ঢাকা: ঢাকায় বিভিন্ন দেশ যেন মিশন খুলে তাদের কার্যক্রম শুরু করে, সেই চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে সরকার। ঢাকার পক্ষ থেকে বেশ কয়েকটি দেশকে পুনরায় মিশন খোলার জন্য অনুরোধও করা হয়েছে।
রাজধানীতে বিভিন্ন দেশের মোট ৫০টি দূতাবাস ও হাইকমিশন রয়েছে। এছাড়া ভারতের ৩৫টি মিশনে বাংলাদেশে দায়িত্বপ্রাপ্ত অনবাসিক রাষ্ট্রদূত রয়েছেন। তারা ভারত থেকে বাংলাদেশের সঙ্গে কূটনৈতিক কার্যক্রম চালিয়ে যান। আর এর বাইরে বিভিন্ন ঢাকায় বিভিন্ন দেশের অনারারি কনস্যুলার রয়েছেন। তবে বিভিন্ন সময়ে বাংলাদেশ থেকে অনেক দেশই তাদের নিজ নিজ মিশন গুটিয়ে নিয়েছে। পরবর্তীতে কোনো কোনো দেশ নতুন করে বাংলাদেশে পুনরায় মিশনও খুলেছে। ঢাকায় বিভিন্ন দেশ মিশন যেন চালু করে , সে বিষয়ে সরকার নানা দেশের আলোচনা অব্যাহত রেখেছে।
সূত্র জানায়, উজবেকিস্তান, পর্তুগাল, রোমানিয়া, পোল্যান্ড, ফিনল্যান্ড, হাঙ্গেরি, দ.আফ্রিকা, নাইজেরিয়া প্রভৃতি দেশকে ঢাকায় পূর্ণাঙ্গ মিশন খোলার জন্য বাংলাদেশের পক্ষ থেকে অনুরোধ করা হয়েছে। এ বিষয়ে এসব দেশগুলোর পক্ষ থেকে আশ্বাসও মিলেছে।
সম্প্রতি পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম লিসবন সফর করেন। সে সময় তিনি পর্তুগাল সংসদের ভাইস-প্রেসিডেন্ট আদাও হোসে ফনসেকা সিলভারকে বাংলাদেশে দেশটির দূতাবাস খোলার জন্য অনুরোধ করেন। লিসবনের পক্ষ থেকে এ বিষয়ে ইতিবাচক আশ্বাস মিলেছে।
এদিকে ঢাকায় হাঙ্গেরির একটি কনস্যুলার অফিস রয়েছে। তবে এই কনস্যুলার অফিস থেকে পূর্ণাঙ্গভাবে কনস্যুলার সুবিধা দেওয়া হতো না। গত ৮ জুন হাঙ্গেরির পক্ষ থেকে ঢাকার কনস্যুলার অফিস থেকে পূর্ণাঙ্গ কনস্যুলার সুবিধা দেওয়ার ঘোষণা দেওয়া হয়েছে।
ঢাকায় একটি আবাসিক মিশন খোলার জন্য দক্ষিণ আফ্রিকাকে অনুরোধ করেছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন। দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. নালেদি এম প্যান্ডোরের সঙ্গে এক বৈঠকে এ অনুরোধ করেন তিনি। এছাড়াও ঢাকায় আবাসিক মিশন খুলতে নাইজেরিয়াকে বিশেষ অনুরোধ করা হয়েছে। একই সঙ্গে ঢাকায় দূতাবাস খোলার অনুরোধ করা হয়েছে জর্ডানকেও।
এদিকে বাংলাদেশে রোমানিয়ার কোনো মিশন নেই। তবে রোমানিয়া বাংলাদেশ থেকে জনশক্তি নিতে চায়। ঢাকায় দেশটির কোনো মিশন না থাকায় জনশক্তি পাঠাতে সমস্যা হচ্ছে। বলকান যুদ্ধের সময় ঢাকায় মিশন বন্ধ করে তারা। তবে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অনুরোধে রোমানিয়ার কনস্যুলার টিম দিল্লি থেকে ঢাকায় এসে বাংলাদেশি কর্মীদের সাক্ষাৎকার নিয়েছে। ঢাকার পক্ষ থেকে রোমানিয়ার কাছে বিশেষভাবে অনুরোধ করা হয়েছে, দেশটি যেন বাংলাদেশে মিশন খোলে।
ঢাকায় উজবেকিস্তানের বর্তমানে কোনো মিশন নেই। কয়েক বছর ধরে ঢাকায় মিশন খোলার জন্য বাংলাদেশের পক্ষ থেকে অনুরোধ করা হয়েছে। উজবেক রাষ্ট্রপতির কাছেও বিষয়টি তুলে ধরা হয়েছে। তিনি ঢাকায় একটি মিশন খুলতে নিজ দেশের কর্মকর্তাদের নির্দেশনাও দিয়েছেন। উজবেকিস্তান বাংলাদেশে একটি কন্স্যুলেট অফিস খোলার উদ্যোগ নিয়েছে।
এদিকে বিভিন্ন দেশও বাংলাদেশে মিশন খুলতে আগ্রহ প্রকাশ করেছে। এরই মধ্যে কোনো কোনো দেশ মিশন খুলেছেও। যেমন এক সময় আলজেরিয়া ঢাকা থেকে মিশন গুটিয়ে নিলেও দুই বছর আগে পুনরায় মিশন খুলেছে তারা।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন বাংলানিউজকে বলেন, ঢাকায় মিশন খোলার জন্য আমরা বিভিন্ন দেশকে অনুরোধ জানিয়েছি। বেশ কয়েকটি দেশ এ বিষয়ে ইতিবাচক আশ্বাসও দিয়েছে। ঢাকায় বিভিন্ন দেশের মিশন বাড়লে আমাদেরই বেশি সুবিধা হবে। আমরা এ নিয়ে কাজ করছি।
বাংলাদেশ সময়: ১৭৫৭ ঘণ্টা, জুন ১৭, ২০২২
টিআর/এমএমজেড