ঢাকা, বুধবার, ১২ আষাঢ় ১৪৩১, ২৬ জুন ২০২৪, ১৮ জিলহজ ১৪৪৫

জাতীয়

বাংলাদেশ-জাইকার সম্পর্কের ৫০ বছর পূর্তি উদযাপন

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২১৩৬ ঘণ্টা, জুন ১৬, ২০২২
বাংলাদেশ-জাইকার সম্পর্কের ৫০ বছর পূর্তি উদযাপন বাংলাদেশ-জাইকার ৫০ বছর উদযাপন অনুষ্ঠিত

ঢাকা: বাংলাদেশ এবং জাপান আন্তর্জাতিক সহযোগিতা সংস্থার (জাইকা) মধ্যকার সম্পর্কের ৫০ বছর পূর্তি উদযাপন করা হয়েছে।  

বৃহস্পতিবার (১৬ জুন) দুপুরে রাজধানীর হোটেল সোনারগাঁওয়ে এই উপলক্ষ্যে একটি জাকজমকপূর্ণ আয়োজন অনুষ্ঠিত হয়।

এতে দুই দেশের বিশিষ্টজনেরা উপস্থিত ছিলেন।

অনুষ্ঠানে ভিডিও বার্তার মাধ্যমে বাংলাদেশ এবং জাইকার মধ্যে সহযোগিতার ৫০ বছর উদযাপন উপলক্ষে শুভেচ্ছা জানান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এসময় তিনি ২০৪১ সালের মধ্যে বাংলাদেশের একটি উন্নত রাষ্ট্রে পরিণত হওয়ার লক্ষ্য পূরণে জাপানের সহায়তা প্রত্যাশা করেন।

ভিডিও বার্তায় তিনি বলেন, মুক্তিযুদ্ধের সময় জাপান ও এর জনগণের অমূল্য সমর্থন ও অবদানের জন্য বাংলাদেশ গভীরভাবে কৃতজ্ঞ। আন্তরিকতা, বন্ধুত্ব এবং পারস্পরিক শ্রদ্ধা দীর্ঘস্থায়ী দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের মূল মূল্যবোধ। বাংলাদেশ ও জাপান সেই মূল্যবোধ ও অভিন্ন স্বার্থের ভিত্তিতে সম্পর্ক বজায় রেখে এগিয়ে চলেছে। দু’দেশের মধ্যকার বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ককে কৌশলগত অংশীদারিত্বের নতুন উচ্চতায় নিয়ে যাওয়ার লক্ষ্যে ‘জাপান-বাংলাদেশ-সমন্বিত অংশীদারিত্ব’ সূচনা করা হয়েছে। বাংলাদেশ জাপানকে তার সবচেয়ে  বিশ্বস্ত বন্ধু এবং একক বৃহত্তম উন্নয়ন সহযোগী হিসেবে স্বীকৃতি দেয়।

এসময় বাংলাদেশ-জাইকার সম্পর্কের ৫০ বছর পূর্তি উপলক্ষে শেখ হাসিনা জাপানের সম্রাট ও সম্রাজ্ঞীকে তার আন্তরিক শুভেচ্ছা জানান। সেই সঙ্গে প্রধানমন্ত্রী জাপানের বন্ধুত্বপূর্ণ জনগণের প্রতি গভীর শুভেচ্ছা ও আন্তরিক অভিনন্দন জানান।

অনুষ্ঠানে উপস্থিত থেকে বক্তব্য প্রদান করেন প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সচিব তোফাজ্জল হোসেন মিয়া, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সচিব মাসুদ বিন মোমেন এবং অর্থ মন্ত্রণালয়ের অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের সচিব ফাতিমা ইয়াসমিন।

এসময় তারা তাদের বক্তব্যে বলেন, স্বাধীনতার পর বাংলাদেশকে খুব দ্রুত যে কয়টি দেশ স্বীকৃতি দেয়, জাপান তার মধ্যে অন্যতম। বঙ্গবন্ধু জাপান ভ্রমণ করেছেন এবং শিক্ষা, কৃষিসহ নানাবিধ বিষয়ে সেখানে আলোচনা হয়েছে। এখনও জাপানের সঙ্গে অনেক প্রজেক্ট চালু আছে। বাংলাদেশের উন্নয়নে বন্ধুদেশ হিসেবে জাপানের ভূমিকা অনেক। জাপান বাংলাদেশ সম্পর্ক খুবই মধুর। আমরা আশা করি এই সম্পর্ক আরও মজবুত এবং দীর্ঘ হবে।

অনুষ্ঠানে জাপান এবং জাইকার পক্ষ থেকে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশে নিযুক্ত জাপানের রাষ্ট্রদূত ইতো নাওকি, জাইকার সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট কোইচেরো নাকাজায়া এবং বাংলাদেশে নিযুক্ত জাইকা অফিসের চিফ রিপ্রেজেন্টেটিভ ইউহো হায়াকাওয়া।

তারা তাদের বক্তব্যে বলেন, বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার পর ১৯৭২ সালের ১০ ফেব্রুয়ারি জাপান বাংলাদেশকে স্বীকৃতি দেয়। ১৯৭১-৭২ অর্থবছরে ১০ দশমিক ৬ মিলিয়ন মার্কিন ডলারের পণ্য অনুদান সহায়তা থেকে শুরু করে বাংলাদেশে জাইকার আর্থিক সহায়তার মোট পরিমাণ এখন ২৮ বিলিয়ন মার্কিন ডলারে দাঁড়িয়েছে। জাইকার সহায়তায় মাতারবাড়ী কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র, মাতারবাড়ী বন্দর উন্নয়ন প্রকল্প, যমুনা নদীর ওপর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব রেলসেতু, ঢাকায় মেট্রোরেল নেটওয়ার্ক এবং হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর সম্প্রসারণ প্রকল্প বাস্তবায়ন করা হচ্ছে। এ ছাড়া যতক্ষণ না বাংলাদেশ ভিশন ২০৪১-এর লক্ষ্যগুলো অর্জন করছে, ততক্ষণ উন্নয়ন সহযোগী হিসেবে জাপান বাংলাদেশের পাশে থাকবে। পরবর্তীতেও এই সম্পর্ক আরও দৃঢ় হবে।

আয়োজনে বাংলাদেশ এবং জাপান আন্তর্জাতিক সহযোগিতা সংস্থার (জাইকা) মধ্যে সহযোগিতার ৫০ বছর উদযাপন উপলক্ষ্যে একটি ভিডিও ডকুমেন্টারি প্রদর্শন করা হয়। এছাড়া সাংস্কৃতিক আয়োজনে ক্যারাটে, দেশাত্মবোধক গান ও জাপান-বাংলাদেশ সম্পর্ক নিয়ে অংশীজনদের মতামত প্রদর্শন করা হয়। পুরো আয়োজনটি সঞ্চালনা করেন বাংলাদেশি অভিনেতা চঞ্চল চৌধুরী এবং বাংলাদেশে বসবাসরত জাপানী শিল্পী মে ওয়াতানাবে।

বাংলাদেশ সময়: ২১৩৪ ঘণ্টা, জুন ১৬, ২০২২ 
এইচএমএস/ইআর

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।