেন তিনি। তবে সুমাইয়া কীভাবে রক্তাক্ত হলো এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, 'হয়ত ঘরের মইদ্দে খাট আছে, কতকিছু আছে। এখন কিয়ে লাগছে ক্যামনে কমু কন?'
আশুলিয়া থানার ডিউটি অফিসার উপ-পরিদর্শক (এসআই) তানিম আহমেদ বলেন, রাতে এক নারী রক্তাক্ত অবস্থায় এসেছিলেন। তাকে হাসপাতালে গিয়ে চিকিৎসা নেওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। পরবর্তীতে লিখিত অভিযোগের ভিত্তিতে ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলে এ বিষয়ে আইনগত সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।
বাংলাদেশ সময়: ১০৩২ ঘণ্টা, ৯ মার্চ, ২০২২
এসএফ/এমএমজেড