গাইবান্ধা: আসামির স্বজনের সঙ্গে ঘুষ লেনদেনের ফোনালাপ ফাঁসের ঘটনায় গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জ থানার ওসি তৌহিদুজ্জামানকে বরিশাল বিভাগে বদলি করা হয়েছে।
মঙ্গলবার (৩১ মে) বিকেলে গাইবান্ধার পুলিশ সুপার মুহাম্মদ তৌহিদুল ইসলাম বাংলানিউজকে বদলির বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
তিনি বলেন, বাংলাদেশ পুলিশ বরিশাল রেঞ্জে চলতি সপ্তাহে তাকে বদলি করা হয়। তদন্তে যা পাওয়া গেছে, সেগুলো ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে পাঠানো হয়েছে। কর্তৃপক্ষ বিষয়টি দেখবে।
তবে ঘুষ লেনদেনের ফোনালাপের অডিও ফাঁসের ঘটনার সত্যতা পাওয়া গেছে কিনা, সে বিষয়ে পুলিশ সুপার কোনো মন্তব্য করেননি।
এর আগে গত ১৫ মার্চ গাইবান্ধায় ওসির ঘুষ নেওয়ার অডিও ফাঁসের বিষয়ে বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়।
ওইদিন রাতে সুন্দরগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ও তৎকালীন গাইবান্ধা ডিবি পুলিশের ওসি তৌহিদুজ্জামানকে প্রত্যাহার (ক্লোজ) করে গাইবান্ধা পুলিশ লাইনসে সংযুক্ত করা হয়।
পরদিন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (এ-সার্কেল) মো. আবদুল আউয়ালকে আহ্বায়ক করে এক সদস্যের কমিটি গঠিত হয়। পরে তদন্ত প্রতিবেদন কর্তৃপক্ষের কাছে পাঠানো হয়।
মামলার বিবরণে জানা যায়, প্রায় দুই বছর আগে মাসুদ রানার কাছ থেকে পাঁচ লাখ টাকা ঋণ নেন শহরের স্টেশন রোডের জুতা ব্যবসায়ী হাসান আলী। এ টাকা সুদ-আসলে ১৯ লাখে দাঁড়ায়। সুদের টাকা দিতে না পারায় গত বছরের ৬ মার্চ লালমনিরহাট থেকে হাসানকে মোটরসাইকেলে করে তুলে এনে নিজ বাসায় এক মাসের বেশি আটকে রাখেন মাসুদ রানা। এরপর পুলিশ তার বাসা থেকে হাসানের মরদেহ উদ্ধার করে। গেল বছরের ১০ এপ্রিল গাইবান্ধা জেলা আওয়ামী লীগের বহিষ্কৃত উপ-দপ্তর সম্পাদক মাসুদ রানার (৪২) পৌর শহরের নারায়ণপুর এলাকার বাসা থেকে জুতা ব্যবসায়ী হাসান আলীর (৪৫) মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ।
এ ব্যাপারে নিহতের স্ত্রী বিথী বেগম বাদী হয়ে সদর থানায় মাসুদ রানা, রুমেল হক ও খলিলুর রহমানকে আসামি করে হত্যা মামলা করেন।
মামলাটি তদন্তের দায়িত্ব পান ওসি মো. তৌহিদুজ্জামান।
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা তৌহিদুজ্জামানের সঙ্গে মামলার আসামির দুই স্বজনের ঘুষ লেনদেনের ফোনালাপের অডিও ফাঁস হয়। অভিযোগপত্র থেকে দুই আসামির নাম বাদ দেওয়া ও আইনের ধারা কমিয়ে দিতে টাকা লেনদেনের কথাবার্তা হয়। কিন্তু এক আসামির নাম বাদ দিয়ে অভিযোগপত্র দিলে ঘুষের টাকা ফেরত দিতে ফোনালাপ হয়।
বাংলাদেশ সময়: ১৯৫৫ ঘণ্টা, মে ৩১, ২০২২
এসআই
