হবিগঞ্জ: হবিগঞ্জের নবীগঞ্জ উপজেলার দীঘলবাক ইউনিয়নে কুশিয়ারা নদীর চর কেটে বালু নিয়ে যাচ্ছে একটি প্রভাবশালী চক্র। ইজারা ছাড়াই সেখান থেকে অব্যাহতভাবে বালু উত্তোলন করায় নদীটি ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে ও সরকার রাজস্ব থেকে বঞ্চিত হচ্ছে।
প্রতিদিন প্রকাশ্যে বালু উত্তোলন করে ট্রাক ও ট্রাক্টরে করে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে, কিন্তু এ ঘটনায় প্রশাসনের নিরবতা এলাকায় প্রশ্ন তুলেছে। শিগগির এই বালু উত্তোলন বন্ধ করা প্রয়োজন বলে মনে করছেন পরিবেশবাদীরা।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, দীঘলবাক এলাকায় প্রতিদিন রাত ৮টা থেকে গভীর রাত পর্যন্ত চর কেটে ট্রাক্টর দিয়ে বালু নেওয়া হয়। ইনাতগঞ্জ বাজারের ওপর দিয়ে ট্রাক্টরগুলো যাথায়াত করে। কিন্তু বালু উত্তোলনকারীরা প্রভাবশালী হওয়ায় কেউ প্রতিবাদ করেন না।
সরেজমিনে দেখা গেছে, দীঘলবাক এলাকায় কুশিয়ারা নদীর বিশাল চর জেগেছে। শুকনো মৌসুমে নদীতে পানি না থাকায় বালু উত্তোলনের সুবিধা বেশি। সেই সুযোগ কাজে লাগিয়ে দীঘলবাক ও কসবা এলাকায় নদীর চর কেটে বালু নেওয়া হচ্ছে।
প্রতিদিন ৭০/৮০ জন শ্রমিক বালু কেটে ট্রাক্টরে তুলে নেয়। পরে বালুগুলো বিভিন্ন ইটভাটা ও শিল্প প্রতিষ্ঠানে বিক্রি করা হয়। নদীর চর থেকে প্রতিদিন কমপক্ষে ৫০টি ট্রাক্টর বালু নিয়ে যায়।
স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, দীঘলবাক এলাকাটি বন্যাপ্রবণ। তাই সেখান থেকে মাটি কাটায় বোরো ফসলের জমি তলিয়ে যাওয়ার হুমকিতে পড়বে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এলাকার কয়েকজন বলেন, বালু উত্তোলনের শুরুর দিকে কিছু লোক প্রতিবাদ জানিয়েছিলেন। কিন্তু বালু উত্তোলনকারীরা প্রভাবশালী হওয়ায় পরে ভয়ে আর কেউ প্রতিবাদ করেননি। এ ঘটনায় প্রশাসনও অজ্ঞাত কারণে নিরব ভূমিকা পালন করছে। প্রশাসনের কঠোর হস্তক্ষেপ ছাড়া এই বালু উত্তোলন থামানো যাবে না।
বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন (বাপা) হবিগঞ্জের সাধারণ সম্পাদক তোফাজ্জল সোহেল বলেন, কুশিয়ারা নদীর একটি অংশ নবীগঞ্জের বন্যা কবলিত এলাকা হিসেবে চিহ্নিত। নির্বিচারে বালু উত্তোলনের ফলে এলাকাটি আরও ঝুঁকিতে পড়ছে। শিগগির এ বিষয়ে প্রশাসনের ব্যবস্থা নেওয়া প্রয়োজন।
যোগাযোগ করা হলে নবীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) শেখ মহি উদ্দিন বলেন, বালু উত্তোলনের খবর পেয়ে তাৎক্ষণিকভাবে কাজ বন্ধ করা হয়েছিল। এরপরও যারা বালু উত্তোলন করছে তাদের আইনের আওতায় আনা হবে।
বাংলাদেশ সময়: ১১৪২ ঘণ্টা, এপ্রিল ১৬, ২০২২
আরএ