ঢাকা, শনিবার, ৪ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১, ১৮ মে ২০২৪, ০৯ জিলকদ ১৪৪৫

জাতীয়

অভাবের তাড়নায় আফরোজাকে খুন করেন গাড়িচালক হৃদয়

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৭১৪ ঘণ্টা, মার্চ ১৬, ২০২২
অভাবের তাড়নায় আফরোজাকে খুন করেন গাড়িচালক হৃদয় হৃদয় বেপারী

ঢাকা: অনলাইন জুয়ায় আসক্ত মো. হৃদয় বেপারীর (৩৪) তিন মাসের বাড়ি ভাড়া বাকি পড়ে যায়। এদিকে  ভুক্তভোগী আফরোজা সুলতানাকে প্রায়ই ব্যাংকে টাকা জমা দিতে দেখে ফন্দি আটেন তিনি।

সুযোগ বুঝে বাসা থেকে টাকা-স্বর্ণালংকার হাতিয়ে নিতেই ছুরি দিয়ে গলা কেটে তাকে খুন করেন।

বুধবার (১৬ মার্চ) দুপুরে রাজধানীর ডিএমপি মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান ডিএমপির গোয়েন্দা শাখার (ডিবি) অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার এ কে এম হাফিজ আক্তার।

তিনি বলেন, গত ১৩ মার্চ বিকাল আনুমানিক বিকেল পৌনে ৬টা থেকে সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার মধ্যে কোনো এক সময় রাজধানীর মধ্য বাড্ডার গুদারাঘাট সংলগ্ন ১০ নম্বর রোডের জ-৪২/১ বাসার ২য় তলা থেকে আফরোজা সুলতানার গলা কাটা মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। তিনি সেভেন সার্কেল বাংলাদেশ লিমিটেডের (গুলশান-২) এমআইএস বিভাগের উপব্যবস্থাপক ছিলেন।

হত্যাকাণ্ডের পর থানা পুলিশের পাাশাপাশি ছায়া তদন্ত শুরু করে ডিবি পুরিশ। তদন্তে তথ্য প্রমাণের ভিত্তিতে ও তথ্য প্রযুক্তির সহায়তায় ভুক্তভোগীর গাড়িচালক হৃদয় বেপারীকে ১৫ মার্চ (মঙ্গলবার) রাতে বাড্ডা এলাকায় অভিযান চালিয়ে গ্রেফতার করে ডিবির গুলশান বিভাগের একটি টিম। গ্রেফতারের পর প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে আসামি হৃদয় হত্যার বিষয়টি স্বীকার করেন।

তিনি বলেন, প্রথমিক জিজ্ঞাসাবাদে আসামি হৃদয় জানায়, ভুক্তভোগী আফরোজাকে সুলতানাকে ছুরি দিয়ে গলা কেটে হত্যা করা হয়। এরপর তার বাসা থেকে টাকা ও স্বর্ণালংকার লুট করে। পরে পালানোর সময় ঘটনাস্থলের পাশের নির্মাণাধীন একটি ভবনে হত্যাকাণ্ডের ব্যবহৃত ছুরি লুকিয়ে রাখে। যদিও তা গোয়েন্দা পুলিশ উদ্ধার করেছে। সেই সঙ্গে টাকা ও স্বর্ণালংকারও জব্দ করেছে।

তিনি আরও জানান, জিজ্ঞাসাবাদে আসামি বলেছে, সে (হৃদয়) ৫ম শ্রেণি পর্যন্ত লেখাপড়া করেছে, ৩ ছেলের জনক। ২০০৫ সালে ড্রাইভিং শিখে বিভিন্ন জায়গায় গাড়িচালক হিসেবে কাজ করেছেন। সর্বশেষ ২০১৫ সাল থেকে গুলশান-২ এর সেভেন সার্কেল বাংলাদেশ লিমিটেডে গাড়িচালক হিসেবে চাকরি নেন। এরপর ভুক্তভোগী আফরোজা সুলতানার গাড়িচালক হিসেবে কাজ করতেন।

সম্প্রতি তিনি অনলাইন জুয়ায় আসক্ত হয়ে পড়েন। এ কারণে গত তিন মাস বাসা ভাড়া দিতে পারেননি। এমন অভাবে পড়ে চিন্তা করেন বেশ কিছু টাকা হলে দূরে কোথাও গিয়ে অন্য ব্যবসা করে সংসার চালাবেন। তখন মাথায় আসে তার ম্যাডামের কাছে অনেক টাকা ও স্বর্ণালংকার আছে। প্রায়ই তাকে ব্যাংকে টাকা জমা দিতে দেখতেন। তাই পরিকল্পনা করে আফরোজা সুলতানাকে খুন করেন হৃদয়।

গ্রেফতার আসামির বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে বলেও জানান এই পুলিশ কর্মকর্তা।

বাংলাদেশ সময়: ১৭১৩ ঘণ্টা, মার্চ ১৬, ২০২২
এসজেএ/এমএমজেড

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।