ঢাকা: নিউইয়র্কভিত্তিক আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থা হিউম্যান রাইটস ওয়াচ (এইচআরডব্লিউ) মনে করে বাংলাদেশে নির্যাতন, গুম ও বিচারবহির্ভূত হত্যার গুরুতর অভিযোগ নিয়ে জাতিসংঘের উদ্বেগের বিষয়ে দেশটির সরকারের অর্থপূর্ণভাবে জবাব দেওয়া উচিত। বৃহস্পতিবার (১৭ মার্চ) এইচআরডব্লিউ এক বিবৃতিতে এ কথা বলেছে।
বিবৃতিতে উল্লেখ করা হয়, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এরই মধ্যে গ্লোবাল ম্যাগনিটস্কি হিউম্যান রাইটস অ্যাকাউন্টেবিলিটি অ্যাক্টের আওতায় গুরুতর মানবাধিকার লঙ্ঘনের জন্য বাংলাদেশের র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়নের (র্যাব) ওপর নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে। এই প্রেক্ষাপটে জাতিসংঘের শান্তিরক্ষা কার্যক্রম থেকে র্যাবকে বাদ দেওয়া উচিত।
এইচআরডব্লিউর বিবৃতিতে বলা হয়, গত ১৪ মার্চ জাতিসংঘ মানবাধিকার বিষয়ক বিশেষজ্ঞরা আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থাগুলোর সঙ্গে সক্রিয়তা-সহযোগিতার কারণে গুমের শিকার ব্যক্তিদের আত্মীয়স্বজন ও মানবাধিকারকর্মীদের বিরুদ্ধে প্রতিহিংসামূলক কর্মকাণ্ড দ্রুত বন্ধে বাংলাদেশ সরকারের প্রতি আহ্বান জানান।
নির্যাতনের বিরুদ্ধে কনভেনশনের অধীন ২০১৯ সালে পর্যালোচনায় উঠে আসা নির্যাতনের অভিযোগের বিষয়ে প্রতিক্রিয়া জানাতে প্রতিশ্রুতি অনুসরণের জন্য ৩ মার্চ বাংলাদেশ সরকারের প্রতি আহ্বান জানায় জাতিসংঘের মানবাধিকারবিষয়ক হাইকমিশনার কার্যালয়। যেটা দুই বছরের বেশি সময় ধরে উপেক্ষা করা হচ্ছে।
এইচআরডব্লিউর এশিয়া অঞ্চলের পরিচালক ব্র্যাড অ্যাডামস বলেন, বাংলাদেশ সরকার জাতিসংঘে বৃহত্তর প্রভাব অর্জন করতে চাইছে। একই সঙ্গে তারা বাংলাদেশের নিরাপত্তা বাহিনী কর্তৃক মানবাধিকার লঙ্ঘনের বিষয়ে জাতিসংঘের তদন্তকে উপেক্ষা করছে। নির্যাতনের অভিযোগ উপেক্ষা ও সুনির্দিষ্ট আইনকানুন মেনে চলতে ব্যর্থতার মাধ্যমে বাংলাদেশের কর্তৃপক্ষ জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা কার্যক্রমে দেশটির অবস্থানকে বিপন্ন করছে।
বাংলাদেশের মানবাধিকার গোষ্ঠীগুলোর ভাষ্যমতে, ২০০৯ সাল থেকে এ পর্যন্ত প্রায় ৬০০ ব্যক্তিকে নিরাপত্তা বাহিনী গুম করেছে। তবে নিরাপত্তা বাহিনী কর্তৃক নিয়মিত গুমের অভিযোগ বাংলাদেশ সরকার বারবার অস্বীকার করে আসছে।
এইচআরডব্লিউ বলেছে, মানবাধিকার পরিস্থিতি নিয়ে জাতিসংঘের উদ্বেগ উপেক্ষা করার অভ্যাস বাংলাদেশ সরকারের রয়েছে।
বাংলাদেশ সময়: ১৫২০ ঘণ্টা, মার্চ ১৮, ২০২২
টিআর/এমএমজেড