খুলনা: খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের আচার্য জগদীশচন্দ্র বসু একাডেমিক ভবনের সাংবাদিক লিয়াকত আলী মিলনায়তনে ইনস্টিটিউশনাল কোয়ালিটি অ্যাসুরেন্স সেলের (আইকিউএসি) উদ্যোগে শিক্ষক ও কর্মকর্তাদের নয় দিনব্যাপী ই-নথি শীর্ষক ওরিয়েন্টেশন শুরু হয়েছে।
এ উপলক্ষে শুক্রবার (১৮ মার্চ) সকাল ১০টার দিকে আয়োজিত উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. মাহমুদ হোসেন।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন বিশ্ববিদ্যালয়ের মঞ্জুরী কমিশনের সদস্য প্রফেসর ড. মো. আবু তাহের।
তিনি বলেন, ২০০৮ সালে বর্তমান সরকারের নির্বাচনী অঙ্গীকার ছিল ডিজিটাল বাংলাদেশ গঠন। ইতোমধ্যে দেশ এক্ষেত্রে অনেক এগিয়েছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দৃঢ় নেতৃত্ব ও দূরদর্শিতার ফলে দেশ করোনা মহামারির মধ্যে স্থবিরতা কাটিয়ে উঠতে সক্ষম হয়েছে। ডিজিটাল সুবিধার ফলে রাষ্ট্র ও সরকার পরিচালনায় সর্বোচ্চ পর্যায় থেকে শুরু করে তৃণমূল পর্যন্ত সরকারি-বেসরকারি কার্যক্রম এ সময় সচল ছিল। বিশেষ করে শিক্ষাকার্যক্রম সশরীরে বন্ধ থাকলেও তা অনলাইনে এবং পরে ব্লেন্ডিং পদ্ধতিতে চালিয়ে নেওয়া সম্ভব হয়েছে। প্রকৃতপক্ষে বাংলাদেশে ডিজিটাল কর্মসূচি সব ক্ষেত্রে বৈপ্লবিক পরিবর্তন এনেছে। এ কারণে দেশ সব ক্ষেত্রে দ্রুত এগিয়ে যাচ্ছে। ই-নথি কার্যক্রমের ফলে সরকারের সিদ্ধান্ত গ্রহণ ও বাস্তবায়ন দ্রুততার সঙ্গে সম্পন্ন হচ্ছে। সব ক্ষেত্রে ম্যানুয়াল প্রথা থেকে ই-নথি চালু হলে দেশ নির্ধারিত ’৪১ সালের আগেই উন্নত রাষ্ট্রে উন্নীত হবে বলে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন।
আবু তাহের বলেন, ই-নথি প্রচলনে সরকারি অফিসিয়াল কার্যক্রম অনেকটা এগিয়েছে। শিক্ষা সেক্টরে প্রাতিষ্ঠানিক ক্ষেত্রে ইউজিসি ই-নথি প্রচলনে অগ্রণী অবস্থানে রয়েছে। ইউজিসিতে এখন সব কর্মকাণ্ডের ৯০ শতাংশের বেশি কাজ ই-নথির আওতায় সম্পন্ন হচ্ছে। বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে ই-নথি প্রচলন হলে উচ্চশিক্ষায় নতুন গতি সঞ্চার হবে। একইসঙ্গে সব ক্ষেত্রে স্বচ্ছতা, জবাবদিহিতা ও দায়িত্বশীল ব্যবস্থাপনা প্রতিষ্ঠা হবে।
তিনি আরও বলেন, ই-নথি স্বচ্ছ কার্যক্রম নিশ্চিত করতে অত্যন্ত কার্যকর ভূমিকা রাখে।
আবু তাহের বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের মূল লক্ষ্য জ্ঞান সৃজন, জ্ঞান বিতরণ ও জ্ঞান সংরক্ষণ। এ গুরুত্বপূর্ণ দিকগুলো যথাযথভাবে ও দ্রুত বাস্তবায়নে ই-নথি অত্যন্ত কার্যকরী ভূমিকা রাখতে পারে। পরে তিনি ই-নথি বিষয়ক একটি পেপার উপস্থাপন করেন।
সভাপতির বক্তব্যে উপাচার্য বলেন, খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়কে পেপারলেস বিশ্ববিদ্যালয়ে পরিণত করতে নানামুখী উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে। ইতোমধ্যে বেশকিছু পদক্ষেপ বাস্তবায়ন করা হয়েছে এবং আরও কিছু কাজ চলমান রয়েছে। ই-নথি প্রচলনের জন্য ওরিয়েন্টেশন তারই অংশ। আমরা খুব শিগগিরই বিশ্ববিদ্যালয়ের সব ক্ষেত্রে ই-নথি ব্যবস্থাপনা প্রচলনের মাধ্যমে বিশ্ববিদ্যালয়ের সার্বিক কাজ গতিশীল করতে সক্ষম হবে বলে আশা করি। তিনি ই-নথি প্রশিক্ষণের সহায়তাসহ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা-গবেষণা ও উন্নয়ন কার্যক্রমে ইউজিসির আন্তরিক সহযোগিতার জন্য চেয়ারম্যান, সদস্য এবং সচিবসহ সব পর্যায়ের বিভাগীয় প্রধান ও কর্মকর্তা-কর্মচারীদের ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানান।
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য প্রফেসর ড. মোসাম্মাৎ হোসনে আরা, বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশনের সচিব ড. ফেরদৌস জামান ও কমিশনের আইএমসিটির পরিচালক মোহাম্মদ মাকসুদুর রহমান ভূঁইয়া।
কর্মশালায় স্বাগত বক্তব্য রাখেন আইকিউএসির পরিচালক প্রফেসর ড. মোহাম্মদ জিয়াউল হায়দার। এ সময় বিশ্ববিদ্যালয়ের ডিন, রেজিস্ট্রার (ভারপ্রাপ্ত), ডিসিপ্লিন প্রধান, বিভাগীয় প্রধান, শাখা ও অফিসের প্রশিক্ষণার্থী কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
প্রশিক্ষণে রিসোর্স পারসন হিসেবে সংশ্লিষ্ট বিষয়ে প্রশিক্ষণ পরিচালনা করেন বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশনের আইএমসিটির পরিচালক মোহাম্মদ মাকসুদুর রহমান ভূঁইয়া, উপ-পরিচালক ইঞ্জিনিয়ার মোহাম্মদ মনির উল্লাহ ও প্রোগ্রামার/সিস্টেম ইঞ্জিনিয়ার দিজেন্দ্র চন্দ্র দাশ। কর্মশালাটি সঞ্চালনা করেন আইকিউএসির উপ-রেজিস্ট্রার মো. নুরুল ইসলাম সিদ্দিকী।
বাংলাদেশ সময়: ১৭৩০ ঘণ্টা, মার্চ ১৮, ২০২২
এমআরএম/আরবি