ঢাকা, বুধবার, ১ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১, ১৫ মে ২০২৪, ০৬ জিলকদ ১৪৪৫

জাতীয়

তাদের মূল টার্গেট পথচারীদের মোবাইল ফোন

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৪৫৫ ঘণ্টা, এপ্রিল ২৬, ২০২২
তাদের মূল টার্গেট পথচারীদের মোবাইল ফোন

ঢাকা: রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে ছিনতাই চক্রের ৩১ জনকে গ্রেফতার করেছে র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র‍্যাব)। পথচারীদের টার্গেট করে তাদের মোবাইল ফোন চুরি ও ছিনতাই করতো চক্রের সদস্যরা।

এরপর সেই মোবাইল ফোনের আইএমইআই (IMEI) নম্বর দ্রুত পরিবর্তন করে বিভিন্ন সিন্ডিকেটের মাধ্যমে রাজধানীর বিভিন্ন মার্কেটের ভাসমান দোকানে  সেগুলো বিক্রি করতো তারা।

শুধু তাই নয়, আসন্ন ঈদকে কেন্দ্র করে সম্প্রতি চক্রের তৎপরতা অনেক বেড়ে যায় বলে জানিয়েছেন র‍্যাব-৩।

সম্প্রতি সরকারের জাতীয় নিরাপত্তা গোয়েন্দা সংস্থার (এনএসআই) দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে র‍্যাব-৩ এর ৭ টি দল একযোগে সোমবার (২৫ এপ্রিল) রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে ছিনতাই চক্রের ৩১ জনকে গ্রেফতার করে। এ সময় তাদের কাছ থেকে ৩০টি ট্যাব, ৭১৭টি টাচ মোবাইল,৭৯৩টি বাটন মোবাইল, ২৮টি নতুন ল্যাপটপ ও নগদ ৫৫ হাজার ৬৪৭ টাকা জব্দ করা হয়েছে।

মঙ্গলবার (২৬ এপ্রিল) দুপুরে রাজধানীর কারওয়ান বাজারে র‌্যাব মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানিয়েছেন র‌্যাব-৩ এর অধিনায়ক (সিও) লে. কর্নেল আরিফ মহিউদ্দিন আহমেদ।

তিনি বলেন, রাজধানীর লালবাগ, সিদ্ধিরগঞ্জ, পল্টন, গুলিস্তান, বায়তুল মোকাররম, মতিঝিল, খিলগাঁও, হাতিরঝিল, ওয়ারিসহ বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে চক্রের ৩১ জনকে আটক করে র‍্যাব-৩ এর ৭টি দল।


র‌্যাব-৩ এর সিও বলেন, গ্রেফতার আসামিদের মধ্যে মো. রাকিব গুলিস্তান এলাকার চোরাকারবারী চক্রের মূলহোতা, মো. বিল্লাল হোসেন পল্টন এলাকার চোরাকারবারী চক্রের মূলহোতা, মো.পারভেজ রমনা এলাকার চোরাকারবারী চক্রের মূলহোতা, মো. নাছির উদ্দিন ওরফে পিন্টু শাহবাগ এলাকার চোরাকারবারী চক্রের মূলহোতা ও মো. ইউসুফ বেপারী মতিঝিল এলাকার চোরাকারবারী চক্রের মূলহোতা।

আরিফ মহিউদ্দিন আহমেদ বলেন, আমরা গোপন সূত্রে খবর পায় আসন্ন ঈদকে কেন্দ্র করে মোবাইল সিন্ডিকেট চক্র ঢাকা শহরের বিভিন্ন এলাকায় অবৈধ মোবাইল কেনা-বেচার বাণিজ্য নিয়ে তৎপর রয়েছে। এসব মোবাইল ফোন বিভিন্ন মার্কেটের সামনে ভাসমান দোকানে গোপনে বিক্রি হচ্ছে। চক্রটি নানা সিন্ডিকেট হোতার যোগসাজশে ছিনতাই করা মোবাইল এসব মুঠোফোন কেনা বেচায় জড়িত।

এছাড়া আসন্ন ঈদকে কেন্দ্র করে চক্রগুলোর তৎপরতা বেড়েছে এমন তথ্য বিভিন্ন গণমাধ্যমেও প্রকাশিত হচ্ছিল। পরে র‍্যাব-৩ এর গোয়েন্দা নজরদারিতে এ অভিযান পরিচালনা করা হয়। অবিযানে র‍্যাবকে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য দিয়ে সহযোগিতা করে জাতীয় নিরাপত্তা গোয়েন্দা সংস্থা (এনএসআই)।

তিনি বলেন, গ্রেফতারকৃতরা জিজ্ঞাসাবাদে জানায়, মূলত ছিনতাই ও চোরাই মোবাইল ফোন অল্প দামে কিনে আইএমইআই (IMEI) নম্বর পরিবর্তন করে সুযোগ বুঝে বেশি দামে বিক্রি করতেন। এছাড়া তারা সবাই মোবাইল ছিনতাই ও চুরির সঙ্গে জড়িত।

তিনি আরও বলেন, র‍্যাব-৩ আওতাধীন এলাকায় ডিএমপির নয়টি এলাকায় (রামপুরা, শাজাহানপুর, মুগদা, মতিঝিল, পল্টন, খিলগাঁও, সবুজবাগ, শাহবাগ ও রমনা) অন্তত ২০টির বেশি মোবাইল ছিনতাইকারী চক্র সক্রিয় রয়েছে। চক্রগুলো মোবাইল ছিনতাই করে আইএমইআই নম্বর পরিবর্তন করে বিভিন্ন সিন্ডিকেটের যোগসাজশে বিভিন্ন মার্কেটের সামনে গোপনে বিক্রি করে আসছিল।

লে. কর্নেল আরিফ মহিউদ্দিন আহমেদ বলেন, ছিনতাইকারীদের প্রধান টার্গেট ছিল পথচারীদের মোবাইল ফোন। এসব মোবাইল স্বল্প দামে চোরাই মোবাইল ব্যবসায়ীদের কাছে বিক্রি করা হয়। এছাড়াও এসব মোবাইলের আইএমইআই নম্বর পরিবর্তন করে স্বল্প আয়ের গ্রাহকদের কাছে বিক্রি করা হতো। আইএমইআই নম্বর পরিবর্তন করায় এসব মোবাইল ফোন পরবর্তীতে উদ্ধার করা সম্ভব হয় না।

গ্রেফতার আসামিদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে বলেও জানান র‌্যাবের এই কর্মকর্তা।

বাংলাদেশ সময়: ১৪৪৫ ঘণ্টা, এপ্রিল ২৬, ২০২২
এসজেএ/এমএমজেড

 

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।