ঢাকা, সোমবার, ১১ আষাঢ় ১৪৩১, ২৪ জুন ২০২৪, ১৬ জিলহজ ১৪৪৫

জাতীয়

সেই হুমায়ূনের পাশে জেলা প্রশাসক

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট  | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৮০০ ঘণ্টা, জুন ১, ২০২২
সেই হুমায়ূনের পাশে জেলা প্রশাসক

বরিশাল: মৃত্যুর আগে যেন নিজের চিকিৎসা করাতে পারেন শরীরে পচন ধরা হুমায়ূন কবিরের এমন আকুতিতে পাশে দাঁড়িয়েছেন বরিশালের জেলা প্রশাসক জসীম উদ্দীন হায়দার।

বুধবার (১ জুন) জেলা প্রশাসকের পক্ষ থেকে হুমায়ূন কবিরের স্ত্রী শাহেদা বেগমের হাতে চিকিৎসার জন্য ৫০ হাজার টাকা তুলে দেওয়া হয়।

দুপুরে বরিশাল নগরের বান্দরোডস্থ জেলা শিল্পকলা একাডেমি অডিটোরিয়ামে বসে জেলা প্রশাসনের পক্ষে জাতীয় ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক এ এইচ এম সফিকুজ্জামানের হাত ধরে এ সহায়তা তুলে দেওয়া হয়।

এ সময় সেখানে জেলা প্রশাসক জসীম উদ্দীন হায়দার, জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের প্রবেশন অফিসার সাজ্জাদ পারভেজসহ কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।  

তারা এ সময় হুমায়ূন কবিরের চিকিৎসাসহ সার্বিক বিষয়ে খোঁজ-খবর নেন।
 
জানা গেছে, হুমায়ূন কবির বরিশাল জেলার গৌরনদী পৌরসভার ২ নম্বর ওয়ার্ড বড় কসবা পূর্বপাড়ের সরদার বাড়ির নাজের সরদারের বড় ছেলে। থাকেন ছোট ভাই জলিল সরদারের ঘরের বারান্দায়। স্ত্রী শাহেদা বেগমসহ ১৪ ও ১৮ বছর বয়সী দুই ছেলে সন্তান রয়েছে হুমায়ূনের।

১৫ বছর আগে চলাচলের সক্ষমতা হারিয়েছেন হুমায়ূন কবির। খেয়ে না খেয়ে দিন পার করেছেন তিনি। দুই বছর হলো শরীরে পচন ধরেছে তার। দুর্গন্ধে কেউ কাছে আসতে চায় না। আত্মীয়-স্বজনও তেমনভাবে খোঁজ নেয় না। মারা যাওয়ার আগে যেন চিকিৎসা করাতে পারেন সেই আকুতি জানিয়েছিলেন হুমায়ূন। এ খবর গণমাধ্যমে প্রকাশিত হলে জেলা প্রশাসক বরিশাল জসীম উদ্দীন হায়দারের দৃষ্টিগোচর হয়।  

উল্লেখ্য, হুমায়ূন কবির তার বিয়ের একমাস পরে বাড়ির সামনে একটি খেজুর কাছের রস নামাতে উঠেছিলেন। সেখান থেকে পড়ে গিয়ে মেরুদণ্ড ভেঙে যায়। পরিবারের সামর্থ্য না থাকায় উন্নত চিকিৎসা হয়নি। ফলে দিন দিন চলাচলে অক্ষম হয়ে পড়েন। অক্ষম অবস্থায় ছোট একটি দোকান দিয়ে সংসার চালাতেন।  

স্ত্রী শাহেদা বেগম কোলে-পিঠে করে সেবা-শুশ্রুষা করেছেন। গত বছরের (২০২১) শেষ দিকে কোমরের নিচের অংশে ফোঁড়া ওঠে। সেই ফোঁড়া থেকে বিভিন্ন দিকে নালা হয়ে পচন ধরতে থাকে। এরপর হুমায়ূনের দোকান বন্ধ হয়ে যায়। পরে মানুষের সাহায্য-সহযোগিতা নিয়ে বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি হন। তখন চিকিৎসক জানান বসে থাকতে থাকতে পশ্চাৎদেশে পচন ধরেছে। তারা ঢাকার ক্যানসার হাসপাতালে রেফার করে। কিন্তু নিজের সংসার চালানোর টাকা না থাকা হুমায়ূনের চিকিৎসা চালানো সম্ভব হয়নি।  

বাংলাদেশ সময়: ১৭৫৯ ঘণ্টা, জুন ০১, ২০২২
এমএস/এএটি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।