ঝালকাঠি: বয়স ৭০ বছর, নাম মোহাম্মদ ফুল মিয়া হলেও চরম কষ্টে অতিবাহিত হচ্ছে তার জীবন। এই বয়সে চলে না মানুষের শরীর, তবুও জীবিকার তাগিদে রিকশার প্যাডেল ঘোরাতে হচ্ছে ঝালকাঠি সদর উপজেলার পোনাবালিয়া গ্রামের এই বৃদ্ধকে।
মোহম্মদ ফুলমিয়া হাওলাদার জানান, তার বয়স ৭০ বছর, ঝালকাঠি শহরে রিকশা চালান। বয়সের কারণে বেশি দূরের যাত্রী নিতে পারেন না। অথচ এই বয়সে পরিবারের সদস্যদের আদর-যত্নে ধর্ম-কর্ম করে সময় পার করার কথা ফুলমিয়ার। কিন্তু অভাবের তাড়নায় সেই বয়সে তিনি তপ্ত রোদ, কনকনে শীত অথবা বৃষ্টির মধ্যেই রিকশা নিয়ে ছুটে চলেন পথে পথে। কারণ রিকশার চাকা থামলেই স্ত্রী-পুত্রসহ নিজেকেও না খেয়ে থাকতে হবে।
তিনি জানান, বর্তমানে তার বসতভিটা ছাড়া আর কোনো সহায়-সম্বল নেই। তিন ছেলে ও এক মেয়ে। চোখের সমস্যা থাকায় বড় ছেলে স্ত্রী-সন্তানদের নিয়ে খুব কষ্টে দিনযাপন করছেন। মেয়ের বিয়ে হওয়ার পর সংসার নিয়ে আলাদা থাকে। মেজ ছেলে এসএসসি পরীক্ষার্থী, মাথায় আঘাত পেয়ে বিছানায় পড়ে আছে। আর ছোট ছেলে লেখাপড়া করে। তাই বর্তমানে পরিবারের একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তি তিনি।
প্রতিদিন সকাল ৭টার পর রিকশা চালানো শুরু করেন। কোনোদিন বিকেল ৪-৫ টা পর্যন্ত চালিয়ে রোজগার হয় ১৫০ থেকে ২শ টাকার মতো। রিকশাটি তেমন ভালো না এবং তিনি বৃদ্ধ হওয়ায় লোকজন তেমন ওঠে না।
ফুলমিয়া অনেকটা আক্ষেপ করে বলেন, আমি বুড়া বলে অনেকে আমার রিকশায় চড়তে চায় না। রিকশা চালানো বন্ধ করে দিলে ছেলে সন্তান নিয়ে না খেয়ে থাকতে হবে। তাই বাধ্য হয়ে রিকশা চালাই।
তিনি বলেন, আমার উপার্জন করার মতো কেউ থাকলে নামাজ-কালাম পড়তাম, আল্লার নাম নিয়ে সময় কাটাতাম। কিন্তু সেটা আমার ভাগ্যে নেই। বড় আশা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে দেখা করার। তার কাছে আমার মনের দুঃখ জানাতাম।
বাংলাদশে সময়: ১৯৩২ ঘণ্টা, মার্চ ১৮, ২০২২
এমএমজেড