ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১৯ বৈশাখ ১৪৩১, ০২ মে ২০২৪, ২২ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

২-৩ মিনিটে গাড়ির পার্টস চুরি করে চোরচক্র

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৫৪২ ঘণ্টা, এপ্রিল ২৭, ২০২২
২-৩ মিনিটে গাড়ির পার্টস চুরি করে চোরচক্র

ঢাকা: রাজধানীতে টার্গেট করে ও আগে অর্ডার নিয়ে দামি গাড়ির পার্টস চুরি করত একটি চক্র। যেই পার্টসের চাহিদা (ডিমান্ড) আছে কিন্তু মার্কেটে নেই, সেই গাড়ি লক্ষ্য করে পার্টস চুরি করতেন তারা।

 

দিনের বেলায় যেখানে লোকজন কম সেই জায়গা থেকে আর রাতের বেলায় যেখানে একটু অন্ধকার সেসব জায়গা থেকে মাত্র দুই থেকে তিন মিনিটে গাড়ির দামি পার্টস খুলে চুরি করে নিয়ে যায় চোরচক্র। এই চক্রের সঙ্গে রাজধানীতে গাড়ির পার্টসের দোকানের সঙ্গে যোগসাজশ ছিল। এসব অভিযোগে গাড়ির পার্টস চোরচক্রের মূলহোতাসহ সাতজনকে গ্রেফতার করেছে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশের লালবাগ বিভাগ।

মঙ্গলবার (২৬ এপ্রিল) রাতে রাজধানীর পল্টন ও ভাটারা থানা এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেফতার করা হয়।  

গ্রেফতাররা হলেন- মো. এনামুল মোল্লা (৩৫), মো. এনামুল হক ওরফে এনাম (৪৭), মো. বকুল চৌধুরী (২৪), শরিফ আহম্মেদ ওরফে কালু (৪০), বিল্লাল হোসেন (২৮), মো. ইকবাল হোসেন ওরফে পলাশ (৩৪) ও মো. ইকবাল খান (৩২)।

এ সময় তাদের কাছ থেকে বিভিন্ন মডেলের প্রাইভেটকার, মাইক্রোবাস ও জিপ গাড়ির সাইড লুকিং মিরর-১২৪ পিস, সাইড মিররের কভার-১৯ পিস, লুকিং গ্লাসের বিট-১০৭ পিস, হেরিয়ার জিপ গাড়ির লোগো ২ পিস, কমপ্লিট মিরর-১২ পিস, এক্সিও প্রাইভেটকারের দরজার বিট-৩০ পিস, কমপ্লিট সাইড মিরর ১৮ পিস, বাম্পার ক্যাপ-৬ জোড়া, পেছনের ডালার বিট-২৬ পিস চোরাই যন্ত্রাংশ জব্দ করা হয়।

বুধবার (২৭ এপ্রিল) দুপুরে ডিএমপির মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা (দক্ষিণ) পুলিশের যুগ্ম-কমিশনার মাহবুব আলম।

তিনি বলেন, রাজধানীতে বিভিন্ন মডেলের গাড়ির পার্টস চুরি করে বিক্রি করত একটি চক্র। চক্রটি দীর্ঘদিন ধরে প্রাইভেটকার, মাইক্রোবাস ও জিপ গাড়ির যন্ত্রাংশ চুরি করে কেনা-বেচা করত। এ চক্রের মূলহোতা মো. এনামুল মোল্লা নিজে চুরি না করলেও তার আন্ডারে বেশ কয়েকজন চোর চুরি করতেন। চুরির পর এসব যন্ত্রাংশ রাজধানীর পল্টন স্কাউট মার্কেট, মহাখালী জেবা টাওয়ার, বারিধারাসহ একাধিক মার্কেটে পাওয়া যেত। চক্রের সাত সদস্যকে গ্রেফতার করেছে গোয়েন্দা লালবাগ বিভাগের সংঘবদ্ধ অপরাধ ও গাড়ি চুরি প্রতিরোধ টিম।

জিজ্ঞাসাবাদে আসামিরা জানায়, তারা দীর্ঘদিন ধরে চোরদের কাছ থেকে থেকে গাড়ির চোরাই যন্ত্রাংশ সংগ্রহ করে কার প্লাস মার্কেটের কালু, বিল্লাল, স্কাউট মার্কেটের চুন্নু, পলাশ, বারিধারার ইকবাল, মহাখালী জেবা মার্কেটের নাহিদ, পরান, মামুন ও ধোলাই খালের সানালদের কাছে বিক্রি করতেন। গ্রেফতার আসামি ও পলাতক আসামিরা পরস্পরের যোগসাজশে দীর্ঘদিন ধরে বিভিন্ন গাড়ির চোরাই যন্ত্রাংশ কেনা-বেচা করে আসছিলেন। গ্রেফতারদের নামে আগেও চোরাই পার্টস কেনা-বেচার মামলা রয়েছে। তারা গত ৭-৮ বছর ধরে গাড়ির চোরাই যন্ত্রাংশ কেনা-বেচা কাজের সঙ্গে জড়িত। অনেক ক্ষেত্রে তারা যে মালিকের পার্টস চুরি করেন, দোকানদার সেই পার্টস আবারও উচ্চ দামে ওই মালিকের কাছেই বিক্রি করেন। কারণ অনেক গাড়ির নতুন পার্টস মার্কেটে আলাদাভাবে আমদানি করা হয় না অথবা কিনতেও পাওয়া যায় না। চোরাই পার্টস চুরির পর মুহূর্তেই চোরের ওস্তাদের মাধ্যমে তা পার্টসের দোকানে স্বল্পমূল্যে বিক্রি করে দেন।

তিনি আরও বলেন, প্রাথমিকভাবে ৭টি পার্টসের দোকানের সন্ধান পাওয়া যায়। যারা চোরাই পার্টস বিক্রি করে-পল্টন স্কাউট মার্কেট-২টি দোকান, মহাখালী জেবা টাওয়ার-৩টি দোকান, ধোলাইখাল-১টি দোকান ও বারিধারা জে-বক্ল-১টি দোকানের সন্ধান পাওয়া যায়।

যুগ্ম-কমিশনার মাহবুব আলম বলেন, চোর দিনের বেলায় যেখানে লোকজন কম সেই সব জায়গা থেকে আর রাতের বেলায় যেখানে একটু অন্ধকার সেই সব জায়গা থেকে দুই থেকে তিন মিনিটেই গাড়ির পার্টস খুলে চুরি করে নিয়ে যায়।

বাংলাদেশ সময়: ১৫৩৫ ঘণ্টা, এপ্রিল ২৭, ২০২২
এমএমআই/এসআইএস
 

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।