কুড়িগ্রাম: বৃষ্টিপাত ও উজানের পানিতে কুড়িগ্রামের বিভিন্ন নদ-নদী অববাহিকার চরাঞ্চল ও নিচু এলাকা প্লাবিত হয়েছে। এতে বোরো ধানসহ ৪১২ হেক্টর ফসলি জমি পানির নিচে তলিয়ে গিয়ে ব্যাপক ক্ষতির আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।
সোমবার (২৩ মে) পর্যন্ত মে মাসজুড়ে কুড়িগ্রামের রাজারহাট আবহাওয়া কৃষি পর্যবেক্ষণাগারে এ অঞ্চলের সর্বোচ্চ বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে ৫১৮ মিলিমিটার।
ধরলা-ব্রহ্মপুত্র অববাহিকাসহ অনেক নিচ এলাকার ফসলি জমি ১৭/১৮ দিন ধরে পানির নিচে থাকায় ধানক্ষেতগুলোর অন্তত ষাট শতাংশই ক্ষতির মুখে পড়ায় চরম সংকটময় অবস্থায় পড়েছে চাষিরা।
কুড়িগ্রাম কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের তথ্য মতে, কুড়িগ্রামে এবার এক লাখ ১৬ হাজার ১২০ হেক্টর জমিতে বোরো চাষ হয়েছে, যা লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে বেশি। বৃষ্টিপাত ও আকস্মিক ঢলে জেলার নিম্নাঞ্চলের প্রায় ২৬৫ হেক্টর বোরো ক্ষেত পানির নিচে তলিয়ে গেছে। ইতোমধ্যে ৮৩ শতাংশ ধান কেটেছে কৃষকরা। এছাড়া পাট ৮৫ হেক্টর, তিল ১০ হেক্টর, শাক-সবজি ১২ হেক্টর, চিনা ২০ হেক্টর, কাউন ৫ হেক্টর ও অন্যান্য ৫ হেক্টর জমি পানির নিচে তলিয়ে গেছে। মোট ৪১২ হেক্টর বিভিন্ন ফসলি জমি পানির নিচে তলিয়ে গেছে।
কুড়িগ্রামের রাজারহাট আবহাওয়া কৃষি পর্যবেক্ষণ কেন্দ্রের সহকারী পরিচালক মো. আব্দুর সবুর বাংলানিউজকে জানান, জলবায়ু পরিবর্তন ও পূবালী বায়ু চাপের কারণে গত কয়েক বছরের তুলনায় এপ্রিল ও মে মাসে সর্বাধিক ৯৯০ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। যা জুন মাস পর্যন্ত স্থায়ী থাকবে। চলতি বছরের এপ্রিল মাসে মোট বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে ৪৭২ মিলিমিটার। এছাড়া মে মাসে সোমবার (২৩ মে) পর্যন্ত বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে ৫১৮ মিলিমিটার।
কুড়িগ্রাম কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক কৃষিবিদ আব্দুর রশিদ বাংলানিউজকে জানান, এ বছর জেলায় এক লাখ ১৬ হাজার ১২০ হেক্টর জমিতে কৃষকরা বোরো ধান চাষ করেছেন। এখন পর্যন্ত ৮৩ শতাংশ বোরো ধান কাটা হয়েছে। গেল বছরের তুলনায় এ বছর বোরো ধানের ফলন ভালো হয়েছে। নিম্নাঞ্চলের প্রায় ২৬৫ হেক্টর বোরো ধানক্ষেত পানির নিচে তলিয়ে গেছে।
তিনি বলেন, প্রাথমিকভাবে ক্ষয়ক্ষতির তথ্য হাতে পেয়েছি। যার ষাট শতাংশ পুরোটাই নষ্ট হয়ে যেতে পারে। পরে আমরা টাকার অঙ্কে ক্ষতির পরিমাণ বের করতে পারব।
বাংলাদেশ সময়: ২০৪৭ ঘণ্টা, মে ২৩, ২০২২
এফইএস/আরবি