ঢাকা, শনিবার, ৪ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১, ১৮ মে ২০২৪, ০৯ জিলকদ ১৪৪৫

জাতীয়

পল্লী বিদ্যুতের ডিজিএমের বিরুদ্ধে ঘুষ নেওয়ার অভিযোগ

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৩০৩ ঘণ্টা, এপ্রিল ২৮, ২০২২
পল্লী বিদ্যুতের ডিজিএমের বিরুদ্ধে ঘুষ নেওয়ার অভিযোগ এক মাসে দুই বিল

লালমনিরহাট: লালমনিরহাট কুড়িগ্রাম পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির আদিতমারী জোনের ডিপুটি জেনারেল ম্যানেজার (ডিজিএম) প্রকৌশলী মোস্তফা কামালের বিরুদ্ধে ঘুষ নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে।  

বুধবার (২৭ এপ্রিল) বিকেলে আদিতমারী থানায় লিখিতভাবে এ অভিযোগ করেন একরামুল হক নামে এক গ্রাহক।

অভিযোগকারী একরামুল হক আদিতমারী উপজেলার সারপুকুর ইউনিয়নের পাঠানটারী গ্রামের মৃত মজিবর রহমানের ছেলে। পেশায় তিনি হোটেল ব্যবসায়ী।

অভিযোগে জানা গেছে,  হোটেল ব্যবসায়ী একরামুল হক তার দোকানে পল্লী বিদ্যুৎ সংযোগ নিয়ে হোটেল ব্যবসা করছেন। যার মিটার নং ২২৪৭৪০৮৯। এ মিটারের সব বিল পরিশোধ রয়েছে। কিন্তু তার বাবা মৃত মজিবর রহমানের নামে পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির ১৬২৩০২ নং মিটারে সেচ পাম্প রয়েছে। যা একরামুলের বড় ভাই আশরাফুল পরিচালনা করছেন। এ মিটারে ১০ হাজার ৯৯৮ টাকা বকেয়া ছিল। মৃত ব্যাক্তির নামের এ বকেয়া বিলের ঝামেলা মেটাতে একরামুলকে ডেকে নেন আদিতমারী জোনাল অফিসের ডিজিএম প্রকৌশলী মোস্তফা কামাল।

একটি দরখাস্ত দিলে মৃত ব্যক্তির নামের বকেয়া বিলটি মওকুফ করা হবে এমন প্রতিশ্রুতি দিয়ে একরামুলের কাছে আট হাজার টাকা দাবি করেন ডিজিএম মোস্তফা কামাল। ঝামেলা এড়াতে ডিজিএমের প্রস্তাবে রাজি হয়ে গত সোমবার (২৫ এপ্রিল) দুপুরে চাহিদামত ডিজিএমকে আট হাজার টাকা দেন ব্যবসায়ী একরামুল হক।

ওই দিন সকালে ব্যবসায়ী একরামুল হককে তার ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের মিটার নং ২২৪৭০৮৯ নম্বরের এপ্রিল মাসের চার হাজার ২৫৪ টাকার বিলের কাগজ পাঠানো হয়। একই দিন বিকেলে একই মিটারে একই মাসের আরও একটি বিল পাঠান ডিজিএম মোস্তফা কামাল। যেখানে তার মৃত বাবার সেচ পাম্পের বকেয়া বিল ১০ হাজার ৯৯৮ টাকা সংযুক্ত করে মোট ১৫ হাজার ২৫২ টাকা উল্লেখ করা হয়।

একই মিটারে একই মাসে দু’টি পৃথক বিলের কাগজ হাতে পেয়ে বিস্মিত হয়ে ডিজিএমের কার্যালয়ে ছুটে যান একরামুল হক। দু’টি বিলের বিষয়ে ব্যাখ্যা চাইলে বিতর্ক সৃষ্টি হয়। মৃত ব্যক্তির নামিয় মিটারের বকেয়া বিলের ঝামেলা মেটানোর নামে ঘুষের আট হাজার টাকা ফেরত চান একরামুল। এসময় তাকে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করে গলাধাক্কা দিয়ে অফিস থেকে বের করে দেন ডিজিএম।

এ ঘটনায় বিচার চেয়ে গ্রাহক একরামুল হক বাদী হয়ে পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি আদিতমারী জোনের ডিজিএম মোস্তফা কামালের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। এ খবর পেয়ে ঘটনাকে ধামাচাপা দিতে মরিয়া হয়ে উঠেছেন ডিজিএম। এতে ব্যর্থ হয়ে ডিজিএম মোস্তফা কামাল বাদী হয়ে আদিতমারী থানায় উল্টো একরামুল হক ও অজ্ঞাতনামা চার/পাঁচজনের নামে সরকারি কাজে বাধা দানের অভিযোগ করেন।

অভিযোগকারী একরামুল হক বলেন, আমি এ ঘটনার বিচার চাই।

এদিকে গ্রাহক ও ডিজিএমের পাল্টা-পাল্টি অভিযোগ নিয়ে আদিতমারীতে তোলপাড় সৃষ্টি হয়েছে। অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে মাঠে নেমে পড়েছে একটি গোয়েন্দা সংস্থা।  

নাম প্রকাশ না করার শর্তে এ সংস্থার এক কর্মকর্তা জানান, জিএম মোস্তফা কামাল যোগদানের পর থেকে এ জোনাল অফিসটি দুর্নীতির আখড়ায় পরিণত হয়েছে। নানান অজুহাতে গ্রাহক হয়রানি ও ঘুষ লেনদেনের অভিযোগ উঠছে ডিজিএমের বিরুদ্ধে। যা তারা জোরালোভাবে তদন্ত করছেন।

পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি আদিতমারী জোনাল অফিসের ডিপুটি ম্যানেজার (ডিজিএম) মোস্তফা কামালকে একাধিকবার ফোন করা হলেও তিনি রিসিভ করেননি।

আদিতমারী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা(ওসি) মোক্তারুল ইসলাম বাংলানিউজকে বলেন, বিদ্যুৎ অফিসের বিষয়টি নিয়ে পাল্টা-পাল্টি অভিযোগ পেয়েছি। দু'টাই গুরুত্ব সহকারে তদন্ত করা হচ্ছে। তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

বাংলাদেশ সময়: ১৩০১ ঘণ্টা, এপ্রিল ২৮, ২০২২
এসআই

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।